আজকাল ওয়েবডেস্ক: আসন্ন ছট পুজোকে কেন্দ্র করে মুর্শিদাবাদ জেলার ধুলিয়ান পুরসভা বিশেষ প্রস্তুতি শুরু করেছে। মুর্শিদাবাদ জেলায় ছট পুজোর দিন সব থেকে বেশি মানুষের ভিড় হয় সামশেরগঞ্জ থানার অন্তর্গত ধুলিয়ান পুরসভার দু'টি ঘাটে। সম্প্রতিক হিংসার ইতিহাস ভুলে সামশেরগঞ্জ থানা এলাকার মানুষ এবছর কালীপুজো এবং দুর্গাপুজোর সময় যেভাবে উৎসবের আনন্দে মেতে উঠেছিল, প্রশাসনিক কর্তারা আশাবাদী একইভাবে এলাকার মানুষ নির্বিঘ্নে ছট পুজো সম্পন্ন করবেন।
ছট পুজো উপলক্ষে ইতিমধ্যেই তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত ধুলিয়ান পুরসভা, কাঞ্চনতলা এবং কলাবাগান ঘাট পরিষ্কার করে সাজিয়ে তোলার কাজে হাত দিয়েছে, যাতে পুণ্যার্থীরা নির্বিঘ্নে পুজো এবং অন্যান্য ধর্মীয় আচার পালন করতে পারেন। পুরসভার তরফ থেকে ঘাটগুলোতে পরিচ্ছন্নতার পাশাপাশি সৌন্দর্যায়নের কাজেও হাত দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: চোর পালালে, বুদ্ধি বাড়ে! মিউজিয়ামের হীরের গয়না এবার কোন ব্যাঙ্কের গোপন ভল্টে
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ছট পুজো উপলক্ষে ইতিমধ্যে গঙ্গা তীরবর্তী ঘাটগুলোকে বিশেষভাবে প্রস্তুত করা হয়েছে ।ঘাটে আলোকসজ্জা ,সিঁড়ি- মেরামত, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা এবং নিরাপত্তার জন্য অতিরিক্ত ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে। এছাড়াও পুণ্যার্থীদের সুবিধার জন্য পানীয় জল, অস্থায়ী শৌচাগার ও বিশ্রামাগারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে পুরসভার তরফ থেকে।
ধুলিয়ান পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান সুমিত সাহা বলেন, 'ছট পুজো আমাদের এলাকার একটি ঐতিহ্যবাহী উৎসব। প্রত্যেক বছর সামশেরগঞ্জ থানার বিভিন্ন এলাকার মানুষ ছাড়াও আশেপাশের বিভিন্ন থানা এলাকা থেকে প্রায় ৬০-৭০ হাজার মানুষ ধুলিয়ান পুরসভার কাঞ্চনতলা এবং কলাবাগান ঘাটে এসে ছট পুজো করেন।'
তিনি জানান, 'ইতিমধ্যেই পুরসভার সাফাই বিভাগ থেকে প্রায় ৪০ জন কর্মীকে ঘাটগুলো পরিষ্কার করার কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে । ঘাটের পাশে বসে পুণ্যার্থীরা যাতে পুজো করতে পারেন সেইভাবে সমস্ত এলাকাকে প্রস্তুত করা হয়েছে। '
পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান আরও বলেন, 'পুণ্যার্থীদের ঘাটে যাওয়ার রাস্তা এবং ঘাটে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে ফুলমালা পড়ে যাতে গঙ্গা নদীর জল দূষিত না হয় সেদিকেও পুরসভার নজর রাখবে।'
পুরসভার সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রচুর সংখ্যক মানুষ সোমবার বিকেল থেকে গাড়ি নিয়ে পুজো দিতে আসবেন। যানজট আটকাতে কোনও গাড়িকে সরাসরি ঘাটের দিকে যেতে দেওয়া হবে না। সমস্ত গাড়ি জৈন কলোনির ভিতরে একটি ফাঁকা জায়গায় রাখার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। বিনয় দাস নামে ধুলিয়ান পুরসভা এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, 'ছট পুজো সরাসরি বাঙালি সংস্কৃতির অঙ্গ না হলেও এখানে প্রত্যেক বছর যে ধুমধামের সঙ্গে এই পুজো অনুষ্ঠিত হয়। এই পুজো এখন স্থানীয় মানুষের সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হয়ে গিয়েছে।'
অন্যদিকে ছট পুজো উপলক্ষে সামশেরগঞ্জ থানা এলাকায় যে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা এড়ানোর জন্য পুলিশ প্রশাসনের তরফ থেকে নিরাপত্তার বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। থানার এক আধিকারিক জানান, যে ঘাটগুলিতে পুজো হবে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা ছাড়াও সিসিটিভি ক্যামেরার ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে। প্রশাসনের কর্তারা জানিয়েছেন, এই উৎসবের মাধ্যমে স্থানীয় এলাকার সংস্কৃতি, ঐতিহ্য এবং ঐক্য আরও একবার প্রকাশ পাবে।
