আজকাল ওয়েবডেস্ক: বন্ধ ঘর থেকে উদ্ধার এক পরিবারের পাঁচ সদস্যের মৃতদেহ। এক দম্পতি ও তাদের তিন খুদে সন্তানের নিথর দেহকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে এলাকায়। দিল্লির সেই বুরারিকাণ্ডের ছায়া এবার খাস নরেন্দ্র মোদির রাজ্যে। গুজরাটে এক পরিবারের পাঁচ সদস্যের রহস্যমৃত্যুকে ঘিরে শুরু হয়েছে তদন্ত।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে গুজরাটের আহমেদাবাদের বাগোদারায়। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতেরা হলেন বিপুল ভাগেলা ও সোনাল ভাগেলা এবং তাঁদের ১১ ও পাঁচ বছরের দুই কন্যাসন্তান ও আট বছরের এক পুত্রসন্তান। রবিবার সকালে একটি ভাড়া বাড়ি থেকে পাঁচজনের দেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
এদিন সকালে প্রতিবেশীরাই পুলিশে প্রথম খবর দেন। ঘটনাস্থলে তড়িঘড়ি পৌঁছয় পুলিশ বাহিনী, অ্যাম্বুল্যান্স। দুটি ঘর থেকে পাঁচজনের দেহ উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকেরা পাঁচজনকেই মৃত বলে ঘোষণা করেন। দেহগুলি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, দুই কন্যাসন্তান ও এক পুত্রসন্তানকে খুন করে দম্পতি আত্মঘাতী হয়েছে।
এদিকে মৃত দম্পতির পরিবার পুলিশকে জানিয়েছে, তাঁরা আদতে ঢোলকার বাসিন্দা ছিলেন। কিন্তু কয়েক মাস আগে বাগোদারায় একটি ভাড়া বাড়িতে বসবাস করছিলেন। বিপুল পেশায় অটোরিকশা চালক ছিলেন। পরিবারে তিনি একাই উপার্জন করতেন। সংসার চালাতে রীতিমতো হিমশিম খেতেন। আর্থিক অনটনের কারণেই হয়তো চরম পদক্ষেপ করেছেন।
পরিবারের তরফে আরও জানা গেছে, কয়েক মাস আগে বিপুল ঋণ নিয়ে একটি অটোরিকশা কিনেছিলেন। সেটির ধাঋণ শোধ করতে পারছিলেন না। একদিকে সংসারের চাপ, অন্যদিকে ঋণের বোঝা। সবমিলিয়ে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন তিনি। তিন সন্তানকে বড় করে তোলার মতো আর্থিক সামর্থ্য ছিল না তাঁর। ঋণের কারণেই আত্মঘাতী হয়েছেন বলে অনুমান পরিবারের।
পুলিশ জানিয়েছে, এই ঘটনায় একটি মামলা রুজু করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলে তবেই মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট হবে। ঋণ শোধ করার জন্য কেউ চাপ সৃষ্টি করতেন কিনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আত্মহত্যায় কেউ বা কারা প্ররোচনা দিয়েছিল কিনা, তাও তদন্তের আওতায় রয়েছে। পরিবারের সদস্যদের ও প্রতিবেশীদের জিজ্ঞাসাবাদ করে তদন্ত জারি রয়েছে।
প্রসঙ্গত, গুজরাটের এই ঘটনায় ফের মনে করিয়ে দিচ্ছে দিল্লির বুরারি হত্যাকাণ্ড। সালটা ২০১৮। উত্তর দিল্লির বুরারির মৃত্যুরহস্য ঘিরে তোলপাড় গোটা দেশ। একই পরিবারের ১১ জনের রহস্যমৃত্যু ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছিল। রহস্যমৃত্যুর পর দিনই ময়নাতদন্তে জানা যায়, তাঁদের মধ্যে অন্তত ছ'জনের মৃ্ত্যু হয়েছে গলায় দড়ি দেওয়ার কারণে। যদিও এই রহস্যের কিনারা করা যায়নি।
একটু মনে করা যাক সেই শিউড়ে ওঠা ঘটনা। একটি ছাড়া ওই পরিবারের বাকি ১০টি মৃতদেহ ঝুলছিল ছাদ থেক। চোখ, মুখ, হাত বাঁধা অবস্থায় মৃতদেহগুলি উদ্ধার করে পুলিশ। পরিবাররের সবথেকে বয়স্ক সদস্য ৭৭ বছরের নারায়ণ দেবীর দেহ উদ্ধার হয় মেঝে থেকে। সে সময় প্রশ্ন ওঠে এটি কি কোনও গণ আত্মহত্যা নাকি খুন?
