অভিনেতা জিয়াউল ফারুক অপূর্ব। স্বভাবে শান্ত, স্বল্পভাষী। তবে সম্প্রতি ক্ষোভে ফেটে পড়লেন ওপার বাংলার নামজাদা শিল্পী। একটি ফেসবুক পোস্ট করে আইনি পদক্ষেপ করার কথাও জানান। কী কারণে মেজাজ হারালেন তিনি?

অপূর্বর অভিযোগ, তাঁর ব্যক্তিগত জীবনের একটি সুন্দর মুহূর্তকে বিকৃত করে নেটমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে নানা বিভ্রান্তিকর তথ্যসহ। ইতিমধ্যেই অভিনেতা বাংলাদেশ সাইবার ক্রাইম ইউনিটে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ দায়ের করেছেন। পুলিশ এই অপরাধধে সঙ্গে যুক্ত তিনজনকে আটক করেছে। বাকিদের আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

অপূর্বর জানান, কিছু ইউটিউব চ্যানেল এবং ফেসবুক পেজ অতীতে তাঁর শেয়ার করা একটি পারিবারিক মুহূর্তকে ব্যবহার করে মিথ্যা গল্প বানিয়ে ভুল শিরোনাম দিয়েছে ভাইরাল করেছে। এতে সাধারণ মানুষ বিভ্রান্ত হচ্ছেন। কটাক্ষ ধেয়ে আসছে তাঁর পরিবারের দিকেও।

প্রায় সাত সাত মাস আমেরিকায় ছিলেন অপূর্ব। থেকে। দেশে ফিরে প্রথমেই তিনি ছুটে যান ছেলে জায়ান ফারুক আয়াশের কাছে। গভীর ঘুমে থাকা ছেলেকে ভালবাসার স্পর্শে জাগিয়ে দেন অভিনেতা। দীর্ঘ সময় পর বাবাকে দেখে আবেগে দরে রাকতে পারে না ছোট্ট আয়াশ। চোখ ভেজে তার। কাঁদতে কাঁদতে জড়িয়ে ধরে বাবাকে। ছেলের সঙ্গে মিষ্টি এই মুহূর্ত নেটমাধ্যমে পোস্ট করেন অভিনেতা। আর তা থেকেই ঘটনার সূত্রপাত।

একটি দীর্ঘ ফেসবুক পোস্টে অপূর্ব লেখেন, ‘কিছু মানুষের সত্য-মিথ্যের বোধ নেই, ন্যূনতম সম্মানবোধও নেই। কিছু মানুষের গসিপ আর মিথ্যার কারখানা সমাজকে বিষাক্ত করে। আর কিছু গড়পড়তা মানুষ যাচাই না করেই শেয়ার করেন, রিয়্যাক্ট দেন। ভুল বিচার করেন। সন্তানের প্রতি বাবা-মার ভালবাসা নিয়েও চলে নোংরা বিচার ও আজেবাজে কথাবার্তা। এটা শুধু লজ্জাজনকই নয়, চরম অমানবিকও। আর যারা এই কাজগুলো করেন তাদের আমি কোনও জ্ঞান দিতে যাব না। কারন যাদের পরিবার তাদের ভেতর কোনও মূল্যবোধ তৈরি করতে ব্যর্থ হয়েছে, যাদের সমাজ মানবিকতা তৈরি করতে ব্যর্থ হয়েছে, তাদের কোনও জ্ঞান দিয়ে লাভ হবেনা। যাদের মস্তিষ্ক, হৃদয়ে নেতিবাচকতার ক‍্যানসার, তাদের কাছে মা-বাবা সন্তানকে কতটা ভালবাসে সেটা প্রমাণ করার কোনও প্রয়োজন নেই। কারণ এই অভাগারা জানেনা প্রতিটা বাবা-মা এর কাছেই তাদের সন্তান জীবনের সবচেয়ে বড় অংশ। তার প্রতিটি হাসি, প্রতিটি কান্না, প্রতিটি অর্জন — সবকিছু তারা নিজের হৃদয়ে অনুভব করে। সন্তানের হাসি-কান্না তার প্রতিটা অনুভূতি পিতা-মাতার প্রতিটি দিনকে করে তোলে উজ্জ্বল ও অর্থবহ।

এখানেই থামেননি অপূর্ব। আরও লেখেন, ‘তারা জানেনা আপনি আপনার সন্তানকে যতটা ভালবাসেন অন্য একজন পিতা-মাতাও তার সন্তানকে ততটাই ভালোবাসেন। নিজেকে উত্তম আর অন্যকে অধম ভাবার মতো অসুস্থতা থেকে আপনারা দ্রুত সেরে উঠুন সেই আসা করি। আমার বা অন্য কারও সন্তান নিয়ে মনগড়া কোনও ভুল মন্তব্য করার আগে ভেবে নিন। আপনি যদি সত্য না জানেন, তবে নীরব থাকুন। কারণ কারও সন্তানের জীবন আপনার কনটেন্ট তৈরির ‘আইটেম’ নয়।’

বাংলাদেশের বিনোদন জগতে প্রথম সারির অভিনেতা অপূর্ব। টলিউডেও তাঁর হাতেখড়ি সারা। ২০২৩ সালে প্রতীম ডি গুপ্তের ‘চালচিত্র’ ছবিতে গুরুত্বপূ্র্ণ ভূমিকায় ছিলেন তিনি। অভিনেতার ঝুলিতে আছে অসংখ্য নাটক।