আজকাল ওয়েবডেস্ক: জমকালো অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শুরু হয়ে গেল ১৩৪তম ডুরান্ড কাপ। ঐতিহ্যবাহী টুর্নামেন্টের সূচনা করলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। সাধারণত তিনিই এশিয়ার প্রাচীনতম টুর্নামেন্টের উদ্বোধন করেন। কিন্তু আগের বছর সরকারি কাজে দিল্লিতে থাকায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে হাজির থাকতে পারেননি। গতবছর ডুরান্ডের সূচনা করেন ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। এদিন ফুটবলে শট মেরে টুর্নামেন্টের উদ্বোধন করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। ছিলেন ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, দমকল মন্ত্রী সুজিত বসু, ক্রীড়া দফতরের প্রতিমন্ত্রী মনোজ তিওয়ারি। এছাড়াও ছিলেন সেনাবাহিনীর পদাধিকারীরা।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি বলেন, 'ডুরান্ড কাপ প্রাচীনতম টুর্নামেন্টে। ১৮৮৮ সালে শুরু হয়েছে। আজকে ইস্টবেঙ্গল খেলছে। বাংলায় শুরু হল। এবার বাংলার চারটে দল অংশ নিচ্ছে। আমরা গর্বিত। আগামী বছর ডুরান্ড আরও বড় করে হবে।' আইএসএল নিয়ে প্রশ্ন করা হলে কোনও উত্তর দেননি মুখ্যমন্ত্রী। মমতা ব্যানার্জি বলেন, 'আমাকে এই প্রসঙ্গে এখানে জিজ্ঞেস করবেন না। এই নিয়ে কথা বলার এটা আদর্শ জায়গা নয়।' 

বিকেল ৪.৪০ মিনিটে যুবভারতীতে প্রবেশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। অন্যান্যবারের মতো এবারও বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের মাধ্যমে টুর্নামেন্টে বল গড়াল। মাঠে বসে সংক্ষিপ্ত উদ্বোধনী অনুষ্ঠান দেখেন মমতা ব্যানার্জি। বিকেল পাঁচটা নাগাদ অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। আগের বছরের মতো এবারও ছিল 'ফ্লাইপাস্ট'। অর্থাৎ, এয়ার শো। সেনার তিনটে হেলিকপ্টার যুবভারতীর আকাশের ওপর দিয়ে উড়ে যায়। দুই দলের প্লেয়ারদের লাইন আপের সময় হয় এয়ার শো। ডুরান্ডের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মূল আকর্ষণ এটাই। 

এছাড়াও হল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। মমতা ব্যানার্জির লেখা গানেও নৃত্য পরিবেশন করা হয়। সেনাবাহিনীর বিভিন্ন ডিভিশনের সদস্যরা পারফর্ম করে। গ্রামছাড়া রাঙ্গা মাটির পথ দিয়ে শুরু। শিখ রেজিমেন্টের 'ভাঙরা' থেকে শুরু করে পশ্চিমবঙ্গ রেজিমেন্টের রবীন্দ্রনৃত্য, অসম রেজিমেন্টের ছৌ, মারাঠা লোকনৃত্য সহ নানান ধরনের নৃত্য পরিবেশনা ছিল। এছাড়াও হয় গোর্খা রেজিমেন্টের 'কুকরি নাচ'। ছিল মার্শাল আর্টসের শোও। সেনাবাহিনীর নিজস্ব ব্যান্ড শো। এবার স্থানীয় সংস্কৃতির ওপর বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে। জয় হো, চক দে ইন্ডিয়ার সঙ্গে পা মেলায় বিভিন্ন রেজিমেন্ট। মিনিট ৩০ এর সংক্ষিপ্ত উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। দুই দলের প্লেয়ারদের সঙ্গে পরিচিত হন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। দু'বার ফুটবলে শট মেরে ডুরান্ড কাপের সূচনা করেন। কলকাতায় ডুরান্ড কাপ শুরু হলেও, বাকি চার আয়োজক শহর জামশেদপুর, ইম্ফল, কোকরাঝাড় এবং শিলংয়েও প্রথম ম্যাচের আগে জাঁকজমক উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। 

ডুরান্ড কাপের টিকিট নিয়ে প্রতিবার সমস্যা হয়। পর্যাপ্ত টিকিট না পাওয়ার দাবি করে ক্লাবগুলো। তাই এবার টুর্নামেন্ট শুরু হওয়ার আগেই টিকিট বণ্টনের হিসেব দেন ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। এবার ডুরান্ড কাপের পুরস্কার মূল্য প্রায় তিনগুণ বাড়ানো হয়েছে। ১.২ কোটির জায়গায়, ৩ কোটি প্রাইজ মানি। মোট ২৪টি দল অংশ নেবে। তারমধ্যে রয়েছে ছ'টি আইএসএলের ক্লাব এবং ছ'টি নতুন ক্লাব। কলকাতা থেকে অংশ নিচ্ছে মোহনবাগান, ইস্টবেঙ্গল, মহমেডান এবং ডায়মন্ড হারবার। আই লিগের চারটে ক্লাব খেলবে। নেপাল এবং মালয়েশিয়া থেকে দুটো বিদেশি ক্লাব অংশ নেবে। ছয় গ্রুপে ভাগ করে খেলা হবে। ১৫টি ম্যাচ কলকাতায় হবে। তারমধ্যে ৯টি হবে যুবভারতীতে। ৬টি কিশোর ভারতী স্টেডিয়ামে। ২৩ আগস্ট ফাইনাল কলকাতায়। এবার থেকে শুরু হচ্ছে নতুন একটি নিয়ম। রাষ্ট্রপতি ভবনে বিজয়ী দলের হাতে প্রেসিডেন্টস কাপ তুলে দেওয়া হবে।