আজকাল ওয়েবডেস্ক: বছর ১৪ আগে রাস্তার ধারে পরিত্যাক্ত অবস্থায় পড়েছিল একরত্তি কন্যা সন্তান। তখন সেই মেয়ের বয়স মাত্র তিনদিন। ওই শিশু কন্যাকে চোখে পড়ে যায় ভুবনেশ্বরের বাসিন্দা রাজলক্ষ্মী কর নামে এক মহিলার। মেয়েটিকে তুলে এনে কন্য়াস্নেহে মানুষ করেন রাজলক্ষ্মী। সেই পালিত মেয়ে এখন অষ্ঠম শ্রেণির ছাত্রী। এই নাবালিকাই দুই বন্ধুর সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে পালিতা মা-কে খুন করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ইন্সটাগ্রামের চ্যাট দেখে ওই মেয়েটির ষড়যন্ত্রের কথা জানতে পারেন মৃতা রাজলক্ষ্ণীর (৫৪) ভাই। এরপরই পুলিশে খবর দেওয়া হয়। তদন্তে নেমে পুলিশ অভিযুক্ত পালিত মেয়ে (১৩) ও তার দুই বন্ধ গণেশ রথ (২১) ও দীনেশ সাহুকে (২০) গ্রেপ্তার করেছে।
ঘটনাটি ওড়িশার গজপতি জেলার পারালখেমুন্ডি শহরে ঘটেছে। পুলিশ মনে করছে, রাজলক্ষ্মীর সম্পত্তির লোভেই এই হত্যা করেছে তাঁর পালিতা কন্যা, গণেশ রথ ও দীনেশ সাহু। তাদের থেকে ৭০ গ্রাম সোনার গয়না ও ৬০ হাজার টাকা উদ্ধার হয়েছে।
গজপতি জেলার পুলিশ সুপার যতীন্দ্রকুমার পান্ডা জানান, নাবালিকা ওই মেয়ে রাজলক্ষ্মীকে গত ২৯ এপ্রিল ঘুমের ওষুধ খাইয়ে দিয়েছিল। এরপর দুই বন্ধু গণেশ ও দীনেশকে সঙ্গে নিয়ে তাঁকে শ্বাসরোধ করে খুন করে। তার পরে তারা মহিলাকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানকার চিকিৎসকরা রাজলক্ষ্মীকে মৃত ঘোষণা করেন।
রাজলক্ষ্মীকে হাসপাতালের চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করতেই ওই নাবালিকা মহিলার আত্মীয়স্বজনদের সেই খবর দেয় বলে জানায় পুলিশ। আত্মীয়দের সে বলে, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে রাজলক্ষ্মী মারা গিয়েছেন। নাবালিকার কথা আত্মীয়রা বিশ্বাসও করেন। কারণ, মহিলার হৃদযন্ত্রের গোলমাল ছিল। ৩০ এপ্রিল মহিলার অন্ত্যেষ্টি হয়ে যায়।
এরপরই ঘটনায় নয়া মোড় আসে। রাজলক্ষ্মীর ভাই শিবপ্রসাদ মিশ্রের হাতে কোনও ভাবে নাবালিকার মোবাইল ফোন চলে আসে। তিনি সেই ফোনে থাকা বিভিন্ন মেসেজ ঘাঁটাঘাঁটি করে দেখেন, রা়জলক্ষ্মীকে খুনের পরিকল্পনা করা হয়েছিল। খুনের ষড়যন্ত্রে জড়িত রয়েছে নাবালিকা ও তার দুই বন্ধ গণেশ ও দীনেশ। শিবপ্রসাদ পুলিশের কাছে ওই ফোন নিয়ে গিয়ে বিস্তারিত জানান। পুলিশ তিনজনকে গ্রেপ্তারের পরে জেরা করে জানতে পারে, গণেশ ও দীনেশের সঙ্গে পালিত মেয়ের মেয়ের বন্ধুত্ব মেনে নিতে পারছিলেন না রাজলক্ষ্মী। সেই কারণেই মহিলাকে খুনের পরিকল্পনা করে তিনজনে মিলে। এছাড়াও ছিল সম্পত্তির লোভ।
