আজকাল ওয়েবডেস্ক: রোগা ছিপছিপে চেহারা বানাতে নির্মম নির্যাতনের শিকার এক গৃহবধূ। তাঁর অভিযোগ, ঘণ্টার পর ঘণ্টা শরীরচর্চা করার জন্য বাধ্য করেন স্বামী। শরীরচর্চা না করলেও, খাবার খেতেও দিতেন না স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা। কিন্তু এমন চরম শারীরিক নির্যাতনের কারণ কী? 

 

গৃহবধূর অভিযোগ, তাঁর স্বামীর ইচ্ছে বলিউড অভিনেত্রীদের মতোই স্ত্রীর ফিগার হবে। বিশেষত অভিনেত্রী নোহা ফতেহির ফিগার তাঁর সবচেয়ে পছন্দ। নোরার মতো লাস্যময়ী শরীরের জন্যেই স্ত্রীকে টানা কয়েক ঘণ্টা শরীরচর্চা করতে জোর করেন স্বামী। 

 

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদে। ওই গৃহবধূর আরও অভিযোগ, তাঁর স্বামী মহিলাদের প্রতি আসক্ত। একাধিক মহিলার সঙ্গ পছন্দ করেন। প্রায়ই ফোনে নীল ছবি দেখেন।‌ মহিলাদের অশ্লীল ছবি, ভিডিও দেখার অভ্যাস রয়েছে তাঁর। 

 

শুধুমাত্র শরীরচর্চা নয়, সরু কোমরের জন্য গর্ভপাত করান শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা। গৃহবধূকে না জানিয়েই ভ্রুণ নষ্ট করার ওষুধ খাইয়ে দেন। এমন কিছু খাবার খাওয়ান, যার জেরে তাঁর গর্ভপাত হয়। গর্ভবতী হওয়ার পরেও দিনে তিন ঘণ্টা করে শরীরচর্চা করতে জোর করতেন স্বামী। 

 

আরও পড়ুন: ২৪ ঘণ্টায় সোনার দামে এত বড় চমক! আজ কেনার আগে কলকাতায় কত দর জেনে নিন

 

জানা গেছে, গত ৬ মার্চ সানু ও শিবমের দেখাশোনা করে বিয়ে হয়। বিয়েতে সানুর পরিবার প্রায় ৭৭ লক্ষ টাকা খরচ করেছিল। এমনকী পণ হিসেবে ১৬ লক্ষ টাকার সোনার গয়না, ২৪ লক্ষ টাকার স্করপিও গাড়ি, নগদ ১০ লক্ষ টাকা দিয়েছে শিবমের পরিবারকে। 

 

২৬ বছর বয়সি সানু জানিয়েছেন, বিয়ের পর তাঁর জীবনের নতুন অধ্যায় শুরু হওয়ায় খুব খুশি ছিলেন। কিন্তু বিয়ের কয়েক সপ্তাহ পরেই দুঃস্বপ্নের মতো অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হন তিনি। স্বামীর সঙ্গে বাইরে বেরোতে দিতেন না শাশুড়ি। সারাদিন বাড়ির কাজেই তাঁকে ব্যস্ত রাখতেন। এমনকী স্বামীর সঙ্গে বাড়িতেও সময় কাটাতে দিতেন না। 

 

শিবম একটি সরকারি স্কুলের ফিজিক্যাল এডুকেশন বিভাগের শিক্ষক। বাড়ির ছোটখাটো বিষয় নিয়ে অকথ্য গালিগালাজ করতেন সানুকে। এমনকী পরিবারের সামনেই তাঁকে মারধর করতেন। গৃহবধূ জানিয়েছেন, শিবমের আশা ছিল নোরা ফতেহির মতো লাস্যময়ী কোনও তরুণী তাঁর জীবনসঙ্গী হবেন। একাধিকবার এও বলেছিলেন, এই বিয়ে করে তিনি পস্তাচ্ছেন। 

 

সানু জানিয়েছেন, 'আমি ফর্সা এবং লম্বা হওয়া সত্ত্বেও শরীর নিয়ে প্রায়ই খোঁটা দিতেন শিবম ও তাঁর পরিবার। একাধিকবার বডি শেমিংয়ের শিকার হয়েছি। মহিলাদের অশ্লীল ভিডিও, ছবি দেখতেন শিবম। ইউটিউব ও ইনস্টাগ্রামে অশ্লীল ভিডিও দেখেই কাটাতেন। আমার চেয়ে অন্য মেয়েদের প্রতি আকৃষ্ট ছিলেন তিনি।' 

 

তিনি এও জানিয়েছেন, দিনে তিন ঘণ্টা করে শরীরচর্চা করতে বাধ্য করতেন সানুকে। কোনও একদিন শরীরচর্চা না করলে, বা কম সময় এক্সারসাইজ করলে, পরপর কিছুদিন খেতেও দিতেন না। বেডরুমের দরজা বন্ধ করার অনুমতিও ছিল না। যখন তখন কাউকে না জানিয়েই শ্বশুর ঢুকে পড়তেন ঘরে। 

 

মাহি নামের এক তরুণীর সঙ্গে খোশ গল্প করতেও দেখেছিলেন শিবমকে। বিষয়টি নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই, কষিয়ে থাপ্পড় মারেন শিবম। এমনকী ননদ তাঁকে গর্ভপাতের জন্য ওষুধ খাইয়ে দেন। গত ১৮ জুন শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে বাবার বাড়িতে চলে যান সানু। ৯ জুলাই গর্ভপাত হয় তাঁর। গত ১৪ আগস্ট শিবম ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ দায়ের করেন সানু। পাশাপাশি ইচ্ছাকৃতভাবে গর্ভপাত, পণের অভিযোগ দায়ের করেছেন তিনি।