যৌন সম্পর্কের পর শরীর এবং ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা শুধু স্বাস্থ্যের জন্যই নয়, মানসিক স্বস্তির জন্যও অত্যন্ত জরুরি। অনেকেই এই ধাপটিকে গুরুত্ব দেন না, কিন্তু যৌন সম্পর্কের পর সঠিক পরিচ্ছন্নতা না মানলে ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন, চুলকানি, জ্বালাপোড়া বা ফাঙ্গাল ইনফেকশনের মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। মহিলাদের ক্ষেত্রে এই সমস্যা বেশি দেখা যায়। তাই এই সময় কিছু সহজ কিন্তু কার্যকর পদক্ষেপ নিলে শরীর সুস্থ এবং আরামদায়ক থাকে, এবং সম্পর্কের পরও আপনিও নিশ্চিন্ত থাকতে পারেন।

যৌন সম্পর্কের পর সঠিকভাবে পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা খুবই জরুরি। কারণ এটি সংক্রমণ প্রতিরোধে বড় ভূমিকা রাখে। প্রথমেই মনে রাখবেন, অন্তরঙ্গ মুহূর্তের পর অবশ্যই প্রস্রাব করা উচিত। কারণ যৌন সম্পর্কের সময় যদি কোনও ব্যাকটেরিয়া মূত্রনালীতে প্রবেশ করে, তাহলে প্রস্রাবের মাধ্যমে তা শরীর থেকে বেরিয়ে যায় এবং মহিলাদের ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশনের ঝুঁকি অনেকটাই কমে যায়।

এরপর ১০ মিনিটের মধ্যে যৌনাঙ্গ পরিষ্কার করা প্রয়োজন। তবে এই সময় কোনও ধরনের রাসায়নিকযুক্ত সাবান, ইন্টিমেট ওয়াশ বা সুগন্ধিযুক্ত প্রোডাক্ট ব্যবহার করা ঠিক নয়। এগুলো ত্বকের স্বাভাবিক পিএইচ ভারসাম্য নষ্ট করতে পারে। পরিবর্তে উষ্ণ গরম জল ব্যবহার করে যৌনাঙ্গ আলতোভাবে পরিষ্কার করুন। পরিষ্কারের পর একটি নরম এবং পরিষ্কার তোয়ালে দিয়ে ভালভাবে মুছে শুকিয়ে নিন, যাতে আর্দ্রতা জমে না থাকে। কারণ আর্দ্র পরিবেশে ব্যাকটেরিয়া দ্রুত বৃদ্ধি পায়।

এর পাশাপাশি যৌন সম্পর্কের পর আপনার অন্তর্বাস পরিবর্তন করা উচিত। পুরনো বা ভেজা অন্তর্বাসে ব্যাকটেরিয়া জন্মাতে পারে, যা ত্বকের জ্বালা বা সংক্রমণের কারণ হতে পারে। পরিষ্কার এবং কটনের অন্তর্বাস পরা সবচেয়ে ভাল, কারণ কটন ত্বককে শ্বাস নিতে সাহায্য করে এবং আর্দ্রতা শোষণ করে রাখে। এসব সহজ পদক্ষেপ মেনে চললে আপনি নিজের পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে পারবেন এবং ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন বা অস্বস্তি থেকে নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে পারবেন।

যৌন সম্পর্কের পর অনেকেই ক্লান্তি বা আলস্যের কারণে পরিচ্ছনতার দিকে নজর দেন না। কিন্তু এতে নানা রোগের ঝুঁকি বাড়তে পারে। শরীরের যত্ন মানেই নিজের প্রতি সচেতন থাকা— এবং এই সচেতনতার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হল যৌন সম্পর্ক-পরবর্তী পরিচ্ছন্নতা। এটি কেবল সংক্রমণ রোধেই নয়, হরমোনের ভারসাম্য ও মানসিক স্বাস্থ্যের দিক থেকেও উপকারী। তাই এই ছোট ছোট অভ্যাসগুলোকে দৈনন্দিন জীবনের অংশ করে তুলুন। পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখুন, শরীরের প্রতি সচেতন থাকুন, এবং নিজের সুস্থতাকে সর্বাগ্রে গুরুত্ব দিন। কারণ সুস্থ শরীরেই থাকে সুখী মন।