আজকাল ওয়েবডেস্ক: জামাই আদরেই সাড়ে সর্বনাশ। ভেবেছিলেন, স্ত্রী, শ্বশুর সবাই বোকাসোকা। কিছুই টের পাবেন না। কিন্তু বিয়ের কিছুদিনের মধ্যেই জামাইয়ের কেচ্ছা ফাঁস। এমনই কীর্তি তিনি ঘটিয়েছেন, যা ঘিরে রাগের মাথায় চরম পদক্ষেপ করল শ্বশুর। জামাইয়ের মুণ্ডু কেটে নৃশংস হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ শ্বশুরের বিরুদ্ধে।
জানা গেছে, প্রৌঢ়ের বড় মেয়ের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল যুবকের। কিন্তু বিয়ের পর শ্যালিকার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়ে তাঁর। শ্বশুরবাড়িতে নানা অজুহাতে যেতেন যুবক। স্ত্রী নয়, শ্যালিকার সঙ্গে দিনের বেশিরভাগ সময় কাটাতেন। ক্রমেই জামাইবাবু ও শ্যালিকার মধ্য বন্ধুত্ব গাঢ় হয়ে ওঠে। যা প্রেমের সম্পর্কেও গড়ায়। প্রেম থেকে শ্যালিকার সঙ্গে উদ্দাম যৌনতায় মেতে ওঠেন তিনি। বিষয়টি আর লুকোনো যায়নি। কিছুদিনের মধ্যেই জামাই ও ছোট মেয়ের প্রেমের কাহিনি জানতে পারে শ্বশুর। শ্বশুরবাড়িতে জানাজানি হতেই জামাইকে খুনের পরিকল্পনা করে প্রৌঢ়।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে অন্ধ্রপ্রদেশে। পুলিশ জানিয়েছে, ২০ বছর আগে ভেঙ্কাটারামানাপ্পার বড় মেয়ে শ্যামলার সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল বিশ্বনাথ নামের এক যুবকের। যুবক ধর্মভরমের বাসিন্দা ছিলেন। বিয়ের পর শ্যামলার ছোট বোনের সঙ্গে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন বিশ্বনাথ। দু'জনের প্রেম, ভালবাসা ক্রমেই টের পান শ্যামলা। একদিন হাতেনাতে দু'জনকে ধরে ফেলেন ভেঙ্কাটারামানাপ্পা। এরপরই শুরু ঝামেলা।
শ্বশুরবাড়িতে তীব্র ঝামেলা শুরু হয়। একদিকে বিশ্বনাথ ও শ্যামলার, অন্যদিকে ভেঙ্কাটারামানাপ্পা ও তার স্ত্রীর। তীব্র অশান্তির মধ্যেই শ্যালিকা ও শাশুড়িকে নিয়ে পালিয়ে যান বিশ্বনাথ। ধর্বভরম ছেড়ে ৭৮ কিলোমিটার দূরে একটি গ্রামে তাঁরা তিনজনে চলে যান। সেখানে যাওয়ার পর শাশুড়ির জমি বিক্রি করে দেওয়ার পরিকল্পনা করেন বিশ্বনাথ। সেই জমি বিক্রি করে নতুন করে ভিন শহরে বাড়ি বানানোর পরিকল্পনা ছিল তাঁর। এই ঘটনাটি জানতে পেরে ভেঙ্কাটারামানাপ্পা আরও ক্ষেপে যায়। 'পথের কাঁটা' জামাইকে দুনিয়া থেকে সরাতে খুনের পরিকল্পনা করে।

জামাইকে খুনের জন্য এক বন্ধুর পরামর্শ নেয় সে। চার লক্ষ টাকা দেয় জামাইকে খুনের জন্য। হঠাৎ একদিন বিশ্বনাথকে ৫০ হাজার টাকায় নতুন জমি বিক্রির অজুহাতে নির্জন এলাকায় নিয়ে যায় শ্বশুরের বন্ধু। সেখানে তাঁর মুণ্ডু কেটে খুন করা হয়। খুনের পর দেহটি মাটিতে পুঁতে পালিয়ে যায় সকলে। তবে বিষয়টি ধামাচাপা পড়ে ছিল না।
পুলিশ জানিয়েছে, ৩ জুলাই খুনের ঘটনাটি ঘটে। শ্যালিকা থানায় জামাইবাবুর নিখোঁজের অভিযোগ জানান। সেই ভিত্তিতে তল্লাশি অভিযান চালায় পুলিশ। শ্বশুরের ফোনের লোকেশন ট্র্যাক করে পুলিশ। সেদিন সেই জায়গায় শ্বশুর উপস্থিত ছিল বলে জানতে পারে তারা। দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদের পর খুনের ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসে।
প্রৌঢ় স্বীকার করে নিয়েছে, বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক এবং জমি সংক্রান্ত বিবাদকে কেন্দ্র করে জামাইকে খুন করেছে সে। এক বন্ধুকে খুনের জন্য চার লক্ষ টাকা দিয়েছিল। এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে শ্বশুর সহ মোট পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে ঘটনার তদন্ত জারি রেখেছে পুলিশ। ভারতীয় ন্যায় সংহিতার একাধিক ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে।
