আজকাল ওয়েবডেস্ক: ‘অপারেশন নারকো’ অভিযান চালিয়ে ফের বড় সাফল্য পেল পূর্ব রেলের শিয়ালদহ ডিভিশনের রেলওয়ে প্রোটেকশন ফোর্স (RPF)। ট্রেনের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ নিষিদ্ধ মাদক পাচারের চেষ্টা রুখে দিলেন আরপিএফের আধিকারিকরা। জানা গিয়েছে, গোপন সূত্রে আরপিএফের কাছে খবর ছিল শনিবার শিয়ালদহ স্টেশনে গাঁজা পাচারের ছক রয়েছে। সেই খবরের ভিত্তিতে শনিবার শিয়ালদহ স্টেশনে বিশেষ অভিযান চালায় আরপিএফের স্পেশাল টিম। শনিবার সন্ধ্যায় শিয়ালদহ স্টেশনে পৌঁছনো ১৩১৪৮ ডাউন উত্তরবঙ্গ এক্সপ্রেস ট্রেনে তল্লাশি চালিয়ে আটজন সন্দেহভাজনকে আটক করা হয়। ধৃতদের মধ্যে রয়েছেন চারজন পুরুষ, দুই মহিলা এবং দুই কিশোর।

ধৃতদের ব্যাগে তল্লাশি চালিয়ে মোট ছ’টি ব্যাগে মিলেছে ১২১ কেজি গাঁজা। জানা যাচ্ছে, এই বিপুল পরিমাণ মাদকের বর্তমান বাজারমূল্য প্রায় ২৫ লক্ষ টাকা। গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের এবং বাজেয়াপ্ত মাদকদ্রব্য শিয়ালদহ জিআরপির হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের প্রাসঙ্গিক ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। পূর্ব রেল সূত্রে জানা গেছে, ‘অপারেশন নারকো’ নামক বিশেষ অভিযানের মাধ্যমে রেলপথে যাত্রী ও পরিবহন নিরাপত্তা বজায় রাখাই লক্ষ্য। শিয়ালদহ ডিভিশনের আরপিএফ জানিয়েছে, ভবিষ্যতেও তারা মাদক ও অন্যান্য অপরাধমূলক কার্যকলাপের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে বদ্ধপরিকর।

উল্লেখ্য, কিছুদিন আগে গোপন সূত্রের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে বিধাননগর রোড স্টেশন থেকে ৫১.২১ কেজি গাঁজা উদ্ধার করে শিয়ালদহ ডিভিশনের আরপিএফ (রেল প্রোটেকশন ফোর্স)। জানা গিয়েছে, ঘটনায় গ্রেপ্তার করা হয় চার জন মাদক পাচারকারীকে। যার মধ্যে একজন মহিলাও রয়েছেন বলে জানায় রেল। জানা গিয়েছে, উদ্ধার হওয়া মাদকের বাজারমূল্য আনুমানিক ১১ লক্ষ টাকার কাছাকাছি। রেল সূত্রে খবর, ধৃতরা উত্তরবঙ্গ এক্সপ্রেস সফর করছিলেন। আগে থেকেই নজর রাখা আরপিএফের দল দক্ষিণেশ্বর এবং বিধাননগর রোড স্টেশনে প্রস্তুত ছিল। সেখানেই এই চারজনকে চিহ্নিত করে আটক করা হয়। তদন্তে ধৃতরা স্বীকার করে, তারা বামনহাট ও ফালাকাটা স্টেশন থেকে গাঁজা সংগ্রহ করে কলকাতায় এক অজ্ঞাত ক্রেতার কাছে পৌঁছে দেওয়ার কাজ করছিলেন।

গোটা কাজের জন্য তাদের প্রত্যেককে ৩ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা পারিশ্রমিক দেওয়ার কথা ছিল। ধৃতদের কাছ থেকে চারটি মোবাইল ফোনও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। বাজেয়াপ্ত সামগ্রী পরবর্তী আইনি পদক্ষেপের জন্য তুলে দেওয়া হয় শিয়ালদা জিআরপির হাতে। বর্তমানে দমদম এবং বিধাননগর রোড স্টেশনে বাড়ানো হয়েছে নিরাপত্তা। এই ধরনের ঘটনা যাতে না ঘটে সে কারণে তো বটেই পাশাপাশি যাত্রীদের সুরক্ষার দিক ভেবেও নেওয়া হয়েছে কড়া পদক্ষেপ। প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ যাত্রী যাতায়াত করেন এই দুটি স্টেশনের মাধ্যমে। বিশেষ করে সকাল এবং সন্ধ্যার ব্যস্ত সময়ের ভিড় সামলানো কার্যত এক চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে রেল কর্তৃপক্ষের কাছে। রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, স্বাভাবিক দিনে বিধাননগর স্টেশনে দৈনিক প্রায় ১.৭ লক্ষ যাত্রী ওঠানামা করেন। যার মধ্যে সকাল ও সন্ধ্যার পিক আওয়ারে অর্থাৎ শুধুমাত্র অফিস টাইমে ১ লক্ষের বেশি যাত্রীর ভিড় হয়। একইভাবে দমদম স্টেশনের দৈনিক যাত্রীসংখ্যা গড়ে ১.৫ লক্ষ ছাড়িয়েছে বর্তমানে।