আজকাল ওয়েবডেস্ক: ফের তৃণমূল নেতার উপরে ভয়াবহ হামলা। এবার ঘটনাস্থল হুগলির কোন্নগর। কোন্নগরের কানাইপুরে তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপাল দুষ্কৃতীরা। ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে কানাইপুর অটো স্ট্যান্ডে। 

জানা গেছে, কানাইপুর পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য পিন্টু চক্রবর্তী ওরফে মুন্না কানাইপুর অটো স্ট্যান্ডে তাঁর গ্যাসের অফিস থেকে বাড়ি যাবেন বলে বেরিয়েছিলেন গতকাল, বুধবার সন্ধায়। হঠাৎই দুষ্কৃতীরা তাঁর উপরে চড়াও হয়  ধারালো অস্ত্র নিয়ে। ঘটনায় হতচকিত হয়ে যান এলাকার প্রত্যক্ষদর্শীরা। তড়িঘড়ি করে পাশেই কানাইপুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। 

সেখান থেকে কলকাতায় পাঠানো হয় পিন্টু। পিন্টু চক্রবর্তী কানাইপুর ব্যবসায়ী সমিতিরও সভাপতিও। তাঁর উপর এমন আক্রমণে আতঙ্কিত স্থানীয় ব্যবসায়ীরা।
ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক শিবচন্দ্র দে বলেন, 'গতকাল সন্ধায় নিজের অফিসের সামনে দুষ্কৃতী হামলার শিকার হন পিন্টু চক্রবর্তী। তাঁর একটা হাত কেটে পড়ে যায়।এই ঘটনায় আমরা ব্যবসায়ীরা ভয়ে রয়েছি।' 

আরও পড়ুন: ভারতের প্রধানমন্ত্রী কে? ছাত্রদের প্রশ্নে শুধু ঢোক গিললেন, আলিয়া ভাটকেও হার মানালেন স্কুল শিক্ষক!

খবর পেয়ে প্রথমে কানাইপুর ফাঁড়ি পুলিশ, উত্তরপাড়া থানা থেকে বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে হাজির হয়।আসেন ডিসিপি শ্রীরামপুর অর্নব বিশ্বাস। কী কারণে তৃণমূল সদস্যকে দুষ্কৃতীরা আক্রমণ করল, তা এখনও স্পষ্ট নয়। কারা তাকে মারতে এল, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। কানাইপুরে যেখানে এই ঘটনা ঘটেছে, সেখানেই রয়েছে মদের দোকান। নানা ধরনের লোক সেখানে আসে রাত হলেই। পুলিশ এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখছে। 

প্রসঙ্গত, চলতি মাসেই জেলায় জেলায় একাধিক তৃণমূল খুন হয়েছেন।‌ বিভিন্ন জায়গায় আক্রান্ত হয়েছেন একাধিক তৃণমূল কর্মী, সমর্থক। বীরভূমের লাভপুরের শ্রীনিধিপুর অঞ্চলের তৃণমূল সভাপতি পীযূষ ঘোষকে খুন করা হয়েছিল। গভীর রাতে আচমকা ফোন যায় পীযূষের কাছে। ফোন পেয়েই বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান তিনি। বাড়ির অদূরে রাস্তায় তাঁর দেহ উদ্ধার হয়। জানা গিয়েছে, যেখানে তৃণমূল নেতার দেহ উদ্ধার হয়েছে, সেখানেই পাওয়া গিয়েছে তাঁর মোটরসাইকেলটিও। 

নেতাকে মাথার পিছনদিক থেকে গুলি করে খুন করা হয়েছে বলে খবর। বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল তাঁর দেহ। সেখানেই হয় ময়নাতদন্ত। সূত্রের খবর, ঘটনায় ইতিমধ্যেই তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ। তাঁদের মধ্যে দু’ জন মহিলা। ঘটনাস্থলের সামনে থাকা একটি বাড়ি থেকে মৌসুমী মাল নামে এক মহিলাকে আটক করেছে পুলিশ। ঘটনার পর ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ বাহিনী টহল দিচ্ছে। 

এরপর বীরভূমে ফের আরও এক তৃণমূল নেতা খুন। মৃত তৃণমূল নেতার স্ত্রীর অভিযোগ সিপিএম সমর্থদের বিরুদ্ধে। বীরভূমে বোমাবাজিতে ফের রাজনৈতিক খুনের ঘটনা ঘটে। ময়ূরেশ্বর-১ পঞ্চায়েত সমিতির মৎস্য কর্মাধ্যক্ষের স্বামী ও তৃণমূল নেতা বাইতুল্লা শেখকে বোমা মেরে খুন করা হয়েছে। মৃতের স্ত্রী তথা মৎস্য কর্মাধ্যক্ষ শাকিলা বিবির অভিযোগ, গ্রামের সিপিএম সমর্থকরাই পরিকল্পনা করে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে।

আরও তৃণমূল নেতাকে গুলি করে খুনের অভিযোগ উঠেছে ভাঙড়ে। মৃত ব্যক্তির নাম রাজ্জাক খাঁ। ১০ জুলাই, বৃহস্পতিবার রাতে ভাঙড়ের বিজয়গঞ্জ বাজারের কাছে ওই তৃণমূল নেতাকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় দুষ্কৃতীরা। এরপর গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তাঁকে তড়িঘড়ি উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরবর্তীতে সেখানেই তাঁকে মৃত ঘোষনা করা হয় বলে খবর। আবার বৃহস্পতিবার রাতেই মালদহে জন্মদিনের পার্টিতে ঘর বন্ধ করে কুপিয়ে খুন তৃণমূল নেতাকে। মৃত তৃণমূল নেতার নাম আবুল কালাম আজাদ। খুনের অভিযোগ উঠছে মাইনুল শেখ-সহ বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত ব্যক্তিও তৃণমূল নেতা বলে অভিযোগ। জানা গিয়েছে অভিযুক্ত মাইনুল শেখ কাজিগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য। এই গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে কংগ্রেসের হয়ে ভোটে জিতলেও পরবর্তীতে জেলা সভাপতি আব্দুর রহিম বক্সির হাত ধরে তৃণমূল কংগ্রেসের যোগদান করেন। ঘটনাটি ঘটেছে মালদহের ইংরেজবাজারের লক্ষীপুরে।