বলিউডের আজকের ‘বাদশা’ এক সময় ছিলেন নিছক এক সাধারণ তরুণ। স্বপ্ন, ক্ষিদে আর অস্থিরতায় ভরা এক নবাগত অভিনেতা, যিনি মুম্বই শহরে এসে খুঁজছিলেন নিজের জায়গা। আর তাঁর সেই দিনগুলোর সাক্ষী ছিলেন অভিনেতা–প্রযোজক বিবেক বসওয়ানি। সম্প্রতি এক আলাপচারিতায়, শাহরুখ খানের সেই প্রথম দিনগুলোর গল্প শোনালেন বিবেক, যেখানে মিশে আছে বন্ধুত্ব, সংগ্রাম, ভালবাসা আর মায়ের অপূর্ণ স্বপ্নের গন্ধ। জানিয়ে রাখা ভাল, ব্যক্তিগত জীবনে বহু ভচর ধরে বন্ধু শাহরুখ ও বিবেক। 

বিবেকের কথায়, “ শাহরুখ তখন মুম্বইয়ে এসেছে হাতে একটুও টাকা নেই। মাসের পর মাস আমার বাড়িতেই থাকত। একদিন বাইরে খেতে গিয়েছিলাম, কারণ ও নিরামিষ খেতে পছন্দ করত না। প্রায় ২০ মিনিট চুপ করে খেয়ে গেল। পরে বলল, ‘বিবেক, জানিস, আমার মা মারা যাচ্ছে একটু একটু করে।’ তারপর সারারাত ধরে ও কথা বলল পরিবার, বোন, গৌরী...সবার বিষয়ে। সব কথা খুলে বলেছিল।”

সেই সময় শাহরুখ প্রায় বড়দিন পর্যন্ত বিবেকের কাছেই ছিলেন। একসঙ্গে গিয়েছিলেন লা পেপে-তে এক পার্টিতে যে বিল্ডিংয়ে থাকতেন জ্যাকি শ্রফ, জিনত আমানদের মতো তারকারা। তারপরই খবর আসে, শাহরুখের মায়ের শরীর খারাপ। সেই সময় তাঁর কাছে ওষুধ কেনার টাকাও না থাকায়, বিবেক নিজের বাবার কাছ থেকে ধার করে দিল্লিতে পাঠান সেই টাকা।

এর মধ্যেই প্রযোজক বিক্রম মলহোত্রা এসে শাহরুখকে এক সিনেমার প্রস্তাব দেন। কিন্তু শাহরুখ তখনও দ্বিধায়। বিবেক বলেন, “ও বলেছিল, গৌরী চায় না আমি অন্য নায়িকাদের জড়িয়ে ধরি। ও তাই তখন ছোটপর্দাতেই খুশি ছিল। তাই আমি চাপ দিইনি।” অবশেষে সিমলায় এক ছোট ছবির  শুটিংয়ের সময়, কেতন মেহতার সঙ্গে দেখা হয় শাহরুখের। তারপরই ‘মায়া মেমসাব’ ছবিতে কাজ শুরু। সেখান থেকেই শুরু নতুন যাত্রা আর সিনেমায় শাহরুখের জন্ম।

কয়েকদিন পর, এক ভোরবেলা বিবেকের দরজায় কড়া নাড়ে শাহরুখ। হাতে বিশাল ব্যাগ। ঘরে না ঢুকে শুধু বলে, “একটা সিনেমা করবি?” সেই সময়েই জানায়, “মা চেয়েছিলেন আমি তারকা হই। এখন সেই স্বপ্নটাই পূরণ করতে হবে।”

সেই তরুণই আজ বিশ্বের অন্যতম বড় সুপারস্টার। আর মা যে স্বপ্ন দেখেছিলেন তা আজ কিং খানের জীবন্ত বাস্তবতা। আগামী ২০২৬-এ মুক্তি পেতে চলেছে তাঁর নতুন ছবি ‘King’ যার ট্রেলার মুক্তি পেয়েছে অভিনেতার ৬০তম জন্মদিনে। ছবিতে শাহরুখের সঙ্গে রয়েছেন তাঁর মেয়ে সুহানা খান, দীপিকা পাড়ুকোন, রানি মুখোপাধ্যায়, অভিষেক বচ্চন, আরশাদ ওয়ার্সি ও অনিল কাপুর।