আজকাল ওয়েবডেস্ক: গুরু পূর্ণিমায় শিক্ষক, গুরুদের বিশেষভাবে শ্রদ্ধা নিবেদন করে শিক্ষার্থীরা। আর সেদিনই ভয়ঙ্কর পরিণতি হল এক স্কুলের প্রিন্সিপালের। স্কুলের মধ্যে তাঁকে কুপিয়ে খুন করা হল। অভিযোগ ওই স্কুলের চার ছাত্রের বিরুদ্ধে। তারা প্রত্যেকেই নাবালক। প্রিন্সিপাল খুনের কিনারা কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তার করা হয়েছে অভিযুক্ত চার নাবালক ছাত্রকে।
নিত্যদিনের মতো গুরু পূর্ণিমায় স্কুলে এসেছিল ওই চার পড়ুয়া। তবে সেদিন পড়াশোনায় মন ছিল না। আগে থেকেই খুনের পরিকল্পনা ছিল। সেদিনও সামান্য বকাঝকা করেছিলেন স্কুলের প্রিন্সিপাল। কারণ? ওই চার ছাত্র স্কুলের পরিবেশ নষ্ট করছিল। স্কুলের নিয়ম ভাঙার অভিযোগ তাই তাদের বকুনি দিয়েছিলেন প্রিন্সিপাল। তার জেরেই শেষমেশ প্রাণ ৫০ বছরের প্রৌঢ়ের।
স্কুলের মধ্যে ধারালো ছুরি দিয়ে একাধিকবার প্রিন্সিপালকে কোপায় তারা। রক্তাক্ত অবস্থায় প্রিন্সিপাল লুটিয়ে পড়তেই পালিয়ে যায়। কয়েক কিলোমিটার দূরে পালিয়ে গেলেও শেষরক্ষা হয়নি। বাস স্ট্যান্ডের সামনেই চার নাবালককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। উদ্ধার করেছে খুনে ব্যবহৃত অস্ত্রটিও।
আরও পড়ুন: শ্মশানের মধ্যেই যৌনতা! অর্ধনগ্ন অবস্থায় হাতেনাতে ধরা পড়লেন বিজেপি নেতা, তারপর?
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে হরিয়ানার হিসারে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত স্কুল প্রিন্সিপালের নামে জগবীর সিং (৫০)। তিনি হিসারে বাস বাদশাহপুরের কার্টার মেমোরিয়াল সিনিয়র সেকেন্ডারি স্কুলের প্রিন্সিপাল ছিলেন। গুরু পূর্ণিমায় স্কুলের মধ্যে তাঁকে কুপিয়ে খুন করে স্কুলেরই চারজন ছাত্র।
তদন্তে জানা গেছে, ওই চারজন নাবালক ছাত্র মাদকাসক্ত হয়ে পড়েছিল। স্কুলের মধ্যে ড্রাগ নিয়ে নেশা করত। কয়েকজন সহপাঠী সেটি জানিয়ে দিয়েছিল প্রিন্সিপালকে। এ থেকেই শুরু ঝামেলা। মাদক নিয়ে স্কুলে আসার জন্য ওই পড়ুয়াদের বাকি সহপাঠীদের সামনে ব্যাপক বকাঝকা করেছিলেন প্রিন্সিপাল। শুধু তাইই নয়। চার ছাত্রের চুলের স্টাইল, পোশাক এবং চালচলন নিয়েও আপত্তি উঠেছিল। চুলের স্টাইল দ্রুত বদলে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রিন্সিপাল। সহপাঠীদের সামনে বকাঝকার জন্য মনে মনে ক্ষোভ পুষে রেখেছিল চারজনেই।

ঘটনার দিনেও স্কুলের নিয়ম ভেঙে আবারও ব্যাগের মধ্যে মাদক আনার জন্য বকা দেন প্রিন্সিপাল জগবীর। পুলিশ জানিয়েছে, চারজনের মধ্যে দু'জন পড়ুয়া জগবীরের গ্রামের বাসিন্দা ছিল। তারাই খুনের পরিকল্পনা এবং অস্ত্র জোগাড় করে এনেছিল। বাকি দু'জন কুপিয়ে খুন করে সেই অস্ত্র দিয়ে।
খুনের পর একটি বাইক চুরি করে, দূরের একটি গ্রামে পালিয়ে যায়। সেখান থেকে পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করেছে। এফআইআরে বাইক চুরির ঘটনাটি নথিভুক্ত হয়েছে। তদন্তে জানা গেছে, ওই নাবালক পড়ুয়ারা ১০ লক্ষ টাকা চেয়েছিল। সম্ভবত সোশ্যাল মিডিয়া মারফত কোনও ক্রিমিনাল গ্যাংয়ের সঙ্গে যুক্ত ছিল তারা। খুনের পরিকল্পনাটি সেই গ্যাংয়ের তরফেই করা হয়েছিল। পরিকল্পনামাফিক স্কুলের মধ্যেই প্রিন্সিপালকে খুন করে তারা।
পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে চার পড়ুয়াই খুনের ঘটনাটি স্বীকার করে নিয়েছে। এও জানিয়ে, স্কুলে মাদক আনার জন্য এবং চুলের স্টাইল নিয়ে সহপাঠীদের সামনে বকাঝকার জন্য ক্ষোভ পুষে রেখেছিল তারা। সুযোগ বুঝে স্কুলের মধ্যেই খুনের ঘটনাটি ঘটায়। এরপর জানাজানি হতেই পালিয়ে যায়। ঘটনার মামলা রুজু করে তদন্ত জারি রেখেছে পুলিশ।
