আজকাল ওয়েবডেস্ক: স্তন্য বা স্তনদুগ্ধ সাধারণত নবজাতকের প্রথম ও প্রধান আহার হিসেবে পরিচিত। কিন্তু সাম্প্রতিক কালে বিশ্বজুড়ে এক অদ্ভুত এবং বিতর্কিত প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। সদ্যোজাত শিশুদের পাশাপাশি বড়রাও অর্থাৎ প্রাপ্তবয়স্করাও এখন স্তন্য এবং সেই দুগ্ধজাত খাবার খাচ্ছেন। বিষয়টি যেমন গবেষণার আলোয় এসেছে, তেমনই তৈরি হয়েছে নানা সামাজিক ও নৈতিক প্রশ্নও।
কেন প্রাপ্তবয়স্করা স্তন্যদুগ্ধ পান করছেন?
এই প্রবণতার পেছনে মূলত তিনটি প্রধান কারণ রয়েছে—
১. ইমিউন সিস্টেম বা রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর আশা
স্তন্যে থাকে ল্যাকটোফেরিন, ইমিউনোগ্লোবিউলিন ও গ্রোথ ফ্যাক্টর, যা শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতে সাহায্য করে। কিছু প্রাপ্তবয়স্ক বিশ্বাস করেন, এই উপাদানগুলি বড়দের শরীরেও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়ক হতে পারে। বিশেষ করে ক্যানসার, অটোইমিউন ডিজঅর্ডার কিংবা কোভিড-পরবর্তী দুর্বলতা প্রতিরোধে এই খাবার সাহায্য করে বলে মনে করেন তাঁরা।
২. ফিটনেস এবং বডি-বিল্ডিং
অনেক ফিটনেসপ্রেমী ও বডি বিল্ডার স্তন্যদুগ্ধকে প্রাকৃতিক প্রোটিন শেক বলে অভিহিত করছেন। তাঁদের বিশ্বাস, এতে প্রোটিন ও প্রাকৃতিক এনজাইম এমনভাবে মিশে থাকে যা শরীরের পেশি গঠনে দারুণ কাজ করে।
৩. বিকল্প থেরাপি
কিছু ক্যানসার রোগী স্তনদুগ্ধকে বিকল্প চিকিৎসা পদ্ধতি (অল্টারনেটিভ থেরাপি) হিসেবে মনে করছেন।
আর গোটা ঘটনায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এখন অনলাইনে স্তনদুগ্ধ কেনাবেচাও হচ্ছে। বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ব্রিটেন ও অস্ট্রেলিয়ায় স্তন্যদুগ্ধ ‘ডোনেশন’-এর পাশাপাশি ‘বিক্রি’র ট্রেন্ডও বেড়েছে।
বিজ্ঞান কী বলছে?
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) এবং ইউনিসেফ স্পষ্টভাবে জানিয়েছে, স্তন্যদুগ্ধ শুধু শিশুদের জন্য ব্যবহৃত হওয়া উচিত। এটি মা ও শিশুর একান্ত জৈবিক ও মানসিক সংযোগের বিষয়। প্রাপ্তবয়স্কদের দুধপানকে চিকিৎসাবিজ্ঞান মোটেও সমর্থন করে না। এমনকি, চিকিৎসকরা এও সতর্ক করছেন, অজানা উৎস থেকে কেনা স্তন্য পান করলে বিভিন্ন যৌন রোগ সংক্রমণের ঝুঁকি থাকে। ছড়াতে পারে এইচআইভি, হেপাটাইটিস বি এবং সি-এর মতো প্রাণঘাতী রোগও। শুধু চিকিৎসা বিজ্ঞান নয়, এই প্রবণতা ঘিরে নৈতিক ও সামাজিক বিতর্কও রয়েছে।
