আজকাল ওয়েবডেস্ক: ঠিক দুই দশক আগে নৃশংস হত্যাকাণ্ড। খুনের পর গা ঢাকা দিয়ে ভেবেছিল পুলিশকে ফাঁকি দিতে পারবে। কিন্তু টানা ২৪ বছর লুকিয়ে থাকার পরেও, শেষরক্ষা হল না। অবশেষে পুলিশের জালে ধরা পড়ল হত্যাকাণ্ডের অন্যতম মূল অভিযুক্ত। তাকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পেশ করতে চলেছে পুলিশ। 

 

জানা গেছে, খুনের ঘটনাটি তিনি ভাই মিলে ঘটিয়েছিল। একজন ২৪ বছর আগেই ধরা পড়েছিল। যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ভোগ করে সে। কিন্তু বাকি দুই ভাই তারপরেই ভিন রাজ্যে পাড়ি দেয়। সেখানে পৌঁছে নাম, পরিচয় বদলে নতুন করে কাজ শুরু করে। এর মধ্যে একজন আবার অন্য একটি শহরে চলে গিয়েছিল। সেখানেও নিজেকে অন্য নামে পরিচয় দেয়। 

 

টানা দুই দশক তল্লাশি চালানোর পর, অবশেষে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করল পুলিশ। ভিন রাজ্যে নাম বদলে বসবাস করার পরেও শেষরক্ষা হল না। ওড়িশার এই ঘটনা কোনও সাসপেন্স থ্রিলারের চেয়ে কম নয়। 

 

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার পুলিশ জানিয়েছে, একটি খুনের ঘটনায় অভিযুক্তকে সোমবার গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ধৃতের নাম, উদয়া প্রধান। ৫২ বছর বয়সি প্রৌঢ় গত ২৪ বছর ধরে পলাতক ছিল। 'অপারেশন গারুদা' শুরু করে অভিযুক্তের খোঁজে তল্লাশি অভিযান চালায় পুলিশ। অবশেষে ২৪ বছর পর পুলিশের জালে ধরা পড়ল সে‌। 

 

পুলিশ আরও জানিয়েছে, খুনের ঘটনাটি ঘটেছিল ২০০১ সালের ৬ জুলাই। ওড়িশার গাঞ্জাম জেলায় কেরান্দিতোলা গ্রামে একটি নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটেছিল। উদয়া ও তার দুই ভাই মিলে কৈবল্য প্রধান নামের ব্যক্তিকে নৃশংসভাবে খুন করেছিল। কুপিয়ে খুন করা হয়েছিল কৈবল্যকে। 

 

আরও পড়ুন: নদীতে তলিয়ে যাচ্ছিলেন যুবক, তাঁকে বাঁচাতে গিয়ে তলিয়ে গেলেন আরও চারজন, হুলুস্থুল পরিস্থিতি কালনায়

 

খুনের ঘটনার দিনেই উদয়ার এক ভাই মুশা প্রধানকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। কিন্তু উদয়া ও তার দাদা পঞ্চম সেই দিন থেকে পলাতক ছিল। এক পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, গত দুই দশক ধরে একাধিকবার উদয়াকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করেছে পুলিশ। কিন্তু প্রতিবার পালিয়ে গ্রেপ্তারি এড়িয়ে যায় সে। দিন কয়েক আগেই গোপন সূত্রে উদয়ার সন্ধান পাওয়া যায়। তড়িঘড়ি চেন্নাইয়ে পৌঁছয় পুলিশ। সোমবার চেন্নাই থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে তারা। 

 

এক পুলিশ আধিকারিক আরও জানিয়েছেন, চেন্নাইয়ে গিয়ে উদয়া একটি কনস্ট্রাকশন ফার্মে কাজ করছিল। সেখানে নিজেকে গণেশ নামে পরিচয় দিয়েছিল। খুনের পরেই বেঙ্গালুরুতে পালিয়ে গিয়েছিল উদয়া ও পঞ্চম। কিন্তু সেখানে যাওয়ার পরেই দু'জনের মধ্যে বচসা হয়। অশান্তির পর উদয়া চেন্নাইয়ে চলে আসে। এদিকে পরিবারের সকল সদস্যরাই সেই গ্রামে থেকে যান। 

 

আরও পড়ুন: স্বামীর মঙ্গলের জন্য বিশেষ পুজো দিতে যাচ্ছিলেন, পথেই মর্মান্তিক পরিণতি ৮ জন যুবতীর, ভয়াবহ দুর্ঘটনা এই রাজ্যে

 

পুলিশ জানিয়েছে, খুনের মামলায় উদয়ার ভাই মুশাকে দোষী সাব্যস্ত করেছিল আদালত। সেই ঘটনায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি। মুশার শাস্তির মেয়াদ ফুরিয়ে গেছে। বর্তমানে সে জেলের বাইরে রয়েছে। উদয়াকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পেশ করবে পুলিশ। অন্যদিকে এখনও পর্যন্ত পঞ্চম পলাতক। তার খোঁজেও তল্লাশি অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে পুলিশ।