আজকাল ওয়েবডেস্ক:‌ এশিয়া কাপ এবার আদৌ হবে?‌ কোনও নিশ্চয়তা নেই। প্রসঙ্গত, চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে ভারত এবং শ্রীলঙ্কার মাটিতে এশিয়া কাপ হওয়ার কথা। যদিও পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হানার পর থেকে এশিয়া কাপের ভবিষ্যৎ এখন বিশ বাঁও জলে। কারণ, পাকিস্তান ভারতে এসে খেলুক, এ ব্যাপারে এখনও কোনও সবুজ সঙ্কেত দেয়নি ভারত সরকার। এই পরিস্থিতিতে জানা গিয়েছে, এশিয়া কাপ না হলে বড়সড় আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড।

পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের বার্ষিক বাজেট অনুযায়ী ২০২৪–২৫ অর্থ বছরে তাদের মোট আয়ের লক্ষ্যমাত্রা প্রায় ১৮.৮ বিলিয়ন পাকিস্তানি রুপি। ভারতীয় মুদ্রায় যা ৫৬৮ কোটিরও বেশি। এর মধ্যে শুধু আইসিসি ও এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল থেকে পিসিবি’র অংশ হিসেবে ধরা হয়েছে প্রায় ৮.৮ বিলিয়ন রুপি। ভারতীয় মুদ্রায় যা ২৬৫ কোটি টাকারও বেশি।


তবে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গিয়েছে, আইসিসি থেকে ২৫.৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (প্রায় ৭.৭ বিলিয়ন রুপি) পাওয়ার আশায় রয়েছে তারা। একই সঙ্গে এশিয়া কাপ হলে সেখান থেকে পাকিস্তানের আয় হবে ১.১৬ বিলিয়ন রুপি। ভারতীয় মুদ্রায় যা প্রায় ৩৫ কোটি টাকা। তাছাড়াও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সিরিজ থেকে ৭.৭৭ মিলিয়ন রুপি আয় হওয়ার কথা পিসিবি’র।


তবে এটা ঘটনা, ২৪ জুলাই ঢাকায় মুখোমুখি হওয়ার কথা ছিল এশিয়া কাপে অংশগ্রহণকারী সবক’টি দেশের বোর্ডের। ঢাকায় একটি বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ওই বৈঠক করতে গিয়ে বেশ প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়েছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড।। ভারত–সহ শ্রীলঙ্কা, ওমান, আফগানিস্তানের মতো দেশগুলির বোর্ডও এই বৈঠক প্রতিনিধি পাঠাতে অনিচ্ছা প্রকাশ করেছে। সেই কারণেই প্রশ্ন উঠছে, এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল কি এশিয়া কাপের দিনক্ষণ চূড়ান্ত করতে পারবে? এখনও পর্যন্ত যা পরিস্থিতি, তাতে এশিয়া কাপ নিয়ে জট কবে কাটবে, তা নিয়ে ধোঁয়াশা। আর এই প্রতিযোগিতা শেষমেশ বাতিল হয়ে গেলে বিশাল অঙ্কের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড। অঙ্কটা ৩৫ কোটির মতো।

এদিকে, ২০২৫ সালের এশিয়া কাপ ঘিরে তৈরি হয়েছে প্রবল অনিশ্চয়তা। কারণ, ঢাকায় অনুষ্ঠিত হতে চলা এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের বৈঠক বয়কটের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ড এবং এসিসির আরও কয়েকটি সদস্য দেশ। জানা গিয়েছে, আগামী ২৪ জুলাই বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় অনুষ্ঠিত হতে চলা এই মিটিংয়ে যোগ দেবে না বিসিসিআই। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের এই দাবিকে সমর্থন জানিয়েছে শ্রীলঙ্কা, আফগানিস্তান এবং ওমান ক্রিকেট বোর্ডও। সূত্রের খবর, বিসিসিআই এই সিদ্ধান্তের কথা লিখিতভাবে জানিয়ে দিয়েছে এসিসি এবং পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের চেয়ারম্যান মহসিন নাকভিকে। রাজনৈতিক কারণে বাংলাদেশে মিটিংয়ে অংশগ্রহণে আপত্তি ভারতের। 

অন্যান্য বোর্ডগুলিও বাংলাদেশে বৈঠক আয়োজন নিয়ে উদ্বেগের কথা জানিয়েছে। সূত্রের খবর, বিসিসিআই স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে যে তারা ঢাকায় এই বৈঠকে যাবে না। বিকল্প ভেন্যুর অনুরোধ জানানো হলেও এখনও কোনও সাড়া মেলেনি। এসিসির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, গুরুত্বপূর্ণ সদস্য বোর্ডগুলির অনুপস্থিতিতে নেওয়া কোনও সিদ্ধান্ত অবৈধ বলে বিবেচিত হতে পারে। এর ফলে এশিয়া কাপ আয়োজনে বড়সড় জটিলতা তৈরি হতে পারে। সূত্র অনুযায়ী, ঢাকায় সভা রাখার ব্যাপারে মহসিন নাকভি অনড় মনোভাব দেখাচ্ছেন। এই মনোভাবকে ভারতের ওপরে চাপ সৃষ্টি করার প্রচেষ্টা হিসেবে দেখছে অনেকেই।