আজকাল ওয়েবডেস্ক: হরিয়ানার মেয়ে। ট্রাভেল ভ্লগ বানাতেন ঘুরে ঘুরে। আর তথ্য পাচার করতেন পাকিস্তানে। এককথায় ইউটিউবার থেকে পাকিস্তানের গুপ্তচর। জ্যোতি মালহোত্রার কাহিনী আধুনিক যুদ্ধশাস্ত্রের সংজ্ঞাই পাল্টে দিচ্ছে। শুক্রবার গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে জ্যোতিকে। তাঁকে পাঁচ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তারপর থেকেই নজরে জ্যোতি। দিনে দিনে সামনে উঠে এসেছে তাঁর কীর্তিকলাপ। নজর পরিবারের দিকেও।
প্রশ্ন, তাঁর পরিবার কি জানত সত্যি? বাবা কি মদত দিয়েছিলেন মেয়েকে পড়শি দেশের গুপ্তচরবৃত্তিতে? যে দেশ বারবার বিপদে ফেলেছে নিজেদের দেশকে? এসব প্রশ্নের মাঝেই সামনে এসেছে জ্যোতির বাবার বক্তব্য। সর্বভারতীয় সংবাদ সংস্থায় জ্যোতির বাবা জানিয়েছেন, মেয়ে যে পাকিস্তানে যাচ্ছেন, ঘূণাক্ষরেও জানতেন না তিনি।
তাহলে? মেয়ে ট্রাভেল ব্লগ বানানোর নামে কোথায় যেতেন? আর বাড়িতে বলে যেতেন কী? সর্বভারতীয় ওই সংবাদ সংস্থা জানাচ্ছে, জ্যোতির বাবা জানিয়েছেন, মেয়ে বাড়িতে বলে যেতেন ‘দিল্লি যাচ্ছি’। জ্যোতির বাবা হরিশ মালহোত্রা দাবি করেছেন, তিনি জানতেনই না মেয়ের ইউটিউব চ্যানেলের বিষয়ে। যদিও সর্বভারতীয় সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর, এর আগে হরিশ একবার জানিয়েছিলেন, মেয়ে ভিডিও করার জন্য পাকিস্তানে গিয়েছিলেন। সেই বক্তব্য থেকে একেবারে উল্টো পথে গিয়ে এখন তাঁর দাবি মেয়ে নাকি ভিডিও করতেন বাড়িতেই।
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, পহেলগাঁও হামলা এবং অপারেশন সিঁদুরের সময় নিউ দিল্লিতে পাকিস্তান হাই কমিশনের আধিকারিক দানিশের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছিলেন জ্যোতি। বারবার তাঁর পাকিস্তান ভ্রমণ তাঁকে সন্দেহের তালিকায় ফেলে দেয়। তদন্তের অংশ হিসেবে পুলিশ তাঁর ফোন এবং অন্যান্য গ্যাজেটগুলিও বাজেয়াপ্ত করেছে। গত বছরের মার্চ মাসে, তিনি পাকিস্তানি দূতাবাসে গিয়ে একটি ভিডিও আপলোড করেছিলেন।
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার হওয়ার কারণে পাকিস্তানের এজেন্টরা জ্যোতিকে দিয়ে প্রচারমূলক ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য এজেন্টরা এই সব ভিডিও রেকর্ড করত। সেই সব ভিডিওতে রয়েছে আটারি-ওয়াঘা বর্ডার পেরনো, লাহোরের আনারকলি বাজার, বাসযাত্রা ইত্যাদি। এমনকি পাকিস্তানের সবচেয়ে বড় হিন্দু মন্দির কাটাস রাজ মন্দিরের ভিডিও রয়েছে। ইনস্টাগ্রামের একটি ছবিতে ঊর্দুতে লেখা রয়েছে ‘ইশক লাহোর’। সে দেশের খাবার এবং দুই দেশের সংস্কৃতির পার্থক্যের ভিডিও শেয়ার করেছিলেন জ্যোতি। তিনি গত বছরও কাশ্মীর সফর করেছিলেন। যেখানে তাঁকে ডাল লেকে শিকারা ভ্রমণ উপভোগ করতে দেখা গিয়েছে।
