সলমন খান–শাহরুখ খানকে নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্যের পর ফের শিরোনামে অভিনব কাশ্যপ। এবার ভাই অনুরাগ কাশ্যপের সঙ্গে তাঁর ব্যক্তিগত সম্পর্ক নিয়েই মুখ খুললেন পরিচালক।সম্প্রতি দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে অভিনব জানিয়েছেন, একসময় তাঁদের দুই ভাইয়ের সম্পর্ক দারুণ ছিল। একই স্কুল, একই কলেজ, একই স্বপ্ন নিয়ে মুম্বইয়ে আসা। কিন্তু আজ তাঁদের মধ্যে নেই কোনও যোগাযোগ। এককথায় মুখ দেখাদেখিও বন্ধ!
অভিনবের কথায়, “এটা খুবই ব্যক্তিগত ব্যাপার। আমরা ছোটবেলা থেকে একসঙ্গে বড় হয়েছি। মধ্যপ্রদেশের গোয়ালিয়রে একই বোর্ডিং স্কুলে পড়েছি, দিল্লি ইউনিভার্সিটির একই কলেজে, এমনকী মুম্বইয়েও প্রায় একসঙ্গে এসেছিলাম। একসঙ্গে ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করেছি, তাই বন্ধনটা ছিল গভীর।”
তবে সেই সম্পর্কের মধ্যেও ছিল ঝড়। দবং পরিচালকের কথায়, “আমাদের সম্পর্কটা সব সময় খুব জটিল ছিল। ও আমার দাদা, তাই যখনই ও মনে করত আমি ভুল করছি, আমায় মারত। অনেকবারই মারধরও করেছে। আমি কখনও পাল্টা গায়ে হাত তুলিনি ওর, কারণ ও আমার বড় ভাই। তাই সেই চিন্তাই কোনওদিন আমার মাথায় আসেনি। কিন্তু শেষবার আমাদের মধ্যে ঝামেলার সময় আমার মনে হয়েছিল, ও-ই ভুল করেছেতাই কথা বলা বন্ধ করে দিই। ব্যস, সেই শেষ।”অভিনব আরও জানান, অনেক সময় সোশ্যাল মিডিয়ায় অনুরাগের নামে যেসব মন্তব্য ছড়ায়, সেগুলো আসলে ভুলভাবে ব্যাখ্যা করা হয়। “অনুরাগ আমার গুরু, ও-ই আমায় সব কিছু শিখিয়েছে,” যোগ করেন তিনি।
পরিচালক হিসেবে অভিষেকের আগেই অভিনব কাশ্যপ বলিউডে নিজের যাত্রা শুরু করেন চিত্রনাট্যকার হিসেবে। তিনি মনোরমা সিক্স ফিট আন্ডার (২০০৭) ছবির সহলেখক ছিলেন এবং যুবরাজ ছবির (২০০৮) চিত্রনাট্য নিয়েও ঘষামাজা করেছিলেন।
পরিচালক হিসেবে তাঁর প্রথম ছবি ছিল সলমন খান ও সোনাক্ষী সিনহা অভিনীত দবং (২০১০) যা সেই সময়ের অন্যতম সুপারহিট ছবি হয়। তবুও ‘সৃজনশীল মতবিরোধ’-এর কারণে তিনি ‘দবং ২’ ছবি থেকে সরে যান। পরে বেশরম (২০১৩)-এ রণবীর কাপুরকে নিয়ে কাজ করলেও, সেটি বক্স অফিসে চূড়ান্ত ব্যর্থ হয়।
আজ ভাইয়ের সঙ্গে কথা না হলেও, অভিনবের গলায় মিশে ছিল একধরনের শ্রদ্ধা ও নরম অভিমান, “ও আমার দাদা, আমার গুরু, কিন্তু এখন আমাদের মধ্যে এখন ছড়িয়ে রয়েছে স্রেফ নীরবতা।”
প্রসঙ্গত, অন্য এক সাক্ষাৎকারে অভিনব কাশ্যপ বললেন, শাহরুখের “মানসিকতা ঠিক নয়”! সেইজন্য 'বাদশা'কে পাকাপাকি চলে যাওয়ারও পরামর্শ দিলেন তিনি। আর তাতেই সোশ্যাল মিডিয়ায় শুরু হয়েছে তুমুল সমালোচনার ঝড়। অনেকে অভিযোগ তুলেছেন— পরিচালকের মন্তব্যে স্পষ্ট মুসলিমবিদ্বেষীর গন্ধ রয়েছে।
ওই সাক্ষাৎকারে অভিনব বলেন,“এই জাতটা শুধু নিতেই জানে, দিতে জানে না। শাহরুখের দুবাইয়ের বাড়ির নাম জন্নত, আর এখানকার মন্নত। মন্নত মানে তো প্রার্থনা। মন্নত পূরণ হয়েছে বলেই তো জন্নতের দিকে নজর দিয়েছেন উনি! শুনেছি আরও দু’তলা বাড়াচ্ছেন এই বাড়িতে। তা যদি আপনার জন্নত ওখানে হয়, তাহলে সেখানেই যান, ভারতে কী করছেন?”
অভিনবের এই মন্তব্য ঘিরেই সোশ্যাল মিডিয়ায় শুরু হয়েছে ক্ষোভ। এক নেট-ব্যবহারকারী লেখেন, “ আগেই বলেছিলাম, এই লোকটা মুসলিমবিদ্বেষী। সলমন-শাহরুখদ খানের প্রতি তাঁর ঘৃণার অর্ধেকটাই ধর্মীয় পক্ষপাত থেকে।”
