আজও দর্শকের কাছে সমান জনপ্রিয় তিনি। ৭০ ও ৮০-র দশকে তিনি একের পর এক হিট ছবি উপহার দিয়েছেন। তাঁর সৌন্দর্য, মিষ্টি হাসি ও অভিনয়ের জাদুতে মুগ্ধ হয়েছিল গোটা প্রজন্ম। তিনি বর্ষীয়ান অভিনেত্রী মৌসুমী চট্টোপাধ্যায়।

 

 

 

 

সম্প্রতি একটি পুরনো স্মৃতি ভাগ করতে গিয়ে তিনি জানালেন, কীভাবে একবার কিংবদন্তি অভিনেতা রাজ কুমারের সঙ্গে একটি স্নানের দৃশ্য করতে অস্বীকার করেছিলেন। সেই ঘটনাটি আজও বলিউডের মজার কাহিনিগুলির মধ্যে একটি হয়ে আছে।

 

 

 

 

ঘটনাটি ঘটেছিল ১৯৮০ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘চম্বল কী কসম’ ছবির শুটিংয়ের সময়। ছবিতে রাজ কুমার ও মৌসুমী দু’জনেই গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। শুটিং চলছিল চম্বলের এক নদীর ধারে। এক সন্ধ্যায় ইউনিটের সবাই আড্ডা দিচ্ছিলেন। হঠাৎ করেই রাজ কুমার প্রস্তাব দিলেন, ছবির জন্য মৌসুমী ও তাঁর একটি নদীতে স্নানের দৃশ্য রাখা হোক।

 

 

 

 

রাজ কুমারের প্রস্তাব শুনে অভিনেত্রী নাকি প্রথমেই হেসে ফেলেন। পরে তিনি বিনয়ের সুরে বলেন, “না রাজজি, আমি সাঁতার জানি না। তাই এই দৃশ্য আমার পক্ষে সম্ভব নয়।” কিন্তু রাজ কুমার ছিলেন একেবারে ভিন্ন ধাঁচের মানুষ। তিনি সঙ্গে সঙ্গে বলেন, “ভয় কীসের? আমি তো আছি তোমার সঙ্গে, আমি সামলে নেব।”

 

 

 

 

 

এবার মৌসুমী খুনসুটি করে এমন এক জবাব দেন, যা শুনে পুরো সেট হাসিতে ফেটে পড়ে। তিনি রাজ কুমারকে বলেছিলেন, “আপনার পরচুলা যদি নদীতে ভেসে যায়, তখন আপনি আগে আপনার পরচুলা বাঁচাবেন নাকি আমাকে?” এই কথা শুনেই উপস্থিত সবাই হেসে লুটোপুটি খেতে শুরু করেন। রাজ কুমারও তাঁর স্বভাবসুলভ রহস্যময় হাসি হেসে বিষয়টিকে উড়িয়ে দেন।

 

 

 

আরও পড়ুন: বড়পর্দায় ফিরছে হিরণ-পায়েল জুটি? কার পরিচালনায় আসছে নতুন ছবি?

 

 

এই ছোট্ট ঘটনার ভিতরেই লুকিয়ে আছে ৮০-র দশকের বলিউডের কাজের পরিবেশের সরলতা ও মজা। মৌসুমী চট্টোপাধ্যায় বরাবরই অকপট এবং সোজাসাপ্টা উত্তর দেওয়ার জন্য পরিচিত ছিলেন। তাঁর রসবোধ এবং বুদ্ধিদীপ্ত মন্তব্যে অনেক সময় সহ-অভিনেতারাও চমকে যেতেন।

 

 

 

 

 

রাজ কুমারের ব্যাপারেও বলিউডে অসংখ্য গল্প প্রচলিত। তাঁর অনন্য ব্যক্তিত্ব, গম্ভীর কণ্ঠস্বর আর আলাদা ধাঁচের সংলাপ উচ্চারণ তাঁকে অন্যদের থেকে আলাদা করে তুলেছিল। কিন্তু তিনি ছিলেন একটু গম্ভীর প্রকৃতির। তাই মৌসুমীর মতো সহ-অভিনেত্রী যখন তাঁর পরচুলা নিয়ে এমন রসিকতা করেন, সেটি আজও বলিউডের অন্দরমহলে আলোচনার বিষয়।

 

 

 

 

 

মৌসুমী পরে এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, “ওই সময়ে আমি নতুন ছিলাম না, কিন্তু খুব সাহসীও ছিলাম না। তাই রাজ কুমারের প্রস্তাবে সরাসরি না বলতে একটু অস্বস্তি হচ্ছিল। কিন্তু পরচুলা প্রসঙ্গ টেনে মজা করে বলাতে ব্যাপারটা সহজ হয়ে গেল।”

 

 

 

 

 

এই স্মৃতিচারণ আজও প্রমাণ করে, বড় তারকাদের জীবনেও থাকে অনেক মজার মুহূর্ত। দর্শক তাঁদের কেবল রুপোলি পর্দার চরিত্র হিসেবেই দেখেন, কিন্তু পর্দার আড়ালে তাঁদের হাসিঠাট্টা, খুনসুটি বা অস্বস্তির মুহূর্তও সমান বাস্তব।

 

 

 

 

বর্ষীয়ান অভিনেত্রীর এই গল্প শুধু একটি মজার কাহিনি নয়, বরং মনে করিয়ে দেয়, সেই সোনালি সময়ে বলিউডের কাজের পরিবেশ কতটা বন্ধুত্বপূর্ণ ও মজাদার ছিল। রাজ কুমার ও মৌসুমীর মতো দুই কিংবদন্তির এমন এক চটকদার মুহূর্ত আজও অনুরাগীদের আনন্দ দেয়।