আজকাল ওয়েবডেস্ক: মর্মান্তিক পরিণতি। নিজের অঙ্গ দিয়ে স্বামীকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছিলেন স্ত্রী। অঙ্গ প্রতিস্থাপনও হয়েছিল। কিন্তু শেষরক্ষা হল না। প্রথমে স্বামী, তার চার দিনের মাথায় মৃত্যু হল স্ত্রীর। চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগ তুলেছে মৃতদের পরিবার। বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করেছে মহারাষ্ট্র স্বাস্থ্য বিভাগ। সরকারের তরফে পুনের সহ্যাদ্রি হাসপাতালকে নোটিশ পাঠানো হয়েছে। হাসপাতালের কাছ থেকে অঙ্গ প্রতিস্থাপনের ভিডিও রেকর্ডিং এবং চিকিৎসার পদ্ধতি জানতে চাওয়া হয়েছে।

মৃতদের নাম বাপু কমকার এবং কামিনী কমকার। গত ১৫ আগস্ট এই দম্পতির অঙ্গ প্রতিস্থাপনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছিল। 

জানা গিয়েছে যে, অস্ত্রোপচারের পরে বাপুর অবস্থার অবনতি ঘটে। তিনি ১৭ আগস্ট শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর স্ত্রী কামিনী প্রথমদিকে সুস্থ হয়ে উঠছিলেন। কিন্তু ২১ আগস্ট সংক্রমণে আক্রান্ত হন এবং চিকিৎসার সময় মারা যান।

রাজ্যের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের উপ-পরিচালক ডা. নাগনাথ ইয়েম্পালে নিশ্চিত করেছেন যে, পুনের সহ্যাদ্রি হাসপাতালকে একটি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। সংবাদ সংস্থা পিটিআই-কে স্বাস্থ্য বিভাগের আধিকারিকরা বলেছেন, "আমরা হাসপাতালকে একটি নোটিশ জারি করেছি। অঙ্গ গ্রহীতা এবং দাতার বিবরণ, তাঁদের চিকিৎসার ভিডিও রেকর্ডিং এবং চিকিৎসা পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে চেয়েছি। সোমবার সকাল ১০টার মধ্যে হাসপাতালকে সমস্ত বিবরণ জমা দিতে বলা হয়েছে।"

মৃতের পরিবারের সদস্যরা চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগ করেছেন এবং মৃত্যুর পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি করেছেন।

সহ্যাদ্রি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নোটিশের কথা স্বীকার করেছে। জানিয়েছে যে, তারা সরকারের সঙ্গে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করছে। একটি বিবৃতিতে, হাসপাতাল জানিয়েছে যে- উভয় অস্ত্রোপচারই স্ট্যান্ডার্ড মেডিকেল প্রোটোকল অনুসারে করা হয়েছে। পিটিআই জানিয়েছে, হাসপাতাল এক বিবৃতিতে বলেছে, "আমরা তদন্তে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করছি। এই বিষয়টির পুঙ্খানুপুঙ্খ পর্যালোচনা নিশ্চিত করার জন্য আমরা প্রয়োজনীয় সমস্ত তথ্য এবং সহায়তা প্রদান করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।"

হাসপাতালের দাবি, রোগীর (বাপু কমকার) শরীরে অনেক জটিলতা ছিল। এ ধরণের চিকিৎসার ক্ষেত্রে তিনি একজন উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তি ছিলেন। বিবৃতিতে উল্লেখ রয়েছে, "এই বিশাল ক্ষতির সময়ে আমরা কমকার পরিবারের প্রতি গভীর সহানুভূতি জানাই। একজন জীবিত দাতার লিভার প্রতিস্থাপন সবচেয়ে জটিল প্রক্রিয়াগুলির মধ্যে একটি। এই ক্ষেত্রে রোগীর শরীরে অবস্থা অনেক জটিল ছিল, তিনি উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তি ছিলেন।"

হাসপাতালটি আরও জানিয়েছে যে, কামিনী প্রথমে সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন কিন্তু পরে তিনি সেপটিক শক এবং মাল্টি-অর্গান ফেইলিওর-এ আক্রান্ত হন, যা সব শেষ করে দিল।

আরও পড়ুন- চরম নৃশংসতা, অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে খুন যুবকের, টুকরো টুকরো করে দেহাংশ ফেললেন নদীতে, তারপর?...