আজকাল ওয়েবডেস্ক: মুম্বই-আহমেদাবাদ জাতীয় মহাসড়কে বছরের পর বছর ধরে অবিরাম যানজটে ভোগান্তিতে ভুগছেন ভাসাই (পূর্ব)-এর বাসিন্দারা। প্রশানের কাছে সমাধানের জন্য বলেও লাভ হয়নি। এবার ভুক্তভোগী মানুষেরা এক চমকভরা প্রতিবাদের আশ্রয় নিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে আত্মহত্যার অনুমতি চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছেন। প্রথম দিনেই শতাধিক চিঠি পোস্ট করা হয়েছে, যা স্থানীয়দের মধ্যে ক্রমবর্ধমান ক্ষোভ এবং হতাশার প্রতিফলন।
বৃহস্পতিবার সকালে, প্রধানমন্ত্রীর কাছে তাঁদের চিঠি পাঠানোর জন্য সাসুনঘর ডাকঘরে বিশাল সংখ্যক লোক জড়ো হয়েছিলেন। চিঠিগুলিকে "হতাশার কান্না" হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে। চিঠিগুলিতে ক্রমবর্ধমান ট্র্যাফিক পরিস্থিতির সুরাহায় কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপের দাবি করা হয়েছে।
ভাসাই-য়ের বাসিন্দারা জোর দিয়ে বলছেন যে, সরকার যদি সত্যিই তাদের জীবন রক্ষা করতে চায়, তাহলে প্রথমে পরিষেবা সড়কগুলিকে সম্পূর্ণ করতে হবে এবং হাইওয়েতে ট্র্যাফিক নিয়ন্ত্রণ জোরদার করতে হবে।
মুম্বই-আহমেদাবাদ জাতীয় মহাসড়ক- সাসুনঘর, মালজিপাড়া, সাসুনপাড়া, বোবাটপাড়া এবং পাথরপাড়ার মতো এলাকার মধ্যে পড়ে। এই রাস্তায় যানজট, হাজার হাজার যাত্রীর জন্য নিত্যদিনের দুঃস্বপ্ন হয়ে উঠেছে। স্থানীয়রা বলছেন যে, প্রায় প্রতিদিন বেড়ে চলা গর্ত, অনিয়ন্ত্রিত যানজট এবং বেহাল রাস্তা তাদের দৈনন্দিন যাতায়াতকে এক কঠিন পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দিয়েছে।
থানে, কাশিমিরা, ভাসাই এবং নাইগাঁওতে খাবার, চিকিৎসা এবং শিক্ষা-সহ জরুরি প্রয়োজনের জন্য বাসিন্দারা এই মহাসড়কের উপর নির্ভর করেন। তবে, ক্রমাগত যানজটের কারণে দৈনন্দিন জীবন কার্যত থমকে পড়ছে।
গ্রামবাসীরা বলছেন যে, জাতীয় মহাসড় মেরামতি ও যানজট কমানোর জন্য তারা বারবার কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছেন এবং বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। কিন্তু তাদের সমস্যা কমাতে কোনও কার্যকর পদক্ষেপ করা হয়নি। একজন নাগরিক বলেন, "আমরা আমাদের চিঠিতে লিখেছি কেন আমরা আত্মহত্যা করে মরতে বাধ্য হচ্ছি। কর্মকর্তারা আমাদের অভিযোগ উপেক্ষা করেন, কেউ রাস্তা পরিদর্শন করেন না এবং আমাদের সমস্ত প্রতিবাদ শোনা হয় না। এখন আমাদের কী করা উচিত? সরকার যদি আমাদের দেখভাল না করে, তাহলে আমাদের মরতেই হবে, তারই অনুমতি চাওয়া হয়েছে।" ভুক্তভোগী অন্য একজনের কতায়, "২০১৪ সাল থেকে, আমরা এই যানজটের সঙ্গেই দিন কাটাচ্ছি।"
ভূমিপুত্র ফাউন্ডেশনের সভাপতি সুশান্ত পাতিল বলেন, "ভারসোভা সেতু মেরামত থেকে শুরু করে নতুন ভারসোভা সেতু, কংক্রিটের রাস্তা এবং গাইমুখ ঘাটের কাজ, প্রকল্পগুলি শুরু হতে থাকে, কিন্তু ট্র্যাফিক ব্যবস্থাপনা কখনই সঠিকভাবে পরিচালিত হয় না। গ্রামবাসীরা প্রতিদিনই ভোগান্তির শিকার হন।"
ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার মহিলারা, শিশুদের নিরাপত্তা এবং শিক্ষা নিয়ে বিশেষ উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। একজন বাসিন্দা বলেন, "যানজটের কারণে, আমরা আমাদের বাচ্চাদের সময়মতো স্কুলে পাঠাতে পারি না। এখন আমরা নিজেদেরকে প্রশ্ন খরি যে, আমাদের কি বাচ্চাদের স্কুলে পাঠানো উচিত?"
