আজকাল ওয়েবডেস্ক: মর্মান্তিক ঘটনা রাজস্থানে। জয়পুরে স্কুলের চারতলা থেকে পড়ে ছাত্রীর মৃত্যু। খবর অনুযায়ী রাজস্থানের জয়পুরে এক নামকরা বেসরকারি স্কুলের চারতলা থেকে পড়ে মৃত্যু হলো ষষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্রীর। শনিবার পুলিশ জানিয়েছে, প্রাথমিক তদন্তে অনুমান করা হচ্ছে, ওই ছাত্রীটি মানসিক চাপে আত্মহত্যা করেছে। যদিও ঘটনার সঠিক কারণ তদন্তাধীন। এই ঘটনা ঘিরে সম্প্রতি রাজ্যজুড়ে চরম শোরগোল।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনাস্থলে প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা চলেছে। পুলিশ আসার আগেই সব ধুয়ে মুছে সাফ। ঘটনার সঠিক কারণ জানতে এবং মৃত্যুর কারণ নির্ধারণে কর্মকর্তারা বর্তমানে স্কুলের বিভিন্ন সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখছেন। মানসরোবর থানার এসএইচও লক্ষ্মণ খাটানা সাংবাদিকদের জানান, মৃত ওই কিশোরী তার বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান ছিল। নীরজা মোদি স্কুলের চারতলা থেকে সে পড়ে যাওয়ার পর গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে দ্রুত নিকটবর্তী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকেরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
জয়েন্ট পেরেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের মুখপাত্র অভিষেক জৈন অবশ্য দাবি করেছেন যে, এটি আত্মহত্যারই ঘটনা। পাশাপাশি তাঁর অভিযোগ, শিক্ষিকার আচরণে মেয়েটি ক্ষুব্ধ ছিল। এ প্রসঙ্গে জৈন বলেন, "আমরা অনেক ছাত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি। জানা গিয়েছে যে এক শিক্ষিকার আচরণে হতাশ হয়ে সে চারতলা থেকে ঝাঁপ দেয়। যদিও স্কুল কর্তৃপক্ষ ঘটনার স্থান পরিষ্কার করে প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা করেছে।"
তিনি আরও বলেন, "সরকার বা স্কুল কেউই নিরাপত্তার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে দেখছে না। কোনও ঘটনা ঘটলেই তারা কেবল নড়েচড়ে বসে।" অ্যাসোসিয়েশনের দাবি, স্কুলের বিভিন্ন কমিটিতে অভিভাবকদের অন্তর্ভুক্ত করা হোক, যাতে তাঁরা তাদের পরামর্শ দিতে পারেন। এসএইচও জানিয়েছেন, তদন্ত শেষ হওয়ার পরেই কিশোরীর মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।
ওই অফিসার আরও জানান, "ঘটনাস্থল থেকে নমুনা সংগ্রহ করতে ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের ডাকা হয়েছিল। বিষয়টি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তদন্ত করা হবে। জয়পুরিয়া হাসপাতালে মৃতদেহের ময়নাতদন্ত চলছে। সেখানে মেয়েটির বাবা-মা এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত আছেন।"
এই ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেন স্কুল শিক্ষামন্ত্রী মদন দিলাওয়ার। তিনি বলেন, "মনে হচ্ছে, স্কুলে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল না। এটা বড়সড় গাফিলতি। কর্তৃপক্ষের এ বিষয়ে গুরুত্ব সহকারে দেখা উচিত ছিল। আমি জেলা শিক্ষা অফিসারকে বিষয়টি তদন্ত করে রিপোর্ট জমা দিতে বলেছি।"
প্রসঙ্গত, গত জুলাই মাসে মায়ের বকুনি শুনে এক কিশোর আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছিল। একদিনও পড়াশোনা থেকে রেহাই নেই। মা-বাবার বকাঝকা, পড়ার চাপে মানসিকভাবে বিধ্বস্ত। মায়ের বকুনি শুনে টিউশনে গেলেও, চরম পদক্ষেপ করল ১৪ বছরের কিশোর। বহুতল আবাসন থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মঘাতী হল সে।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে মহারাষ্ট্রের মুম্বইয়ে। বৃহস্পতিবার পুলিশ জানিয়েছে, কান্দিভালি এলাকায় ব্রুক আবাসনের ছাদ থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মঘাতী হয় ১৪ বছরের এক কিশোর। পড়াশোনার চাপেই সে আত্মহত্যা করেছে বলে পুলিশের অনুমান।
তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, বুধবার সন্ধ্যায় টিউশনে যাওয়ার জন্য কিশোরকে জোরাজুরি করেছিলেন তার মা। গৃহবধূ জানিয়েছেন, সন্ধ্যায় ঘরেই খেলাধুলা করছিল সে। বারবার টিউশনে যেতে বললেও, নারাজ ছিল সে। পড়াশোনায় মন না দেওয়ায় খানিকটা বকাঝকা করা হয়েছিল। এরপর গোমড়া মুখেই টিউশনে যায়।
কিছুক্ষণ পর পুলিশ জানায়, ওই আবাসনের নীচ থেকে কিশোরের রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। হাসপাতালে নিয়ে গেলেও শেষরক্ষা হয়নি। চিকিৎসকরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে পুলিশ। কিশোরের রহস্যমৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত চলছে। পরিবারের বয়ান রেকর্ড করা হয়েছে।
