ব্যস্ততার জীবনে খুব কম মানুষের পক্ষেই সঠিক ডায়েট মেনে খাওয়া-দাওয়া সম্ভব হয়। তাই ভিটামিনের অভাব হওয়া খুব একটা অস্বাভাবিক নয়। এদিকে দিব্যি সুস্থ স্বাভাবিক মানুষও ভিটামিনের অভাবে বড় রোগে আক্রান্ত হতে পারেন। আসলে পর্যাপ্ত কার্বোহাইড্রেট, ফ্যাট আর প্রোটিনের ঘাটতি নিয়ে সতর্ক থাকলেও, ভিটামিনের প্রতি আমাদের অবহেলার শেষ নেই। আর শুধু ভিটামিন সাপ্লিমেন্ট খেলেই হল না, সঠিক নিয়মে খেলেই পাওয়া যায় আসল উপকার। শরীরে ভালভাবে শোষিত হওয়ার জন্য কোন ভিটামিন কখন খাবেন তা জানা অত্যন্ত জরুরি।
• জলে দ্রবণীয় ভিটামিনঃ ভিটামিন সি এবং বি কমপ্লেক্স গ্রুপ( বি৬, বি১২, রাইবোফ্ল্যোবিন ও ফোলেট)-এর মতো জলে দ্রবণীয় ভিটামিন শরীর সঞ্চিত হয় না। তাই রোজ খাওয়া প্রয়োজন। জলে দ্রবণীয় ভিটামিন জলে দ্রবীভূত হতে পারে এবং খালি পেটে দ্রুত শোষিত হয়। তাই এই ধরনের ভিটামিন সকালে বিশেষত ব্রেকফাস্টের আগে খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া দেওয়া হয়। তবে খালি পেটে জলে দ্রবণীয় ভিটামিন খেলে অনেকের বমি বমি ভাব, অস্বস্তি হতে পারে। সেক্ষেত্রে হালকা খাবার খেয়ে খেতে পারেন। বি কমপ্লেক্স ভিটামিন বিশেষত শরীরে এনার্জি দেয়। তাই সারা দিন ক্লান্তিভাব দূর করতে এটি সকালে খেতে বলেন বিশেষজ্ঞরা।
আরও পড়ুনঃ হার্ট-এ ব্লকেজ? বাড়িতে বসেই জানতে পারবেন , এই সহজ পরীক্ষায় ধরা পড়বে হৃদরোগের বিপদ
• ফ্যাট দ্রবণীয় ভিটামিনঃ ফ্যাট দ্রবণীয় ভিটামিন, যেমন এ, ডি, ই, কে- ফ্যাটযুক্ত খাবারের সঙ্গে খেলে সবচেয়ে ভালভাবে শোষিত হয়। এই ভিটামিনগুলো শরীরের ফ্যাটি টিস্যু এবং লিভারের ফ্যাটে সঞ্চিত থাকে এবং তাই রোজ খাওয়ার প্রয়োজন হয় না। শরীরে ফ্যাট দ্রবণীয় ভিটামিনের সবচেয়ে বেশি উপকার পেতে স্বাস্থ্যকর ফ্যাটজাতীয় খাবার যেমন অলিভ অয়েল, অ্যাভোগাডো, ডিম, বাদামের সঙ্গে খেতে পারেন। যেমন ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্ট লাঞ্চ অথবা ডিনারের সঙ্গে খেলে ভালভাবে শোষিত হয়।

• মাল্টিভিটামিনঃ মাল্টিভিটামিনে জল ও ফ্যাট দ্রবণীয় ভিটামিনের সঙ্গে আয়রন, ক্যালশিয়াম অথবা ম্যাগনেশিয়ামের মতো খনিজ থাকে। এই মিশ্রণের কারণে ফ্যাট ও কার্বোহাইড্রেট রয়েছে এমন খাবারের সঙ্গে মাল্টিভিটামিন খাওয়া উচিত। এতে মাল্টিভিটামিন যেমন ভালভাবে শোষিত হবে এবং বদহজমের সমস্যাও কমবে। বিশেষজ্ঞরা রোজ একই সময়ে যেমন ব্রেকফাস্ট কিংবা লাঞ্চের পরে মাল্টিভিটামিন সাপ্লিমেন্ট খাওয়ার পরামর্শ দেন। তবে সন্ধের দিকে না খাওয়াই শ্রেয় কারণ কিছু বি ভিটামিন ঘুমের ব্যাঘাত ঘটাতে পারে।
• আয়রন, ম্যাগনেশিয়ামঃ খালি পেটে আয়রন সাপ্লিমেন্ট খাওয়ার সবচেয়ে ভাল। কারওর পেটের সমস্যা হলে হালকা খাবারের সঙ্গে খেতে পারেন। তবে দুধের মতো ক্যালশিয়ামযুক্ত খাবারের সঙ্গে আয়রন সাপ্লিমেন্ট খাওয়া উচিত নয়। কারণ আয়রন শোষণে ব্যাঘাত ঘটায় ক্যালশিয়াম। অন্যদিকে, ম্যাগনেশিয়ামের রিল্যাক্সিং গুণের জন্য রাতে খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। এমনকী কারওর কারওর রাতে ম্যাগনেশিয়াম খেলে ভাল ঘুমও হয়।
