আজকাল ওয়েবডেস্ক: সেনার দাবি উড়িয়ে দিলেন অমৃতসরের স্বর্ণমন্দিরের গ্রন্থী গিয়ানি রঘবীর সিং। সাফ জানিয়ে দিলেন, তাঁর সঙ্গে সেনার তরফে কেউ যোগাযোগ করেননি। এমনকি স্বর্ণমন্দিরে সমরাস্ত্র রাখা নিয়েও কোনও কথাও হয়নি। সেনার দাবি 'প্ররোচনামূলক' বলে দাবি করেছেন তিনি।
কী বলেছেন গ্রন্থী গিয়ানি রঘবীর সিং?
সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস-এর প্রতিবেদন অনুসারে সেনার দাবির প্রেক্ষিতে স্বর্ণমন্দিরের গ্রন্থী গিয়ানি রঘবীর সিং বলেছেন, "২৪ এপ্রিল থেকে ১৪ মে পর্যন্ত আমি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ছুটিতে ছিলাম। সেই সময়ের মধ্যেই ঘটনার শুরু ও শেষ হয়ে গিয়েছিল। কোনও সেনা আধিকারিক আমার সঙ্গে ওই সময়কালে যোগাযোগ করেননি। কোনও সমরাস্ত্র মোতায়েনের বিষয়েও যোগাযোগ করা হয়নি, শ্রী দরবার সাহেবে এমন কোনও ঘটনা ঘটেনি।"
প্রধান গ্রন্থি শিরোমণি গুরুদ্বার প্রবন্ধক কমিটি (এসজিপিসি) সেনাবাহিনীর দাবি তদন্ত করার এবং যদি কোনও এসজিপিসি সদস্য এই বিষয়ে জড়িত থাকে তবে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
তবে, অমৃতসরের সংবাদমাধ্যমে এক সাক্ষাৎকারে, প্রাক্তন অকাল তখৎ জাতেদার গিয়ানি রঘবীর সিং স্বীকার করেছেন যে- "শ্রী হরমন্দর সাহেবে ব্ল্যাকআউট বাস্তবায়নে এসজিপিসি সরকারের সঙ্গে সহযোগিতা করেছে।" কিন্তু তিনি দাবি করেছেন যে, বায়ুসেনা আধিকারিক ল্যাফটেন্যান্ট সুমের ইভান ডিকুনহার ঘোষণা "আশ্চর্যজনকভাবে অসত্য।"
অতিরিক্ত প্রধান গ্রন্থি গিয়ানি অমরজিৎ সিং-এর মাধ্যমে এসজিপিসি একটি সরকারি বিবৃতিও জারি করেছে। গিয়ানি রঘবীর সিং-এর অনুপস্থিতিতে স্বর্ণমন্দিরের দায়িত্বে ছিলেন। তিনি স্পষ্ট করে বলেছেন যে, স্বর্ণমন্দিরের তরফে বাইরের আলো বন্ধ করে জেলা প্রশাসনের ব্ল্যাকআউট সিদ্ধান্তে সহযোগিতা করা হয়েছিল। কিন্তু, ধর্মীয় আচরণবিধি পালনে কোনও ত্রুটি ছিল না। মন্দিরের ভিতরে আলো জ্বলছিল। সেনাবাহিনীকে কোনও অনুমতি দেওয়ার কথা অস্বীকার করেছেন গিয়ানি অমরজিৎ সিং। নিশ্চিৎ করেছেন যে, স্বর্ণমন্দিরে কোনও সমরাস্ত্র মোতায়েন ছিল না।
এসজিপিসি সভাপতি হরজিন্দর সিং ধামি এই বিষয়টিকে সমর্থন করে বলেন, "কোনও সেনা অধিকারিক আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেননি এবং মন্দিরে কোনও বিমান ক্ষেপনাস্ত্ররোধী বন্দুকও বসাতে দেওয়া হয়নি।" তাঁর দাবি, ব্ল্যাকআউটের সময়ও ভক্তরা তাদের স্বেচ্ছা সেবা অব্যাহত রেখেছিলেন।"
সেনার ঘোষণা-
পাক বাহিনীর ড্রোন হামলা থেকে অমৃতসরের স্বর্ণমন্দিরকে রক্ষা করতে এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম বসানোর অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। সোমবার এই তথ্য জানান বায়ুসেনা আধিকারিক ল্যাফটেন্যান্ট সুমের ইভান ডিকুনহা।
সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সোমবার বায়ুসেনা আধিকারিক ল্যাফটেন্যান্ট ডিকুনহা বলেছিলেন, "স্বর্ণমন্দির কর্তৃপক্ষের এই পদক্ষেপ নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবি রাখে। পাক হামলা রুখতে স্বর্ণমন্দিরের কর্তৃপক্ষের তরফে আমাদের অনুমতি দেওয়া হয় ওই চত্বরে এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম ও প্রয়োজনীয় সমরাস্ত্র মজুত রাখার। শুধু তাই নয়, স্বর্ণমন্দিরের ইতিহাসে বোধহয় প্রথমবার মন্দিরের সমস্ত আলো নিভিয়ে দেওয়া হয় যাতে হামলা চালাতে আসা ড্রোনগুলি আমরা দেখতে পাই।"
ডিকুনহা-র দাবি করেছিলেন, "স্বর্ণমন্দিরে যে হামলা হতে পারে এমন সম্ভাবনার কথা আমাদের তরফে জানানো হয়েছিল মন্দির কর্তৃপক্ষকে। এখানে প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ পুণ্যার্থী এখানে আসেন। তাঁদের নিরাপত্তার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন এই তীর্থস্থান রক্ষা করতে প্রয়োজনীয় সমস্ত পদক্ষেপ করার অনুমতি দেওয়া হয় মন্দির কর্তৃপক্ষের তরফে।"
