আজকাল ওয়েব ডেস্ক: গবেষণা অনুযায়ী, ১০০ জন শিশুর মধ্যে ৪ জন স্বাভাবিকভাবে শুনতে পায় না। অথচ বাবা মা বা পরিবারের অন্যরা সে বিষয়ে সচেতন নন। তাই তারা বুঝতেই পারে না তার শিশুর এই মারাত্মক সমস্যার কথা।ফলে বাচ্চারা কথা বলতে শেখে না। বিসিজি বা অন্যান্য টিকার মত ইউরোপ আমেরিকায় সদ্যোজাত শিশুর শ্রবণ ক্ষমতা পরীক্ষার করা বাধ্যতামূলক হয়েছে।আমাদের দেশের কিছু কিছু বেসরকারি হাসপাতালে এই টেস্ট করা হলেও তা সংখ্যায় খুবই কম।
বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, আগামী ৩০ বছরে সংখ্যাটা বেড়ে দাঁড়াবে ৯০ কোটিতে। বিশ্বের প্রায় ৩ কোটি ৪০ লক্ষ শিশুর শ্রবণ প্রতিবন্ধকতা আছে। স্রেফ সচেতনতার অভাবে এসব শিশুদের বিশেষ ক্ষমতাসম্পন্ন হয়ে দিন কাটাচ্ছে।
জন্মের সময় শ্রবণ শক্তি স্বাভাবিক থাকলেও ৩/৪ বছর বয়সে মেনিনজাইটিস, টাইফয়েড বা এনকেফেলাইটিস হলেও শ্রবণ ক্ষমতা কমে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। অন্য অনেক অসুখের মতই কানে শোনার অসুবিধা যদি জন্মের সময় বোঝা যায়, তাহলে সঙ্গে সঙ্গে হিয়ারিং এড দিয়ে বা দরকার হলে কক্লিয়ার ইমপ্ল্যান্ট করে শিশুকে শব্দের জগতে ফিরিয়ে আনা সম্ভব।গর্ভাবস্থায় হবু মায়ের কোনও অসুখ যেমন মাম্পস, রুবেলা, হারপিস, চিকেন পক্সের মত ভাইরাস সংক্রমণ হলে শিশু জন্মগত ভাবে শ্রবণ ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। গর্ভাবস্থায় মা যদি এমন কিছু ওষুধ খান, যার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে, তখন বাচ্চা বধির হয়ে জন্মাতে পারে। সন্তান ধারণের সময় ওষুধ খাবার ব্যাপারে সবসময় সচেতন থাকা উচিত।অবশ্য হাই প্রেশার সুগার বা অন্যান্য ক্রনিক অসুখ থাকলে তার ওষুধ খেতেই হবে।
জন্মের সময় বাচ্চার ওজন দেড় কেজির চেয়ে কম হলে বা জন্মের সময় কয়েক সেকেন্ডের জন্য বাচ্চার ব্রেনে অক্সিজেন কম পৌঁছলে কানে শুনতে সমস্যা তৈরি হয়।অ্যালকোহল, ধূমপান, মাদক সেবনের প্রবণতা মেয়েদের মধ্যে এখন অনেক বেড়ে গিয়েছে। যার কু-প্রভাবে শিশু বধির হতে পারে। এই কারণে এখন জন্মাবধি বধির শিশুর সংখ্যাও বেড়ে গিয়েছে।
হিয়ারিং এইড ছাড়াও ককলিয়ার যন্ত্রের সাহায্যে বধির বাচ্চা শুনতে পায়। এটা পেসমেকারের মতো একটা যন্ত্র। সাধারণ হিয়ারিং এইডের মতো খোলা-পরা করতে হয় না। ছ’মাস থেকে দু’বছর পর্যন্ত বয়সি শিশুর কানের উপর দিকে ব্রেনের খুলির ভিতর দিয়ে গিয়ে অন্তঃকর্ণে এটি বসিয়ে দেওয়া হয়। আজীবন এই যন্ত্রের সাহায্যে শোনা যায়। এমনিতে এটি কয়েক লাখ টাকা দাম। কেন্দ্রীয় সরকারের উদ্যোগে প্রতি বছর সরকারি হাসপাতালে বেশ কিছু শিশুকে বিনামূল্যে এটি প্রতিস্থাপিত করা হয়। তাছাড়া গর্ভাবস্থা থেকেই মাকেও সতর্ক থাকতে হবে।
