আজকাল ওয়েবডেস্ক: বিকৃত ইতিহাস তুলে ধরে বিতর্ক বাড়ালেন কর্নাটকের সমাজকল্যাণ ও মহীশুরু জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী এইচসি মহাদেবপ্পা। তাঁর দাবি, শ্রীরঙ্গপত্তনে টিপু সুলতান কৃষ্ণ রাজা সাগর (কেআরএস) বাঁধের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন! তবে ইতিহাসবিদদের মতে, মহীশূর রাজপরিবারের নলওয়াড়ি কৃষ্ণরাজ ওদেয়ারই কৃষ্ণ রাজা সাগর (কেআরএস) বাঁধের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন। ১৯১১ সালে এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছিল।

কংগ্রেস নেতা তথা রাজ্যের মন্ত্রী এইচসি মহাদেবপ্পার মন্তব্যে শোরগোল পড়েছে। হাত শিবিরকে নিশানা করেছে পদ্ম বাহিনী। বিজেপি নেতা সিটি রবি এই দাবির জন্য কংগ্রেসের মহাদেবপ্পার তীব্র সমালোচনা করেছেন। এক্স পোস্টে তিনি বলেছেন, "আজ, কংগ্রেস নেতারা বলছেন টিপু কেআরএসের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন। এই ভাবে বলতে থাকলে তাঁরা একদিন বলতেই পারেন যে- টিপুর বাবা হায়দার আলী কর্নাটকের রাজ্য সঙ্গীত লিখেছিলেন। তখন এতে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।"

কটাক্ষ করে রবি আরও বলেন, "দেখে মনে হচ্ছে দিল্লি থেকে রাজ্যের বিভিন্ন গ্রাম পর্যন্ত কংগ্রেস নেতাদের কোনও পাগলা কুকুর কামড়েছে।"

মান্ড্যা জেলার শ্রীরঙ্গপত্তন তালুকের কান্নামবাডি গ্রামের কাছে কাবেরী নদীর ওপারে এই বাঁধটি নির্মিত।

মন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায়, ওডেয়ার রাজবংশের বংশধর, মহীশূর-কোডাগুর সাংসদ যদুবীর কৃষ্ণদত্ত চামরাজ ওয়াদিয়ার এটিকে "হাস্যকর" এবং "ভিত্তিহীন" বলে উড়িয়ে দিয়েছেন।

সংবাদ প্রতিবেদনে যদুবীর কৃষ্ণদত্ত চামরাজ ওয়াদিয়াকে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, "এটি একটি হাস্যকর বক্তব্য এবং এর কোনও প্রমাণ কোথাও নেই। কেআরএস বাঁধকে তৈরি করেছিলেন তা সকলেই জানেন। শিক্ষক এবং বিশেষজ্ঞরা এই বিষয়ে তথ্য প্রদান করেন। আমি এই গল্পটি কোথাও কখনও শুনিনি।"

আরও পড়ুন ঈশ্বরের সঙ্গে দেখা করতে আত্মত্যাগ, সুইসাইড নোট লিখে বহুতল থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মঘাতী মহিলা

টিপু সুলতান- রেশম চাষকে উৎসাহিত করতে পারেন তা স্বীকার করে ওয়াদিয়ার বলেন, "একটি ভাল কাজ তার ১০০টি অপরাধ, যেমন গর্ভবতী মহিলা সহ মান্ড্যা আয়েঙ্গারদের গণহত্যা মুছে ফেলতে পারে না। ভোটের রাজনীতির জন্য ইতিহাসের অপব্যবহার করা উচিত নয়। ইতিহাসের সঙ্গে প্রমাণ থাকা উচিত। রাজনীতিবিদদের ইতিহাস নিয়ে কথা না বললেই ভাল।"

উল্লেখ্য, টিপু সুলতানের (বা ফতে আলি সাহাব টিপু) জন্ম ১৭৫৯০ সালের ২০ নভেম্বর, মৃত্যু ১৭৯৯ সালের ৪ মে। টিপু ছিলেন ব্রিটিশ ভারতের মহীশূর রাজ্যের শাসনকর্তা। ইংরেজদের বিরুদ্ধে তিনি যুদ্ধ করেছিলেন। তিনি তাঁর শৌর্যবীর্যের কারণে শের-ই-মহীশূর (মহীশূরের বাঘ) নামে পরিচিত ছিলেন। তিনি তাঁর শাসনকালে বেশ কয়েকটি প্রশাসনিক ব্যবস্থা চালু করেছিলেন। যেমন- নতুন মুদ্রা ব্যবস্থা এবং ক্যালেন্ডার-সহ নতুন ভূমি রাজস্ব ব্যবস্থা। যা মহীশূরের রেশম শিল্পের বিকাশের সূচনা করেছিল।