জনপ্রিয় তামিল অভিনেতা এবং রাজনীতিবিদ থালাপতি বিজয়ের চেন্নাইয়ের নীলানকারাই-এর বাসভবনে বোমাতঙ্ক! বিজয়ের বাড়ি বোমা দিয়ে ওড়ানোর হুমকি ফোন ঘিরে চাঞ্চল্য। চেন্নাই পুলিশ হুমকি ফোন পেয়েই বিজয়ের তামিলনাডুর নীলঙ্করাই এলাকার বাড়ির নিরাপত্তা বাড়িয়ে দিয়েছে। যদিও শেষ পর্যন্ত খবরটি ভুয়ো প্রমাণিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার, ৯ অক্টোবর ভোরে এই ঘটনাটি ঘটে, যা দ্রুত চাঞ্চল্য সৃষ্টি করে। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সেদিন মধ্যরাতে পুলিশ কন্ট্রোল রুমে একটি বেনামী ফোন আসে। কলার দাবি করে যে অভিনেতা বিজয়ের নীলানকারাই-এর ইসিআর সংলগ্ন বাসভবনে একটি বোমা রাখা আছে। এই সতর্কতা পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই পুলিশ প্রশাসন কোনও ঝুঁকি না নিয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়।
বোমা শনাক্তকরণ ও নিষ্ক্রিয়করণ স্কোয়াডের একটি দল, স্থানীয় পুলিশ এবং একটি স্নিফার ডগ নিয়ে ভোর ৪.৩০ নাগাদ বিজয়ের বাড়ির সামনে পৌঁছয়। তবে, সেখানেই একটি অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতি তৈরি হয়।

পুলিশ দল যখন তল্লাশির জন্য ভেতরে ঢুকতে চায়, তখন অভিনেতার নিরাপত্তা কর্মীরা তাঁদের বাধা দেন। নিরাপত্তা কর্মীরা পুলিশকে জানান যে অভিনেতা বিজয় তখন ঘুমিয়ে আছেন এবং তাঁকে এই মুহূর্তে বিরক্ত করা যাবে না। পুলিশ দলের সদস্যরা ভোর সাড়ে চারটে থেকে সকাল সাতটা পর্যন্ত বাইরে অপেক্ষা করতে বাধ্য হন। অবশেষে, সকাল ৭টা নাগাদ বিজয়ের ঘুম ভাঙার পর, সকাল সাতটা বেজে পাঁচ মিনিটে পুলিশ দলকে বাড়ির ভিতরে প্রবেশ করার অনুমতি দেওয়া হয়। ভেতরে প্রবেশের পর, বোম স্কোয়াড আধ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে সম্পূর্ণ প্রাঙ্গণ পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তল্লাশি করে। তল্লাশির পর তারা নিশ্চিত করেন যে এই হুমকিটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন, এবং ফোন কলটি ছিল একটি ভুয়ো বোমাতঙ্ক।
অভিনেতার বাড়িতে এই ধরনের বোমাতঙ্কের ঘটনাটি এমন এক সময়ে ঘটল, যখন সম্প্রতি কারুরে তাঁর রাজনৈতিক সমাবেশের সময় পদদলিত হয়ে ৪১ জনের প্রাণহানির ঘটনা নিয়ে তামিলনাড়ু জুড়ে তীব্র জন অসন্তোষ বিরাজ করছে। এই ট্র্যাজেডির পর বিজয়ের প্রতিক্রিয়া, বিশেষ করে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে দেখা না করার বিষয়টি, সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।
আরও পড়ুন: হামলার রাতে আহত হয়েছিল ছোট্ট জেহ-ও! ছুরির কোপ পড়েছিল তার উপরেও? কোন সত্যি সামনে আনলেন সইফ?
আশ্চর্যজনকভাবে, এটি গত ১১ দিনের মধ্যে বিজয়ের বাসভবনে আসা দ্বিতীয় বোমাতঙ্কের ঘটনা। এর আগে ২৮ সেপ্টেম্বর এবং তার মাত্র দু'দিন আগে অর্থাৎ বুধবার, ৭ অক্টোবর রাতেও ডিজিপি-র কার্যালয় এবং পুলিশ কন্ট্রোল রুমে একই ধরনের ভুয়ো ফোন এসেছিল। এই ধরনের ধারাবাহিক হুমকিগুলির উদ্দেশ্য কী, তা নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছে।
পুলিশ কন্ট্রোল রুমে আসা কলটির উৎস খুঁজে বের করার জন্য তদন্ত শুরু করেছে। পুলিশ জানিয়েছে, তারা প্রযুক্তিগত সূত্র ব্যবহার করে সেই বেনামী কলার-এর অবস্থান চিহ্নিত করার চেষ্টা করছে। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, এই ধরনের ভুয়ো কলগুলির পিছনে এমন কিছু ব্যক্তি জড়িত থাকে, যাদের হয়তো মানসিক অসুস্থতা রয়েছে অথবা যারা ইচ্ছাকৃতভাবে তারকাদের হয়রানি করতে চায়। এই ভুয়ো কলের জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
