আজকাল ওয়েব ডেস্ক: ক্যান্সার শব্দের সঙ্গে মৃত্যু যেন ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তবে সময় থাকতে চিকিৎসা শুরু করলে ক্যানসার নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।ব্রেস্ট বা স্তন ক্যান্সারও এর ব্যতিক্রম নয়। সম্প্রতি এই মারণ রোগে আক্রান্ত হয়েছেন অভিনেত্রী হিনা খান।ক্যান্সারের তৃতীয় ধাপে উনি।তবুও হাল ছাড়তে নারাজ অভিনেত্রী।সকল ক্যান্সার রোগীদের মনের কঠোরভাবে জোর রাখার বার্তা দিয়েছেন উনি।

ব্রেস্ট ক্যানসার সম্পূর্ণ নির্মূল সম্ভব।তবে মনে রাখবেন, যত বয়স বাড়ে তত ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়। ব্যথাহীন ‘ব্রেস্ট লাম্প’অর্থাৎ স্তনে ফোলা বা মাংসপিণ্ডর মতো দেখতে পেলে অবশ্যই ডাক্তারবাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করুন। স্তনবৃন্ত দিয়ে রক্তক্ষরণ, হঠাৎ আকৃতি বদলে যাওয়া, স্তনবৃন্ত ভিতরের দিকে ঢুকে যাওয়া, বগলে ফোলা ইত্যাদি স্তন ক্যানসারের লক্ষণ হতে পারে। ব্রেস্টে লাম্প মানেই কিন্তু ক্যান্সার নয়, তবে তা পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া বাঞ্ছনীয়।

প্রতিদিন পোশাক পরার সময় নিজেই নিজের স্তন পরীক্ষা করুন।কোনও রকম অস্বাভাবিকতা বা ব্যথা দেখা দিলে তৎক্ষণাৎ ডাক্তারের পরার্মশ নিন। যদিও পরিসংখ্যান বলছে বেশিরভাগ অল্পবয়সি মেয়েরাই তাঁদের স্তনে কোনওরকম অস্বাভাবিকতা বা ব্যথা দেখা দিলে ডাক্তারের কাছে যান না।কারণ তাদের ধারণা এতে তাদের স্তন কেটে ফেলার মতো ঝুঁকি নিতে হতে পারে।সবক্ষেত্রে এমনটা হয় না।ব্রেস্ট ক্যান্সারের মূল চিকিৎসা হল সার্জারি বা অপারেশন।একদম প্রাথমিক পর্যায়ে থাকলে তা প্রায় ৯০ শতাংশ নিরাময়যোগ্য।'বিসিটি' পদ্ধতির মাধ্যমে স্তন বাঁচিয়েও অপারেশন সম্ভব। এই প্রক্রিয়ায় সম্প্রতি অনেক হলিউড ও বলিউডের চেনা মুখ নিজেদের স্তন ক্যান্সারের কবল থেকে রক্ষা করেছে।

শরীরে অতিরিক্ত ওজন স্তন ক্যান্সারের অন্যতম কারণ।বাইরের তেল-ঝাল-মশলা জাতীয় অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার অভ্যাস বন্ধ করুন। শরীরে ওজন বয়স এবং উচ্চতা অনুযায়ী স্বাভাবিকের চেয়ে বৃদ্ধি পেলে স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি তৈরি হয়, তাই ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা জরুরি।পুষ্টিকর খাবার যেমন শাকসব্জি, ফল, দানাশস্য জাতীয় খাবার নিজের ডায়েটে রাখুন।সুস্থ জীবনযাপন মেনে চলা, যথা সম্ভব বাইরের খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকাই ভালো।

শারীরিক ক্রিয়াকলাপ শুধু ক্যান্সার নয়, অনেক রোগেরও আশঙ্কা কমায়। স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে প্রতি দিন অন্তত ঘণ্টাখানেক ব্যায়াম, যোগাসন, প্রাণায়াম করা প্রয়োজন।

মানসিক চাপ কমাতে অনেকের মদ্যপানই ভরসা।দীর্ঘদিন ধরে মদ্যপানের অভ্যাস স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে।তাই সুস্থ থাকতে মাত্রাতিরিক্ত অ্যালকোহল বন্ধ বাঞ্ছনীয়।আবার ক্যান্সার প্রতিরোধে মদ্যপান ও ধূমপানের অভ্যাস ত্যাগ করার বিকল্প কিছু নেই। স্তন ক্যানসার হোক বা ফুসফুস— মাত্রাতিরিক্ত তামাক, অ্যালকোহলের প্রভাবেই মূলত এই ধরনের মারণব্যাধির শিকার হতে হয়।