বয়স তাঁর কাছে শুধুই একটা সংখ্যা। ৫০ বছর বয়সেও শিল্পা শেট্টির ফিটনেস দেখার মতো। সুঠাম শরীর, উজ্জ্বল ত্বক আর অফুরন্ত উদ্যমে তিনি আজও অনুপ্রেরণা ফিটনেসপ্রেমীদের কাছে। তবে তাঁর সৌন্দর্য ও ফিট থাকার রহস্য কঠোর ডায়েট বা ঘণ্টার পর ঘণ্টা জিম নয়, বরং বুদ্ধিদীপ্ত খাওয়া, সহজ রুটিন এবং পুষ্টিকর খাবার যা তাঁকে প্রতিদিনই রাখে শক্তিশালী, প্রাণবন্ত ও দীপ্তিময়।

দিনের শুরুতেই যত্নের ছোঁয়া

শিল্পার সকাল শুরু হয় একেবারে আয়ুর্বেদ-নির্ভর স্বাস্থ্যরুটিন দিয়ে। এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, “আমি প্রতিদিন সকালে দেড় গ্লাস হালকা গরম জল খেয়ে দিন শুরু করি।” এরপর খান চার ফোঁটা ননি জুস, যাকে তিনি বলেন ‘এনার্জি বুস্টার’। তারপর আসে অয়েল পুলিং—প্রায় পাঁচ মিনিট নারকেল তেল মুখে ঘুরিয়ে মুখ পরিষ্কার রাখা এবং দেহ ডিটক্সের এক পুরনো পদ্ধতি।

সকালের জলখাবার নিয়ে শিল্পার ধারণা পরিষ্কার। তিনি বলেন, “আমি কখনও ব্রেকফাস্ট বাদ দিই না, কারণ আপনি যদি ব্রেকফাস্ট না করেন, তাহলে মস্তিষ্ক আর শরীর—দুটোই ঠিকভাবে কাজ করে না।” তাঁর পছন্দের খাবার হল মিউজলি আর তাজা ফল যেমন আপেল বা আম, সঙ্গে আমন্ড দুধ, অথবা সেদ্ধ ডিম। 

‘কম নয়, ঠিকভাবে খাওয়াই আসল রহস্য’

শিল্পার ফিটনেস মন্ত্র একেবারে সহজ—সব সময় খান, কিন্তু ঠিকভাবে খান। তাঁর প্রতিটি খাবারই পরিষ্কার, স্বাস্থ্যকর এবং পুষ্টিকর। সন্ধ্যার দিকে তিনি সাধারণত হালকা স্যুপ বা ব্রথ খান, সঙ্গে থাকতে পারে ডিম বা শুকনো ফল। মেটাবলিজম ঠিক রাখতে রাতে তিনি কার্বোহাইড্রেট এড়িয়ে চলেন এবং রাত সাড়ে সাতটার মধ্যেই ডিনার সারেন—সামাজিক অনুষ্ঠান থাকলেও এই নিয়মে ব্যতিক্রম হয় না।

ঘি-র প্রতি ভালবাসা

অনেকে যেখানে ফ্যাট খাওয়াকে ভয় পান, সেখানে শিল্পা কিন্তু উল্টোটা ভাবেন। তাঁর মতে, “অনেকেই ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে গিয়ে ফ্যাট বাদ দেন, কিন্তু সঠিক ধরনের ফ্যাট শরীরের জন্য উপকারী।” তাঁর জন্য ঘি হল জ্বালানি, শত্রু নয়। প্রতিদিন দুপুরের খাবারে তিনি ঘি রাখেন—সঙ্গে থাকে ব্রাউন রাইস এবং অন্যান্য পুষ্টিকর খাবার, যা শরীরকে দেয় শক্তি এবং ত্বকে আনে স্থিতিস্থাপকতা। তিনি নারকেল দুধকেও অত্যন্ত পুষ্টিকর বলে মনে করেন, বিশেষত যাঁরা ল্যাকটোজ ইনটলারেন্ট। এমনকি কলার মতো উচ্চ কার্বযুক্ত ফলও তিনি খেতে পরামর্শ দেন। শিল্পা বলেন, “এগুলো শরীরের জন্য খুবই ভাল।” 

ডায়েটের পাশাপাশি, শিল্পার যৌবনদীপ্ত ত্বক ও ফিট শরীরের রহস্য তাঁর নিয়মিত যোগাভ্যাস, ব্যায়াম, ইতিবাচক চিন্তা এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ—শৃঙ্খলাপূর্ণ জীবনযাপন। ৫০-এ দাঁড়িয়েও তিনি যেমন প্রাণবন্ত, তা প্রমাণ করে দেয়—শিল্পার কাছে ফিটনেস মানে শুধু শরীরচর্চা নয়, বরং মন, শরীর এবং আত্মার এক সুষম সামঞ্জস্য।