আজকাল ওয়েবডেস্ক: শৈশবের স্থূলতা বা ওবেসিটি কি পুরুষের জনন অঙ্গের স্বাভাবিক বৃদ্ধিতে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে? বড় হয়ে পুরুষাঙ্গের আকার তুলনামূলকভাবে ছোট হওয়ার পিছনে কি দায়ী ছোটবেলার অতিরিক্ত ওজন? ভিয়েতনামের এক সাম্প্রতিক গবেষণা এই গুরুতর প্রশ্নটিকেই সামনে এনেছে। হ্যানয় মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটি হসপিটালের এক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, যে পুরুষেরা শৈশবে স্থূলতার শিকার ছিলেন, প্রাপ্তবয়স্ক অবস্থায় তাঁদের পুরুষাঙ্গের দৈর্ঘ্য খাটো।

আশ্চর্যজনকভাবে, পুরুষাঙ্গের আকারের সঙ্গে প্রাপ্তবয়স্ক অবস্থার বডি মাস ইনডেক্স বা স্থূলতার কোনও প্রত্যক্ষ সম্পর্ক খুঁজে পাননি গবেষকরা। এই গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে ‘জার্নাল অফ সেক্সুয়াল মেডিসিন’-এ।

পুরুষাঙ্গের আকার এবং আকৃতি নিয়ে কৌতূহল বহু পুরনো। চিকিৎসাবিজ্ঞান থেকে শুরু করে সাধারণ আলোচনা, সর্বত্রই এই বিষয়টি নিয়ে চর্চা হয়। বহু পুরুষের ক্ষেত্রেই পুরুষাঙ্গের আকার তাঁদের আত্মসম্মান এবং পৌরুষের ভাবনার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে পুরুষাঙ্গের ‘আদর্শ আকার’ নিয়ে নানা ধরনের প্রচার অনেক পুরুষকে অহেতুক উদ্বেগের মুখে ঠেলে দেয়। যদিও চিকিৎসকেরা বারংবার জানিয়েছেন, ‘মাইক্রোপেনিস’-এর মতো কিছু বিরল পরিস্থিতি ছাড়া, পুরুষাঙ্গের আকার নিয়ে উদ্বিগ্ন বেশিরভাগ পুরুষেই প্রজননে সক্ষম।
আরও পড়ুন: গাড়ির মধ্যেই ‘অপারেশন থিয়েটার’! লিঙ্গবৃদ্ধির নামে ইন্টারনেট দেখে এ কী করতেন হাতুড়ে ডাক্তার? চোখ কপালে পুলিশের

এই গবেষণার মুখ্য গবেষক ব্যাক হোয়া নগুয়েন এবং তাঁর সতীর্থরা জানাচ্ছেন, পুরুষাঙ্গের বিকাশ একটি অত্যন্ত জটিল প্রক্রিয়া, যা জিন, হরমোন এবং পরিবেশগত নানা বিষয়ের উপর নির্ভরশীল। এর মধ্যে একটি অন্যতম ফ্যাক্টর হতে পারে স্থূলতা। বিজ্ঞানীদের মতে, বয়ঃসন্ধিকালে স্থূলতার কারণে পুরুষ হরমোন টেস্টোস্টেরনের ক্ষরণ ব্যাহত হতে পারে। আর পুরুষাঙ্গের সঠিক বিকাশের জন্য এই হরমোনটি অত্যন্ত জরুরি। এই বিষয়টির জন্যেই ভিয়েতনামের গবেষকরা প্রাক-বয়ঃসন্ধিকালের স্থূলতার সঙ্গে প্রাপ্তবয়স্ক অবস্থার পুরুষাঙ্গের আকারের সম্পর্ক খতিয়ে দেখেছেন।

এই সমীক্ষায় ২৯০ জন বিষমকামী পুরুষ অংশ নেন। এঁরা সকলেই ২০২৩ সালের জুন থেকে ২০২৪ সালের জুলাইয়ের মধ্যে হ্যানয় মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটি হসপিটালের প্রজনন স্বাস্থ্য বিভাগে চেক-আপের জন্য এসেছিলেন। গবেষকরা তাঁদের উচ্চতা, কোমর ও নিতম্বের পরিধি এবং পুরুষাঙ্গের বিভিন্ন পরিমাপ (শিথিল এবং প্রসারিত অবস্থার দৈর্ঘ্য ও ব্যাস) নথিভুক্ত করেন।
পাশাপাশি, অংশগ্রহণকারীদের ১০ বছর বয়সের (বয়ঃসন্ধি শুরুর ঠিক আগের সময়) শারীরিক গঠন কেমন ছিল, তা থ্রি-ডি মডেলের সাহায্যে অনুমান করতে বলা হয়।
আরও পড়ুন: নারী-পুরুষ সকলেই নগ্ন হয়ে ঘোরেন! একটি সুতোও থাকে না গায়ে! দেখুন বিখ্যাত সব ‘নগ্ন সৈকত’-এর ছবি

ফলাফল বেশ চমকপ্রদ। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, যে অংশগ্রহণকারীরা ১০ বছর বয়সে স্থূল ছিলেন, প্রাপ্তবয়স্ক অবস্থায় তাঁদের পুরুষাঙ্গের দৈর্ঘ্য (শিথিল ও প্রসারিত উভয় ক্ষেত্রেই) অন্যদের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে কম। তবে, প্রাপ্তবয়স্ক অবস্থায় ওজন বাড়লে সেই সমস্যা হয়নি। যাঁরা প্রাপ্তবয়স্ক অবস্থায় স্থূলকায় হয়ে পড়েছেন, তাঁদের কোমরের পরিধি বেশি হওয়ায় পুরুষাঙ্গের দৃশ্যমান দৈর্ঘ্য কম দেখিয়েছে বটে, কিন্তু সেটি তলপেটের অতিরিক্ত চর্বির কারণে। গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের প্রসারিত পুরুষাঙ্গের গড় দৈর্ঘ্য ছিল ১৪.৪ সেন্টিমিটার (প্রায় ৫.৬ ইঞ্চি)।
গবেষকরা উপসংহারে বলেছেন, “শৈশবের স্থূলতা পুরুষাঙ্গের প্রকৃত বৃদ্ধিকে প্রভাবিত করে। প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে স্থূলতা কেবল তার বাহ্যিক অবয়বকে প্রভাবিত করে, আসল আকারকে নয়। তাই শৈশবেই দ্রুত পদক্ষেপ জরুরি।”
তবে গবেষকরা এও জানিয়েছেন যে, এই সমীক্ষাটি শুধুমাত্র প্রজনন সংক্রান্ত সমস্যার জন্য হাসপাতালে আসা পুরুষদের উপর করা হয়েছে। তাই এই ফলাফল হয়তো সাধারণ মানুষের সার্বিক প্রতিফলন না-ও হতে পারে।