আজকাল ওয়েবডেস্ক: ভরা সংসার। স্বামী, ছেলেকে না জানিয়ে চুপিচুপি দ্বিতীয় বিয়ে করেছিলেন যুবতী। তার জেরে ভয়াবহ ঘটনার সম্মুখীন হলেন। বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক ও লুকিয়ে বিয়ে করার জেরে সংসারে চরম অশান্তি। সম্পর্ক ভাঙার কথা তুলতেই প্রেমিকের সঙ্গেই অশান্তি চরম পর্যায়ে পৌঁছয় যুবতীর‌। শেষমেশ প্রকাশ্য দিবালোকে যুবতীকে লক্ষ্য করে গুলি চালাল প্রেমিক। খাস কলকাতায় শিউরে ওঠা কাণ্ড।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার সকাল ছ'টা বেজে ২০ মিনিটে। হরিদেবপুর থানার অন্তর্গত কালীপদ মুখার্জি রোডে। আহত যুবতীর নাম, মৌসুমী হালদার। ৩৭ বছরের যুবতীকে লক্ষ্য করেই গুলি চালায় ৩০ বছরের যুবক বাবলু ঘোষ। গুলিবিদ্ধ আহত যুবতীকে তড়িঘড়ি করে এম আর বাঙ্গুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। বর্তমানে সেখানেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন যুবতী। অন্যদিকে অভিযুক্ত বাবলু ঘোষকে আটক করেছে পুলিশ।

হরিদেবপুরে শুটআউটের ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্ত বাবলুর সঙ্গে আহত মৌসুমীর বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক ছিল। ন'বছর আগে বাবলুর স্ত্রী মারা যান। এরপর মৌসুমীর সঙ্গে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে জড়ায় বাবলু। জানা যায়, মৌসুমীকে বিয়েও করেছিল সে। মৌসুমীর একটি ছেলেও রয়েছে। 

বিয়ে করার পরেই মৌসুমীর স্বামীর সঙ্গে অশান্তি শুরু হয়। ছেলে বড় হয়ে যাওয়ায় এবং বাড়িতে রাজি না  হওয়ায় সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসতে চাইছিলেন মৌসুমী। এই নিয়ে দু'জনের মধ্যে ঝামেলা শুরু হয়। গতকাল রবিবার রাতে চরম অশান্তি হয় বাবলু ও মৌসুমীর মধ্যে। এরপর মৌসুমী আজ সোমবার সকালে মর্নিং ওয়ার্কে বেরোলে, পিছু পিছু ধাওয়া করে অভিযুক্ত বাবলু। এরপর প্রকাশ্য দিবালোকে মৌসুমীকে গুলি করে পালিয়ে যায় সে। 

প্রসঙ্গত, গত সেপ্টেম্বরে কলকাতায় গুলি চালানোর ঘটনা ঘটেছে। উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল গুলশন কলোনি। আনন্দপুর থানা এলাকার এই কলোনিতে চলে গুলি। ওই এলাকায় বন্দুক হাতে কয়েক জন দুষ্কৃতীর তাণ্ডব চালানোর অভিযোগ উঠেছে। পর পর গুলির শব্দে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন এলাকাবাসী। বৃহস্পতিবার সন্ধেয় ওই গুলি চালানোর ঘটনায় যুক্ত থাকার সন্দেহে তিন জনকে গ্রেপ্তার করেছে লালবাজারের গোয়েন্দা বিভাগ। উদ্ধার হয়েছে আগ্নেয়াস্ত্রও। 

জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার সন্ধেয় আচমকাই দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। চলতে থাকে গোলাগুলি। আতঙ্কিত হয়ে স্থানীয়রা দোকানপাট বন্ধ করে দেন। ঘরের দরজা, জানলায় ছিঁটকানি লাগান এলাকাবাসী। তবে কী কারণে গোলাগুলি চলেছে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। যদিও এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, এলাকার দখল নেওয়াকে কেন্দ্র করে প্রায়ই দুই গোষ্ঠীর মধ্যে ঝামেলা লেগেই থাকে। বৃহস্পতিবার উত্তেজনা চরমে ওঠে। 

অবশ্য এখনও পর্যন্ত কোনও হতাহতের খবর মেলেনি। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় আনন্দপুর থানার পুলিশ। শুক্রবার সকাল থেকে ওই এলাকায় নতুন করে উত্তেজনা না ছড়ালেও থমথমে রয়েছে। কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে বলে জানা গেছে। বিশ্বস্ত সূত্রে পাওয়া খবরে জানা গেছে, এই ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগে তিন জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, এই তিন জনই শুলশন কলোনির গোলাগুলির ঘটনার সঙ্গে যুক্ত। পুলিশ সন্দেহভাজনদের থেকে একটি দেশি আগ্নেয়াস্ত্র, একটি ৭এমএম পিস্তল এবং চারটি কার্তুজ উদ্ধার করেছে। অস্ত্র আইনের অধীনে দু’জনের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করেছে পুলিশ। এই ঘটনার নেপথ্যে আর কারা জড়িত, তার সন্ধান শুরু হয়েছে।