আজকাল ওয়েবডেস্ক: ডেঙ্গির মারণ ছোবল দক্ষিণ ২৪ পরগনার রাজপুর-সোনারপুরে। একই পরিবারের দু’জনের মৃত্যুতে আতঙ্ক। পুর পরিষেবার খামতি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ স্থানীয়দের।
রাজপুর সোনারপুর পুরসভার ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের ক্ষুদিরাম কলোনিতে ডেঙ্গিতে মৃত্যু হল একই পরিবারের দুই সদস্যের। ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে গোটা এলাকায়। আতঙ্কে অনেকেই এলাকা ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিচ্ছেন। স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করেছেন, নিয়মিত ড্রেন পরিষ্কার না হওয়া ও পুরসভার গাফিলতির ফলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
শনিবার রেনিয়া ক্ষুদিরাম সরণির বাসিন্দা বন্দনা সর্দার (৪৩) ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে এমআর বাঙ্গুর হাসপাতালে মারা যান। এর আগে চলতি মাসের ৬ তারিখে একই পরিবারের সদস্য বিপ্লব সরদার (৪৫) প্রাণ হারান একই কারণে। পরপর দুই মৃত্যুর ঘটনায় ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা রবিবার এলাকায় কাউন্সিলর দেবব্রত মণ্ডল এলে তাঁকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন কাউন্সিলর। তাঁর দাবি, 'পুরসভার ড্রেনে কোথাও জল জমে নেই। ঘিঞ্জি এলাকায় মাটির বেড় দেওয়া সেপটিক ট্যাঙ্কের জল উপচে পড়ায় সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। মানুষের অসচেতনতার জন্যই এমনটা ঘটছে।' যদিও বাসিন্দাদের দাবি, পুর পরিষেবার খামতির জেরেই দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ডেঙ্গি মশা। এখন গোটা এলাকায় নেমেছে আতঙ্কের ছায়া।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরে বর্ষার শুরুতেই খাস কলকাতায় ডেঙ্গিতে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছিল। কলকাতায় এবার ডেঙ্গিতে মৃত্যু হয়েছিল এক নাবালিকার। জানা গেছে, মৃত ডেঙ্গি আক্রান্ত নাবালিকার নাম, সারণী ব্যানার্জি। সে দমদম পুরসভার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ছিল। ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছিল বৈদ্যনাথ গার্লস হাইস্কুলের সপ্তম শ্রেণির ওই ছাত্রীর। তার মৃত্যুতে শোকের ছায়া পরিবারে।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, গত ১৯ জুন থেকে সে অসুস্থ ছিল। তপসিয়ার একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে চিকিৎসাধীন ছিল সে। কিন্তু ক্রমেই স্বাস্থ্যের অবনতি হচ্ছিল। দ্রুত প্লেটলেট কমে যাওয়ার ফলে, শনিবার ভোর রাতে মৃত্যু হয়েছে তার। পরিবারের অভিযোগ, ডেঙ্গিতেই মৃত্যু হয়েছে সারণীর।
পরিবারের তরফে আরও জানিয়েছে, অসুস্থ অবস্থায় সে মামার বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিল। সেখানে যাওয়ার পর প্রথমে স্থানীয় ডাক্তার দেখানো হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় দমদমে মিউনিসিপালিটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপরে তাকে তপসিয়ার একই বেসরকারি নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়া হয়।
প্রতি বছর বর্ষায় ডেঙ্গি ঘিরে উদ্বেগের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। এবারেও অন্যথা হল না। বর্ষা বিদায় নিলেও ডেঙ্গির হাত থেকে মিলল না রেহাই।
