আজকাল ওয়েবডেস্ক: রূপকথার দৌড়। একের পর এক আইএসএলের ক্লাবকে হারিয়ে ডুরান্ড কাপের ফাইনালে ডায়মন্ড হারবার। সামনে ইতিহাসের হাতছানি। চার বছর আগে যে ক্লাবের অস্তিত্ব ছিল না। তাঁরাই আজ এশিয়ার সবচেয়ে পুরোনো টুর্নামেন্টের ফাইনালে। শুরুটা হয় মহমেডান স্পোর্টিংকে হারিয়ে। তারপর বিএসএফকে আট গোল। কিন্তু তৃতীয় ম্যাচেই মোহনবাগানের কাছে পাঁচ গোল হজম নড়িয়ে দেয় ভীত। গ্রুপের একনম্বর দল হিসেবে যোগ্যতা অর্জন করা একপ্রকার নিশ্চিত ছিল। কিন্তু সেখান থেকে নক আউটে যাওয়া নিয়ে ওঠে প্রশ্নচিহ্ন। শেষমেষ গ্রুপের গণ্ডি পার করে কোয়ার্টার ফাইনাল। নক আউটে জোড়া রেকর্ড। পরপর দুই আইএসএল ক্লাবের বিরুদ্ধে বাজিমাত। টাটায় জামশেদপুরকে হারানোর পর যুবভারতীতে ইস্টবেঙ্গল বধ। বাংলার ফুটবলের ব্যাটন এখন ডায়মন্ড হারবারের হাতে। পারবেন কি কিবু বাংলার ফুটবলের মান রক্ষা করতে? নাকি আবারও ট্রফি যাবে নথ ইস্টে? কিবু বলেন, 'আমরা বাংলার ফুটবলের প্রতিনিধিত্ব করতে পেরে গর্বিত। যে টুর্নামেন্টে মোহনবাগান, ইস্টবেঙ্গল এবং মহমেডান অংশ নিয়েছে, তার ফাইনালে আমরা। নিজেদের সেরাটা দেব। আশা করছি ভাল রেজাল্ট হবে।'
আগের বছর মোহনবাগানকে নিজেদের ডেরায় হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় নর্থ ইস্ট ইউনাইটেড। প্রায় ৬০ হাজার দর্শককে স্তব্ধ করে ট্রফি হাতে তুলে নেয় জন আব্রাহামের দল। যুবভারতী দেখে বলিউড তারকার সেলিব্রেশন। একবছর পর কি আবার তার পুনরাবৃত্তি হবে? ডুরান্ডে চারটে আইএসএলের দলের বিরুদ্ধে খেলে ফেলেছে ডায়মন্ড হারবার। তারমধ্যে তিনটে জিতেছে, মোহনবাগানের কাছে পাঁচ গোল খেয়েছে। এবার শেষ ল্যাপে আইএসএলর পঞ্চম ক্লাবকে হারিয়ে ইতিহাসের পাতায় নাম লেখানোর জোর প্রস্তুতি সারছেন কিবু। তবে বিপক্ষে রয়েছেন আলাদিন আজারাই। গত আইএসএলের সর্বোচ্চ স্কোরার। আগের বছর ডুরান্ড ফাইনালে তাঁর জোড়া গোলেই যুবভারতীতে নৌকাডুবি হয়। চলতি ডুরান্ডে দারুণ ছন্দে রয়েছেন। নিয়মিত গোল পাচ্ছেন। তাই ডায়মন্ডের কাজটা সহজ হবে না। জুয়ান পেদ্রো বেনোলির দলকে গুরুত্ব দিলেও, দলের স্প্যানিশ কোচ জানিয়ে দিলেন, তাঁদেরও মোটিভেশনের অভাব নেই। কিবু বলেন, 'আমরা চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করছি। এই মুহূর্তে ভারতীয় ফুটবলে সর্বোচ্চ স্কোরার রয়েছে বিপক্ষে। জাবাকোর মতো প্লেয়ার আছে। সব বিদেশিই ভাল। ভারতীয়রাও। আমরা ওদের আটকানোর চেষ্টা করব। আমরা চারটে আইএসএলের দলের মুখোমুখি হয়েছি। এবার আরও একটা দলের হব। জানি ওরা আগের ডুরান্ড কাপ চ্যাম্পিয়ন। তবে আমরাও নিজেদের জানি।'
কলকাতায় ফাইনাল হলেও, আন্ডারডগ ডায়মন্ড হারবার। পিছিয়ে থেকেই নামবে কিবুর দল। তাঁদের ওপর কি বাড়তি চাপ থাকবে? মানতে চাইলেন না স্প্যানিশ কোচ। বরং, চাপকেই হাতিয়ার করতে চান। কিবু বলেন, 'চাপ কোনও সমস্যা নয়। প্রতিযোগিতা আমাদের জন্য মোটিভেশন। ফাইনাল সবসময় স্পেশাল। তিনটে আই লিগের দলের মধ্যে আমরা ফাইনালে উঠেছি। আমরা নিজেদের সুযোগের অপেক্ষায়। প্রত্যেক ম্যাচে কিছু না কিছু সুযোগ আসে। সেগুলো কাজে লাগানোর চেষ্টা করি। সেই কারণেই আমরা আজ এখানে। আমাদের ওপর কোনও চাপ নেই। ফাইনালে উঠে আমরা খুশি। কিন্তু আরও চাই।' ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে সেমিফাইনাল জয়ই মোটিভেশন। ফাইনালেও কিবুর সম্ভল দুই বিদেশি। নেই ক্লেইটন। চোট রয়েছে হোলিচরণ নার্জারির। তবে তাঁকে পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগানহীন ফাইনাল। মাঠে দর্শক হওয়া নিয়ে সমস্যা। বাংলার ফুটবলের স্বার্থে ইস্ট-মোহনের সমর্থকদের মাঠ ভরানোর আহ্বান জানান দুই প্রধানের কর্তা। শোনা যাচ্ছে ১৫ হাজার টিকিট কেটেছে ডায়মন্ড হারবার কর্তৃপক্ষ। তাই মাঠে বেশ কিছু দর্শক হবে। তবে অভিষেক ব্যানার্জি আসবেন কিনা এখনও জানা যায়নি।
