আজকাল ওয়েবডেস্ক: গত ১২ জুন আহমেদাবাদ বিমানবন্দরের কাছে এয়ার ইন্ডিয়ার বোয়িং বিমান দুর্ঘটনার প্রাথমিক রিপোর্ট সদ্য প্রকাশিত হয়েছে। এরই মাঝে চাঞ্চল্যকর তথ্য পেশ করল দেশের বিমান চলাচল নিয়ন্ত্রক সংস্থা ডিরেক্টরেট জেনারেল অফ সিভিল অ্যাভিয়েশন (DGCA)। গত পাঁচ বছরে টেক অফের পর ৬৫টি ভারতীয় বিমানের ইঞ্জিন বন্ধ হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। অন্যদিকে, আপৎকালীন পরিস্থিতিতে গত ১৭ মাসে ১১টি ‘মে ডে কল’ করেছেন পাইলটরা। একটি আরটিআ-এর প্রেক্ষিতে এই তথ্য জানিয়েছে ডিজিসিএ। এই তথ্যে ১২ জুন আহমেদাবাদে এয়ার ইন্ডিয়ার লন্ডনগামী AI-171 বিমানের সাম্প্রতিক দুর্ঘটনা বা অন্য কোনও দেশীয় ইন্ডিগো বিমানের যাত্রাপথ পরিবর্তনের ঘটনার কথা উল্লেখ করা হয়নি।

বিমান দুর্ঘটনা তদন্ত ব্যুরো (AAIB)-র প্রাথমিক অনুসন্ধানে দেখা গিয়েছে যে ইঞ্জিনে জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ থাকার কারণে এআই বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনারটি ধ্বংস হয়েছিল। এই দুর্ঘটনা  ভারতীয় বিমান সংস্থাগুলির কারিগরি সমস্যার চিত্র আরও প্রকট করে তুলেছে। যদিও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে পাইলটরা এই ত্রুটিগুলি নিজেরাই সামলে নিয়েছেন। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন যে কিছু ত্রুটি নিয়ন্ত্রণের বাইরেও যেতে পারে।

আরও পড়ুন: জুনে মুদ্রাস্ফীতির হার কমে ২.১%, সাড়ে ছয় বছরে সর্বনিম্ন, আগস্টে ফের রেপ রেট কমাবে আরবিআই?

ডিজিসিএ-র আরটিআই-এর উত্তরে জানা গিয়েছে, উড়ানের পর এবং মাঝ আকাশে উভয় পর্যায়েই ইঞ্জিনের ত্রুটির খবর পাওয়া গিছে। বিমান চলাচল নিয়ন্ত্রক সংস্থা জানিয়েছে, "২০২০ থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত (এখনও পর্যন্ত) ভারত জুড়ে মোট ৬৫ বার বিমানে ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।“ ডিজিসিএ জানিয়েছে, ৬৫টি বিমানই সুরক্ষিত ভাবে অবতরণ করেছিল। 

ডিজিসিএ আরও জানিয়েছে, ১ জানুয়ারি ২০২৪ থেকে ৩১ মে, ২০২৫ পর্যন্ত, ভারতীয় আকাশসীমায় চলাচলকারী বিমানগুলি ১১টি মেডে কল করেছে। এর মধ্যে জরুরি অবতরণের জন্য প্রয়োজনীয় প্রযুক্তিগত সমস্যাও ছিল। এই বিমানগুলির মধ্যে চারটি হায়দ্রাবাদে অবতরণ করেছে। তথ্যে ১৯ জুন গুয়াহাটি থেকে চেন্নাইগামী ইন্ডিগোর বিমানটি বাদ দেওয়া হয়েছে। যানজটের কারণে এটি বেঙ্গালুরুতে রুট পরিবর্তন করা হয়েছিল এবং পরে অবতরণের ৩৫ কিলোমিটার দূরে জ্বালানি কম থাকার খবর পাওয়া গিয়েছে।

আরও পড়ুন: বিয়ের রাতে আচমকা মাথা ঘুরেছিল কনের, নতুন বর এর পর যা করলেন হতবাক দুই পরিবার

এয়ারলাইন পাইলটস অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্ডিয়ার সেক্রেটারি অনিল রাও বলেন, “বিমানে আগুন লাগা, ইঞ্জিনে বিকল হওয়া বা আসন্ন বিপদের মতো জরুরি পরিস্থিতির মুখোমুখি হলে, ফ্লাইট ক্রুরা MAYDAY কল শুরু করে, কারণ ফ্লাইট অব্যাহত রাখা অনিরাপদ হয়ে ওঠে, তাই তাৎক্ষণিক অবতরণ বা গ্রাউন্ডিং প্রয়োজন হয়।”

গত ১২ জুন আহমেদাবাদ থেকে উড়ে যাওয়ার কিছু সেকেন্ডের মধ্যেই ভয়াবহভাবে ভেঙে পড়ে এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইট AI 171। বিমানটি ছিল বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার। আজ, ভারতীয় বিমান দুর্ঘটনা তদন্ত ব্যুরো (Aircraft Accident Investigation Bureau বা AAIB) প্রকাশিত এক প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদনে চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে—টেক-অফের মুহূর্তে বিমানের দুইটি ইঞ্জিনই হঠাৎ করে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। দুর্ঘটনায় ২৬০ জনের মৃত্যু হয়েছে, যার মধ্যে ২৪১ জন ছিলেন যাত্রী। শুধু এক ব্রিটিশ নাগরিক আশ্চর্যজনকভাবে বেঁচে গিয়েছেন।