আজকাল ওয়েবডেস্ক: বাঙালি অস্মিতা রক্ষায় এবার বড় পদক্ষেপের পথে রাজ্য। ভিন রাজ্যে একের পর এক বাংলাভাষী শ্রমিকদের উপর অত্যাচারের ঘটনা বন্ধ করতে এবার তাঁদের রাজ্যে ফিরিয়ে আনার নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। সোমবার বোলপুরের গীতাঞ্জলি প্রেক্ষাগৃহে এক প্রশাসনিক বৈঠকে তিনি বলেন, আমাদের ২২ লক্ষ শ্রমিক যারা বাইরে কাজ করেন তাঁদের সবাইকে ফিরিয়ে আনুন এবার। বর্তমানে পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য রাজ্য সরকার যে 'সেল' তৈরি করেছে তার দায়িত্বে আছেন বীরভূমের বাসিন্দা ও তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ সামিরুল ইসলাম। এদিনের সভা থেকে তাঁকে নির্দেশ দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'সামিরুল ওঁদেরকে ফেরানোর ব্যবস্থা করো।'
এই শ্রমিকদের জন্য রাজ্যের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার ব্যাখ্যায় মুখ্যমন্ত্রী জানান, প্রয়োজনে এঁদের থাকার ব্যবস্থা যেমন করে দেওয়া হবে পাশাপাশি এঁদের কাজের ব্যবস্থাও করে দেওয়া হবে। প্রসঙ্গত, গত বেশ কিছুদিন ধরে ভিন রাজ্য বা মূলত বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে বাংলাভাষী শ্রমিকদের উপর একের পর এক অত্যাচারের ঘটনা সামনে এসেছে। প্রয়োজনীয় নথিপত্র থাকলেও তাঁদের বাংলাদেশি সন্দেহে আটক বা মারধরের অভিযোগও উঠে এসেছে। অবস্থা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে ভিন রাজ্যে কাজের সন্ধানে যাওয়া এই পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য রাজ্য সরকারের তরফে তৈরি করা হয়েছে হেল্পলাইন। মুখ্যমন্ত্রী বারবার সরব হয়েছেন এই অত্যাচারের অভিযোগে। এদিন বোলপুরের প্রশাসনিক বৈঠক থেকে তিনি এই সমস্যার স্থায়ী সমাধানের দিকে এগোলেন বলে মনে করা হচ্ছে।
যদিও এর আগে গত ২১ জুলাই তৃণমূল কংগ্রেসের শহিদ দিবসের মঞ্চ থেকেও ভিন রাজ্যে বাংলাভাষীদের উপর হেনস্থার অভিযোগ নিয়ে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে তুলাধুনা করেন মমতা ও তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক ব্যানার্জি। পরিষ্কার জানিয়ে দেন কোনোভাবেই এই জিনিস মেনে নেওয়া যাবে না। দরকারে গড়ে তোলা হবে তীব্র আন্দোলন।
এদিনের বৈঠকে ভোটার তালিকা সংশোধন প্রসঙ্গেও জেলাশাসকদের সতর্ক করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, জেলাশাসকদের অনেক সময় দায়িত্ব অন্যদের হাতে ছেড়ে দেওয়ার প্রবণতা দেখা যায়। তিনি বলেন, 'জেলাশাসকদের চোখ-কান খোলা রাখতে হবে। দিল্লিতে ১০০০ জনকে প্রশিক্ষণ দিতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। অথচ আমাদের জানানো হয়নি। জেলাশাসকদের উচিত ছিল আমাকে বা মুখ্যসচিবকে বলা। কিন্তু সেটা তাঁরা করেননি।'

বিহারের পর পশ্চিমবঙ্গেও বিশেষ নিবিড় সমীক্ষা বা স্পেশাল ইনটেনসিভ রিভিশন (এসআইআর) শুরু করতে পারে নির্বাচন কমিশন। এদিনের বৈঠকে বিএলও-দের উদ্দেশ্যে বলেন, ভোটার তালিকা থেকে যেন কারুর নাম বাদ না যায় সেটা দেখবেন। কোনও মানুষকে অযথা হেনস্থা করবেন না। তিনি স্পষ্ট করে দেন, ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজে সতর্কতা এবং মানবিকতা বজায় রাখতে হবে।
