আজকাল ওয়েবডেস্ক: ভরা রাস্তায় হঠাৎ জ্ঞান হারিয়ে লুটিয়ে পড়েছিলেন এক তরুণী। কোনও সাড়া পাওয়া যাচ্ছিল না তাঁর। কমে গিয়েছিল প্রেসার। সেই রাস্তাতেই তরুণীকে সিপিআর দিয়ে সাহায্য করেছিলেন এক শিক্ষক। এদিকে তাঁর বিরুদ্ধেই উঠল তরুণীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগ। অশ্লীলভাবে তরুণীর বুক হাত রাখার অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে। 

জানা গেছে, ভরা রাস্তায় তরুণী হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েছিলেন বলেই আশঙ্কা ছিল পথচলতি সাধারণ মানুষের। দ্রুত ডেকে আনা হয়েছিল স্থানীয় হাসপাতালের এক মহিলা চিকিৎসককে। তিনিই প্রথমে এসে সিপিআর দিচ্ছিলেন। কিন্তু ক্লান্ত বোধ করায়, রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা এক যুবককে তরুণীকে সিপিআর দিয়ে সাহায্য করার আবেদন করেন। 

চিকিৎসকের কথা মতো সিপিআর দিয়েছিলেন‌ ওই শিক্ষক। তরুণীর জ্ঞান ফিরতেই, তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এই ঘটনার পরেই শিক্ষকের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠেছে। অশ্লীলভাবে তরুণীকে ছোঁয়ার অভিযোগ উঠতেই জোরকদমে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। 

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে চীনে। পুলিশ জানিয়েছে, সেন্ট্রাল হুনান প্রদেশে ঘটনাটি ঘটেছে। ৪২ বছরের শিক্ষকের নাম প্যান। জানা গেছে, দিন কয়েক আগেই ভরা রাস্তায় এক তরুণী অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। জ্ঞান হারিয়ে রাস্তাতেই লুটিয়ে পড়েন তরুণী। কোলাপস করেছেন বলেই আশঙ্কা হয়েছিল সাধারণ পথচলতি মানুষের। 

আরও পড়ুন: প্ল্যাটফর্ম ছেড়ে চলে যাচ্ছে ট্রেন, ফোন ঘাঁটতেই ব্যস্ত যাত্রী! চলন্ত ট্রেনে উঠতে গিয়ে ভয়ঙ্কর পরিণতি বৃদ্ধের

রাস্তার পাশের হাসপাতালের এক মহিলা চিকিৎসককে ডেকে আনা হয় ঘটনাস্থলে।‌ তিনি এসেই তরুণীকে সিপিআর দিতে শুরু করেন। কিন্তু সিপিআর দিতে দিতেই ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলেন মহিলা চিকিৎসক। ভিড়ের মাঝেই দাঁড়িয়ে ছিলেন প্যান। তাঁকে সিপিআর দিয়ে সাহায্যের আর্জি জানান‌। চিকিৎসকের কথা মতো তরুণীকে সিপিআর দেন প্যান। 

মিনিট দশেক পরে তরুণীর জ্ঞান ফেরে‌। চোখ খুলে তাকান তিনি। শ্বাস নিতে শুরু করেন স্বাভাবিকভাবেই।‌
এরপর তড়িঘড়ি করে তাঁর আত্মীয়দের খবর দেওয়া হয়। অ্যাম্বুল্যান্স পৌঁছতেই, তরুণীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যেতেও সাহায্য করেছিলেন প্যান। দ্রুত সেই হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তরুণীকে। 

কিন্তু এরপরেই ঘটে বিপত্তি।‌ জানা গেছে, ভরা রাস্তায় তরুণীকে সিপিআর দেওয়ার ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ে সর্বত্র। কেউ কেউ অভিযোগ জানান, সিপিআর দেওয়ার অজুহাতে তরুণীকে অশ্লীলভাবে ছুঁয়েছেন ওই শিক্ষক। তাঁর বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ তোলেন অনেকে। জ্ঞান ফেরার পরেও তরুণীর কণ্ঠেও সেই এক সুর। 

যে অভিযোগ ছড়াতেই মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন ৪২ বছরের ওই শিক্ষক। তিনি জানিয়েছেন, 'যদি শ্লীলতাহানির উদ্দেশ্য থাকত, তাহলে ভুল ভাবেই সিপিআর দিতাম। আমার সিপিআর দেওয়ার ধরণে কোনও ভুল থাকলে, ওই চিকিৎসক আমাকে সংশোধন করতে পারতেন। কিন্তু চিকিৎসক জানিয়েছেন, আমি সঠিকভাবে সিপিআর দিচ্ছিলাম।' 

জানা গেছে, শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগটি খতিয়ে দেখছে পুলিশ। এখনও পর্যন্ত তাঁর বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। তাই গ্রেপ্তার করা হয়নি তাঁকে। তবে বিষয়টি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়তেই নেটিজেনরা তরুণীকে 'অকৃতজ্ঞ' বলেছেন।