আজকাল ওয়েবডেস্ক: বেপরোয়া গতিতে ভুল রাস্তায় ট্রাক। সজোরে ধাক্কা বাসে। সপ্তাহের শুরুতেই ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনা তেলেঙ্গানায়। রক্তস্রোতে ভাসল রাস্তা। বাস ও ট্রাকের সংঘর্ষে একের পর এক যাত্রীর মৃত্যু। মৃতদের তালিকায় অধিকাংশ মহিলা‌। রয়েছে শিশুরাও। যে দুর্ঘটনায় শিউরে উঠেছেন স্থানীয়রা। কান্নার রোল পরিবারে। 

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, সোমবার দুর্ঘটনাটি ঘটেছে তেলেঙ্গানার রাঙ্গা রেড্ডি জেলার ছাভেলা মণ্ডলের খানাপুর গেটের কাছে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সরকারি বাসের সঙ্গে ট্রাকের সজোরে সংঘর্ষ ঘটে। সরকারি বাসটিতে ৭২ জন যাত্রী ছিলেন। দুর্ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের মধ্যে ১০ জন মহিলা, আটজন পুরুষ ও এক তিন মাসের শিশুও রয়েছে। অনেকেরই শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

উচ্চ পদস্থ পুলিশ আধিকারিক মহেশ ভাগওয়াত জানিয়েছেন, ট্রাকটি বেপরোয়া গতিতে ভুল লেনে ঢুকে পড়েছিল। দ্রুত গতিতে এসে সরকারি বাসে সজোরে ধাক্কা মারে। দুর্ঘটনার জেরে বহু যাত্রী গুরুতর আহত হয়েছেন। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারার সম্ভাবনা রয়েছে। 

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এক্স হ্যান্ডেলে তেলেঙ্গানার দুর্ঘটনা ঘিরে শোকপ্রকাশ করেছেন। নিহত ও আহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের তরফে আর্থিক ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করা হয়েছে। মৃতদের পরিবার পিছু দুই লক্ষ টাকা এবং আহতদের চিকিৎসার জন্য ৫০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছেন তিনি। 

দুর্ঘটনার খবর পেয়েই তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী রেবন্ত রেড্ডি তড়িঘড়ি করে দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছন। পুলিশ ও তদন্তকারী আধিকারিকদের পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। দুর্ঘটনাটি ঘিরে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত শুরু হয়েছে। পাশাপাশি গান্ধী ও ওসমানিয়া হাসপাতালে আহতদের চিকিৎসার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা করার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী রেবন্ত রেড্ডি‌। 

প্রসঙ্গত, গতকাল রবিবার রাতেই রাজস্থানের যোধপুরে আরও এক ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটেছে। যোধপুরে ভয়াবহ পথ দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল অন্তত ১৫ জনের, আহত হয়েছেন আরও দু’জন। রবিবার ভর সন্ধ্যায় ভারতমালা এক্সপ্রেসওয়েতে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। জানা গিয়েছে, দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকের পিছনে সজোরে ধাক্কা মারে একটি টেম্পো ট্র্যাভেলার। তাতেই ঘটে যায় এই ভয়াবহ দুর্ঘটনা।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, নিহতরা সকলেই যোধপুর জেলার ফলোদি এলাকার বাসিন্দা। তাঁরা কলায়ত মন্দিরে দর্শন সেরে বাড়ি ফেরার পথে দুর্ঘটনার কবলে পড়েন। ফলোদির পুলিশ সুপার কুন্দন কনওয়ারিয়া জানিয়েছেন, দুর্ঘটনার সময় ট্র্যাভেলারের গতি এতটাই বেশি ছিল যে গাড়িটির সামনের অংশ সম্পূর্ণ ভেঙেচুরে যায়।

বেশ কয়েকজন যাত্রী গাড়ির ভিতরে আটকে পড়েন। পরে স্থানীয় বাসিন্দা, পুলিশ ও পথচলতি মানুষ একযোগে উদ্ধারকাজে নামেন। দুর্ঘটনার তীব্রতায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে স্থানীয় এলাকাতেও। ফলোদি থানার অফিসার অমনারাম বলেন, ‘ধাক্কার তীব্রতায় মৃতদের দেহ গাড়ির সিটের সঙ্গে আটকে গিয়েছিল। তাঁদের বের করতে আমাদের যথেষ্ট কষ্ট হয়েছে।’

জানা গিয়েছে, আহত ব্যক্তিদের প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়, পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য গ্রিন করিডর তৈরি করে যোধপুরে স্থানান্তর করা হয়।দুর্ঘটনার খবর পেয়ে যোধপুরের পুলিশ কমিশনার ওম প্রকাশ মথুরদাস মথুর ও সুপারিনটেনডেন্ট বিকাশ রাজপুরোহিত হাসপাতালে গিয়ে আহতদের চিকিৎসার খোঁজখবর নেন। ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে উদ্ধার ও শনাক্তকরণের কাজ। রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী ভজনলাল শর্মা গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।