আজকাল ওয়েবডেস্কঃ শুধু ঘুম নয়, অনেকে টিভি দেখা, বই পড়া সহ ঘরে থাকলে বেডরুমে সবচেয়ে বেশি সময় কাটান। শোওয়ার ঘর মানেই যেন এক শান্তির জায়গা। ঘুম, বিশ্রাম আর আরামের ঠিকানা। কিন্তু জানেন কি, সেই ঘরেই লুকিয়ে থাকতে পারে বিপদ! যা ধীরে ধীরে আপনার স্বাস্থ্য ও মানসিক অবস্থার ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। আসুন জেনে নেওয়া যাক এমনই পাঁচটি গোপন বিপদ এবং সেগুলো প্রতিরোধের উপায়:
১. পুরনো তোশকঃ আপনার গদি যতই আরামদায়ক হোক, তা যদি পুরনো হয়, তাহলে সেটি স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। ৭-৮ বছরের বেশি পুরনো গদিতে ঘাম, মরা কোষ, ধুলোকণা, ব্যাকটেরিয়া ইত্যাজি জমা হতে পারে। আসলে তোশক ঘন ঘন ধুতে ধোয়া সম্ভব হয় না, যার ফলে সেখানে শুয়ে শ্বাস নিলে বিষাক্ত পরিবেশ হয়।। বয়স্কদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হওয়ার তাঁদের জন্য এটি বিশেষভাবে বিপজ্জনক। গবেষণায় দেখা গেছে যে পুরনো গদিগুলি ক্ষতিকারক রাসায়নিক এবং অ্যালার্জেন নির্গত করে যা ত্বকে ফুসকুড়ি, শ্বাসকষ্টের সমস্যা এবং অ্যালার্জির কারণ হতে পারে। তাই প্রতি ৭-১০ বছর অন্তর গদি বদলান। জৈব ল্যাটেক্স বা মেমোরি ফোমের মতো বিষাক্ত নয় এমন পদার্থ দিয়ে তৈরি গদি বেছে নিন। ঘাম এবং ধুলোকণা দূরে রাখতে একটি ওয়াটারপ্রুফ গদি প্রটেক্টর ব্যবহার করুন এবং নিয়মিত আপনার গদি ভ্যাকুয়াম করুন।
২. নোংরা বালিশ ও বিছানাঃ বালিশ এবং বিছানাপত্র হল ধুলো, মৃত ত্বক খায় এমন সূক্ষ্ম প্রাণীর আতুঁড়ঘর। যা থেকে অ্যালার্জি, হাঁপানি এবং ত্বকের জ্বালা, ক্রনিক ফুসফুসের সমস্যা হওয়ার ঝুঁকি পুরাতন বালিশগুলিতে বিশেষ করে ধুলোর আস্তরণ, ঘাম এবং অ্যালার্জেন জমা হয়ে ঘুমের জায়গায় লুকানো বিপদ তৈরি করে। তাই প্রতি সপ্তাহে বিছানাপত্র গরম জলে ধুয়ে পরিষ্কার করুন। প্রতি ১-২ বছর অন্তর বালিশ পরিবর্তন করুন এবং হাইপোঅ্যালার্জেনিক বালিশের কভার ব্যবহার করুন।
৩. কৃত্রিম এয়ার ফ্রেশনারঃ অনেকেই শোওয়ার ঘরে এয়ার ফ্রেশনার ব্যবহার করেন। কিন্তু এই ধরনের জিনিসগুলোতে অনেক সময়েই থ্যালেটস নামক ক্ষতিকারক রাসায়নিক থাকে। যা শরীরে হরমোনের ভারসাম্যের ব্যাঘাত ঘটাতে পারে, এমনকী প্রজননের ক্ষতিও করতে পারে। তাই এয়ার ফ্রেশনার সম্পূর্ণরূপে এড়িয়ে চলুন। প্রয়োজনে বাথরুমে ব্যবহার করতে পারেন। সতেজ বাতাসের জন্য ঘরের জানালা খুলুন অথবা কিছু সুগন্ধী তেলের মতো প্রাকৃতিক বিকল্প ব্যবহার করতে পারেন।
৪. বিছানার কাছে ইলেকট্রনিক যন্ত্রঃ ঘুমানোর সময় মোবাইল ব্যবহার করলে ঘুমের মান নষ্ট হয়, মানসিক চাপ বাড়ে এবং মস্তিষ্ক বিশ্রাম পায় না। শুধু তাই নয়, ঘুমের সময়ে মাথার কাছে মোবাইল রাখলেও ক্ষতি হতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ঘুমানোর অন্তত ৩০ মিনিট আগে সব বৈদ্যুতিন যন্ত্র ব্যবহার এড়িয়ে চলুন। সম্ভব হলে ফোন বিছানার কাছে রাখবেন না।
৫. অপর্যাপ্ত আলো ও বাতাস চলাচলঃ পর্যাপ্ত আলো না থাকলে ঘরে ছত্রাক বা ফাঙ্গাস জন্মাতে পারে যা শ্বাসনালীর সমস্যা তৈরি করে। তাই প্রতিদিন জানালা খুলে ঘরে প্রাকৃতিক আলো ও বাতাস ঢুকতে দিন। ঘর শুকনো ও পরিষ্কার রাখুন।
