আজকাল ওয়েবডেস্ক: সকাল থেকে সাড়া পাওয়া যাচ্ছিল না প্রৌঢ়ার। এমনকী বাড়ি থেকে মা ও ছেলের কারো সাড়াশব্দ পাননি প্রতিবেশী। সন্দেহ ঘনায় প্রতিবেশীদের মনে। ডাকাডাকি করেও সাড়া না পাওয়ায়, পুলিশে খবর দেন তাঁরা। ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। ঘরের দরজা খুলতেই আঁতকে উঠলেন প্রতিবেশীরা। চোখ ছানাবড়া পুলিশেরও। 

ঘরে ঢুকেই পুলিশ দেখে, বিছানার উপর প্রৌঢ়ার ক্ষতবিক্ষত, নিথর, রক্তাক্ত দেহ পড়ে রয়েছে। সেই রক্তে ভেজা বিছানাতেই শুয়ে রয়েছে তাঁর ছেলে। যদিও সে জীবিত। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেই জানা যায়, রাগের মাথায় মাকে কুপিয়ে খুন করেছে সে। এরপর দেহটি সারারাত ঘরেই রেখে দিয়েছিল। ঘুমিয়েও পড়েছিল মায়ের মৃতদেহের পাশে। 

নৃশংস হত্যাকাণ্ডের বিবরণ শুনে চমকে উঠেছে পুলিশ। ইতিমধ্যেই ঘাতক ছেলেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার বয়ান ও প্রতিবেশীদের অভিযোগ শুনে হতবাক পুলিশ। মাত্র ২০ টাকার জন্য মা ও ছেলের ঝামেলা হয়েছিল। সেই ২০ টাকার জন্যেই মাকে নৃশংসভাবে খুন করে ছেলে। 

আরও পড়ুন: হলুদ ধাতুর দরে বড়সড় বদল, আজ ২২ ক্যারাটের দাম কমল না বাড়ল? দেখে নিন একনজরে

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে গুরুগ্রামে। পুলিশ জানিয়েছে, শনিবার হত্যাকাণ্ডটি ঘটেছে নুহ জেলার জৈসিংপুর গ্রামে। মৃত প্রৌঢ়ার নাম, রাজিয়া। মাত্র ২০ টাকার জন্য ৫৬ বছরের রাজিয়াকে কুপিয়ে খুন করেছে তার ছেলে জামশেদ। কুড়ুল দিয়ে মায়ের দেহ ক্ষতবিক্ষত করে দিয়েছে সে। ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে।

জানা গেছে, জামশেদ দীর্ঘদিন ধরেই মাদকাসক্ত। মাদকের নেশার জন্য পরিবারেও নিত্যদিন অশান্তি হত। রাজিয়ার সঙ্গে প্রায়ই তুমুল ঝামেলা হত জামশেদের। মাদকের নেশার জন্য ঘরের জিনিসপত্র বিক্রিও করে দিয়েছিল। নেশাগ্রস্ত ছেলের এহেন কাণ্ডে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিলেন রাজিয়া। ঘটনার দিন রাতেও নেশা করাকে কেন্দ্র করেও মা ও ছেলের মধ্যে ঝামেলা হয়। 

শনিবার মাঝ রাতে নেশাগ্রস্ত অবস্থায় বাড়ি ফিরেছিল জামশেদ। বাড়ি ফেরার পরেই রাজিয়ার সঙ্গে তার কথা কাটাকাটি হয়। এরপর আরও মাদক কেনার জন্য মায়ের থেকে ২০ টাকা চেয়েছিল সে। কিন্তু সেই টাকা দেননি রাজিয়া। উল্টে কিছু কটু কথা শুনিয়েছিল। ২০ টাকার জন্য ঝামেলা করতে করতেই নৃশংস হত্যাকাণ্ডটি ঘটায় জামশেদ। 

বাড়ির বাইরে থেকে ধারালো কুড়ুল নিয়ে এসে রাজিয়াকে কোপাতে থাকে সে। রক্তাক্ত অবস্থায় সে লুটিয়ে পড়ে। এরপর মায়ের দেহ বিছানায় তুলে রাখে‌। রক্তে ভেসে যায় বিছানাটি‌। গভীর রাতে সেই রক্তে ভেজা বিছানাতেই ঘুমিয়ে পড়ে সে। পরদিন সকালে প্রতিবেশীরা পুলিশে খবর দেন। আগেরদিন রাতেও চিৎকার, চেঁচামেচির শব্দ পেয়েছিলেন তাঁরা। যা ঘিরে আরও সন্দেহ হয়েছিল তাঁদের। প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, মাত্র চার মাস আগে রাজিয়ার স্বামী মুবারক মারা যান। এবার ছেলের হাতেই মর্মান্তিক পরিণতি হল তাঁর। 

পুলিশ আরও জানিয়েছে, দেহটি উদ্ধার করে ইতিমধ্যেই হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। জামশেদ দীর্ঘদিন ধরেই গাঁজার নেশা করে বলে জানা গেছে। এই নেশার জন্যেই ২০ টাকা চেয়েছিল সে। তার বিরুদ্ধে এফ আই আর দায়ের করা হয়েছে। ঘটনার মামলা রুজু করে তদন্ত জারি রেখেছে পুলিশ। ঘাতক যুবকের বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার একাধিক ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে।