আজকাল ওয়েবডেস্ক: উত্তরপ্রদেশে আবার হাড়হিম ঘটনা। বাহরাইচ জেলায় নেকড়ের হামলা। খবর অনুযায়ী, মাত্র দুই বছরের একটি শিশুকে টেনে নিয়ে যায় নেকড়েটি। ঘটনার জেরে অভিযোগ উঠেছে ওই বন্য পশুর বিরুদ্ধে। স্থানীয় প্রশাসনের ধারণা, এটি নেকড়েরই কাজ। সম্প্রতি এই ঘটনা জানাজানি হতেই হুলুস্থুল।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর পাওয়া গিয়েছে, গত রবিবার ভোরে কাইসারগঞ্জ এলাকায় এই ভয়াবহ ঘটনা ঘটে৷ কান্দৌলি গ্রামে নিজের বাড়ির উঠোনে মায়ের পাশে ঘুমিয়ে ছিল শিশুটি। ঠিক এমন সময় একটি হিংস্র নেকড়ে এসে শিশুকে টেনে নিয়ে চলে যায়।
এই ঘটনা জানতে পেরে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, এই হিংস্র নেকড়েগুলিকে হয় ধরে ফেলতে হবে, নয়তো গুলি করে হত্যা করতে হবে। শিশুটির খোঁজে শুরু হয়েছে বিরাট তল্লাশি অভিযান। খবর অনুযায়ী, তার বাড়ি থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে একটি খেতে কিছু মাংসের টুকরা ও রক্তের দাগ পাওয়া গিয়েছে। বর্তমানে বন দপ্তরের আধিকারিকেরা তল্লাশির জন্য ড্রোন ও বিশেষ ডগ স্কোয়াড কাজে লাগাচ্ছেন।
বিভাগীয় বন আধিকারিক (ডিএফও) রাম সিং যাদব জানান, "আশেপাশে বন্য পশুর পায়ের ছাপ পাওয়া গিয়েছে। প্রথম দেখায় মনে হচ্ছে এটি নেকড়েরই আক্রমণ। ড্রোন ও ডগ স্কোয়াড দিয়ে তল্লাশি চলছে।"
আধিকারিকদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, রাকেশ যাদবের স্ত্রী মেয়ে শানভিকে নিয়ে উঠোনে ঘুমোচ্ছিলেন। ভোর ৫টা নাগাদ পশুটি মেয়েটিকে তুলে নিয়ে যায়। মেয়ের চিৎকার শুনে মা জেগে ওঠেন, কিন্তু মেয়েকে আর খুঁজে পাননি।
পরিবারের সদস্য ও গ্রামবাসীরা সঙ্গে সঙ্গে পাশের আখের খেতে গিয়ে নেকড়ের পায়ের ছাপ দেখতে পান। ধাওয়া করার সময় তাঁরা ওই খেতে রক্তের দাগ ও মাংসের ছোট ছোট অংশ খুঁজে পান। ডিএফও অবশ্য জানিয়েছেন, "এখনও মেয়েটির খোঁজ মেলেনি।"
প্রসঙ্গত, জানা গিয়েছে, গত ৯ সেপ্টেম্বর থেকে ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত বাহরাইচের কাইসারগঞ্জ ও মাহসি এলাকায় নেকড়ের আক্রমণে কমপক্ষে ছয়জন প্রাণ হারিয়েছেন। জানা গিয়েছে তাঁদের মধ্যে চারজন শিশু এবং একজন প্রবীণ দম্পতি রয়েছেন। এই হামলায় আহত হয়েছেন প্রায় ২৯ জন গ্রামবাসী।
বন দপ্তর আগে দাবি করেছিল যে, চারটি নেকড়ের একটি দল এই ভয়াবহ আক্রমন চালাচ্ছে। তার মধ্যে তিনটি নেকড়েকে ইতিমধ্যে মারা হয়েছে, এখন শুধু একটি খোঁড়া নেকড়ে বাকি আছে। এই ঘটনার পর উত্তরপ্রদেশ সরকার নিহতদের পরিবারকে পাঁচ লক্ষ টাকা এবং আহতদের পঞ্চাশ হাজার টাকা করে ক্ষতিপূরণ দিয়েছে।
