আজকাল ওয়েবডেস্ক: উত্তরে ভয়াবহ দুর্যোগ। রবিবার দিনভর পরিস্থিতির দিকে নজর রেখে, সোমবারেই গিয়েছিলেন উত্তরবঙ্গে। বুধবার উত্তরবঙ্গ থেকে নেমে এসেছিলেন কলকাতায়। জানিয়েছিলেন, ফের ফিরবেন উত্তরবঙ্গে। সেই মতো রবিবার ফের পাহাড়ে গিয়েছেন মমতা ব্যানার্জি। প্রথম দফার সফরেই তিনি জানিয়েছিলেন, ভয়াবহ দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলি এবং নিহতদের পরিবারগুলিকে কীভাবে, কোন উপায়ে সাহায্য করবে রাজ্য সরকার। সোমবার নাগরাকাটায় দুর্যোগে নিহতদের পরিবারের সদস্যদের হাতে চাকরির নিয়োগপত্র তুলে দিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ প্রসঙ্গে টানলেন ভুটানের প্রসঙ্গও।
৬ অক্টোবর মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, দুর্যোগে নিহতদের পরিবারগুলিকে ক্ষতিপূরণ দেবে রাজ্য সরকার, সঙ্গেই পরিবারের এক সদস্যকে স্পেশ্যাল হোমগার্ডের চাকরি দেওয়া হবে বলেও ঘোষণা করেন। সোমবার নাগরাকাটায় মমতা বলেন, 'যাঁদের মৃত্যু হয়েছে, তাঁদের পরিবারকে ইতিমধ্যেই আমরা পাঁচ লক্ষ টাকা করে দিয়েছি, আমি বলে গিয়েছিলাম, মৃতদের পরিবারের এক সদস্যকে চাকরি দেওয়া হবে। নাগরাকাটায় আমি চাকরি প্রস্তুত করে নিয়ে এসেছি, আমি আজকে তা দিয়ে দেব।'
সোমবার নাগরাকাটা থেকে বেরিয়ে মেটেলিতে ধূপগুড়ির বিধায়ক নির্মল রায়ের কাছে ধূপগুড়ির জন্য বরাদ্দ ত্রাণ তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। সেই ত্রাণ ধূপগুড়িতে নিয়ে গিয়ে আলোচনার মাধ্যমে বিলি করা হবে বলে জানান নির্মল রায়। নাগরাকাটার পর ধূপগুড়িতেই মুখ্যমন্ত্রী যাওয়ার কথা ছিল। সেই অনুযায়ী প্রশাসনিক প্রস্তুতিও আগে ভাগে সেরে নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু নাগরাকাটা থেকে মুখ্যমন্ত্রী বেরিয়ে মেটেলিতে বিধায়ক নির্মল রায়ের কাছে ত্রাণ সামগ্রী বুঝিয়ে কার্শিয়াং যায়। সেখান থেকে আগামিকাল মিরিক যাওয়ার কথা রয়েছে তাঁর।
এদিন নাগরাকাটার টন্ডু, বামনডাঙা এলাকায় যান মুখ্যমন্ত্রী। এরপর বন্যা বিধ্বস্তদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। নিজে হেঁটে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন সরেজমিনে। পাশাপাশি বন্যা দুর্গতদের হাতে ত্রাণ তুলে দেন। বন্যা দুর্গতরা এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা, স্কুলের সমস্যা-সহ একাধিক সমস্যার কথা তুলে ধরেন। মুখ্যমন্ত্রী খুব দ্রুত স্কুলের ব্যবস্থা করে দেবেন বলে জানান। দুর্যোগে যাঁদের কাগজপত্র হারিয়ে গিয়েছে, সেসবের জন্য আলাদা ক্যাম্প করছে রাজ্য সরকার, এদিন তাও জানান মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, 'যাঁর যা হারিয়েছে, সেগুলো লেখান, তাহলে আপনারা ডুপ্লিকেট কাগজ পাবেন।' সাতজন নিহত ব্যক্তির পরিবারের সদস্যদের একজনের হাতে চাকরির নিয়োগপত্র তুলে দেন। এদিন নাগরাকাটা থেকে বেরিয়ে চালসায় দাঁড়িয়ে পড়ে মুখ্যমন্ত্রীর কনভয়। সেখানেও বন্যা দুর্গতদের হাতে ত্রাণ তুলে দেন। এদিনও মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন।
একই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী এদিন বলেন, 'ভুটানের জলে এত বড় ঘটনা ঘটেছে। আমরা অনেকদিন ধরে বলছি ইন্দো-ভুটান রিভার কমিশন করা উচিত, যাতে বাংলাকে সদস্য রাখা উচিত। আমাদের চাপেই ১৬ তারিখে একটি বৈঠক হচ্ছে, যতদূর জানি। আমরা অফিসারকে পাঠাব।' সেইসঙ্গেই মমতা বলেন, 'কিন্তু মনে রাখতে হবে, এই যে ভুটানের জলে এত ক্ষতি হয়েছে, আমরা চাই যে ওরা ক্ষতিপূরণটা দিক। সবটাই তো আমাদের করতে হয়, পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারকে। না দিল্লি এক পয়সা দেয়, না কেউ।'
