আজকাল ওয়েবডেস্ক: শহরে ফের যুগলের রহস্যমৃত্যু। বেঙ্গালুরুর আনেকালের কল্লাবালু এলাকায় এক ভাড়া বাড়ি থেকে এক যুগলের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হল। পুলিশ জানিয়েছে, তাঁরা লিভ-ইন সম্পর্কে ছিলেন। মঙ্গলবার সকালে ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসতেই চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে এলাকাজুড়ে।
পুলিশ সূত্রে খবর, মৃতদের নাম রাকেশ কুমার (২৩) এবং সীমা নায়েক (২৫)। দু'জনেই ওড়িশার বাসিন্দা। মঙ্গলবার সকালে প্রতিবেশীরা দেখেন, দীর্ঘক্ষণ ডাকাডাকি সত্ত্বেও ঘরের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ। সাড়াশব্দ না পেয়ে সন্দেহ হওয়ায় তাঁরা বাড়ির মালিককে খবর দেন।
বাড়ির মালিক নরেন্দ্র বাবু ঘরের ভেন্টিলেটর দিয়ে উঁকি মেরে দেখেন, শোবার ঘরের ভিতরে দু'জনের দেহ ঝুলছে। তড়িঘড়ি পুলিশে খবর দেওয়া হয়৷ খবর পেয়ে জিগনি থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। তদন্তকারী আধিকারিকরা জানিয়েছেন, ঘটনাস্থল থেকে কোনও সুইসাইড নোট বা মোবাইলে আপত্তিকর কোনও বার্তা মেলেনি।
তাঁদের বন্ধুরা পুলিশকে জানিয়েছেন, মাস তিনেক আগে কাজের খোঁজে তাঁরা আনেকালে এসেছিলেন। সীমা বাড়ির কাছের একটি সুপারমার্কেটে সহকারী হিসাবে কাজ করতেন এবং রাকেশ একটি বেসরকারি সংস্থায় হাউস কিপিংয়ের দায়িত্বে ছিলেন।
বাড়ির মালিক নরেন্দ্র বাবুর কথায়, ওই যুগল নিজেদের 'বিবাহিত' পরিচয় দিয়ে তাঁর এক কামরার বাড়িটি ভাড়া নিয়েছিলেন। যদিও পুলিশি তদন্তে জানা যায়, তাঁরা আদতে লিভ-ইন সম্পর্কে ছিলেন। বাড়ির মালিকের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
ঘটনাস্থল পরীক্ষা করে পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, রাকেশ প্রথমে সিলিং ফ্যান থেকে ঝুলে আত্মহত্যা করেন। এক তদন্তকারী আধিকারিক বলেন, "ফরেন্সিক সায়েন্স ল্যাবরেটরির বিশেষজ্ঞদের মতে, দু'জনেরই মৃত্যু হয়েছে রবিবার মধ্যরাতের পর। সীমা প্রথমে রাকেশকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখে ফাঁস আলগা করার ব্যর্থ চেষ্টা করেন। যখন তিনি বুঝতে পারেন যে রাকেশ মারা গিয়েছেন, তখন সেই একই দড়ি ব্যবহার করে নিজে আত্মঘাতী হন।"
যুগলের এক ঘনিষ্ঠ বন্ধু, জোরা নায়েক, পুলিশকে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন। তাঁর বয়ান অনুযায়ী, রাকেশ সন্দেহ করতেন যে সীমার অন্য কোনও সম্পর্ক রয়েছে। জোরা বলেন, "রাকেশ অতিরিক্ত মদ্যপানও করত। সম্প্রতি আমার পেয়িং গেস্টের ঘরে কিছু সমস্যা হওয়ায় আমি ওদের সঙ্গে এক সপ্তাহ ছিলাম। দেখতাম, সীমাকে সন্দেহ করার কারণে রাকেশ প্রতিদিন ওর সঙ্গে ঝগড়া করত।"
জোরা আরও বলেন, "রাকেশ আমাকে বলেছিল যে সীমা অন্য এক পুরুষকে টাকা পাঠায়, যা নিয়ে ওর সন্দেহ আরও বাড়ে। রবিবার সন্ধেবেলা আমি ওদের বাড়ি গিয়েছিলাম। সীমা জানলা দিয়েই আমাকে বলে যে, ওদের মধ্যে সেই 'রোজকার ঝগড়া' চলছে এবং সে দরজা খুলতে চায় না।" পুলিশ যুগলের ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের জিজ্ঞাসাবাদ করে এই সন্দেহের নেপথ্যে অন্য কোনও কারণ রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখছে।
