আজকাল ওয়েবডেস্ক: দিন কয়েক আগেই প্রবল ভূমিকম্প, সুনামি সতর্কতা নিয়ে ভয় উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছিল। তার মাঝেই আলোচনা একটি বিষয় নিয়ে। কী সেই বিষয়? ধরা যাক, সুনামি। উত্তাল সমুদ্র। এই পরিস্থিতিতে কী হতে পারে, যদি তখন মাঝ দরিয়ায় থাকে একটি নৌকা বা জাহাজ?

তথ্য, ওই ঘোর বিপদের সময় সমুদ্রের মাঝে থাকা জাহাজ অনেক বেশি সুরক্ষিত থাকে ঘাটে যে জাহাজ দাঁড়িয়ে রয়েছে তার থেকে। কারণ, প্রবল বেগে সমুদ্রের জল আছড়ে পড়ায় ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয় উপকূল অঞ্চল। 

জাহাজে থাকা মানুষেরা ভেবে থাকেন, শান্ত সমুদ্রে, মনোরম পরিস্থিতিতে, আরামদায়ক অবস্থার মধ্যে রয়েছেন জাহাজে। কিন্তু আচমকা পরিবেশ-প্রকৃতির কারণে যদি উত্তাল হয় সমুদ্র? সম্প্রতি রাশিয়ার কাছে ৮.৮ মাত্রার ভূমিকম্প এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে সুনামির সতর্কতা জারি হওয়ার পরেই নতুন করে আলোচনা এই বিষয়ে। আলোচনা, যদি উত্তাল হয় সমুদ্র, তাহলে কি তখনই বিপদ? মুহূর্তেই সব শেষ? নেই কোনও পরিত্রাণের পথ?

আরও পড়ুন: 'মাঝরাস্তায় গায়ে আগুন লাগিয়ে দিয়েছিল ওরা', পুরীর নাবালিকার মৃত্যুর পরেই তদন্তে নয়া মোড়! পুলিশের অবাক করা তথ্য

কিন্তু এই প্রশ্নের উত্তর হিসেবে বিশেষজ্ঞদের যা মতামত উঠে আসছে, তা বেশ অবাক করা। সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যমের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মাঝ সমুদ্রে জাহাজ অনেক বেশি সুরক্ষিত সুনামির সময়ে। বরং সমস্যা অনেক বেশি হওয়ার সম্ভাবনা যদি সেটি তীরের কাছাকাছি থাকে।

তথ্য, সমুদ্রের মাঝখানে, যেখানে জল ১৮০ ফুটেরও বেশি গভীর, সুনামির ঢেউগুলি খুব লম্বা কিন্তু উচ্চতায় অত্যন্ত কম। এমন পরিস্থিতিতে, বড় বড় ক্রুজ জাহাজগুলি সহজেই এই ঢেউগুলি অতিক্রম করে, ঠিক যেমন একটি গাড়ি হাইওয়েতে একটি স্পিড ব্রেকার অতিক্রম করে। কিন্তু যখনই এই ঢেউগুলি তীরের কাছে আসে, তখনই সেখানকার অগভীর জলরাশি তাদের টেনে তুলতে শুরু করে। গতি কমে যায়, ঢেউগুলি বিপজ্জনক উচ্চতায় পৌঁছায়। এই সময়ই ধ্বংসযজ্ঞ ঘটে।

যদি একটি ক্রুজ জাহাজ তীরে নোঙর করা হয়, তাহলে সুনামির সময় এটি অনেক গুরুতর বিপদের সম্মুখীন হতে পারে। জলস্তর হঠাৎ খুব বেশি বা খুব কম হয়ে যেতে পারে এবং একটি শক্তিশালী স্রোত এটিকে জোরে টেনে নিয়ে যেতে পারে। ভাসিয়ে দিতে পারে মুহূর্তে। তেমনটাই তথ্য। শুধু তাই নয়, ওই পরিস্থিতিতে তীরের সঙ্গে কিংবা অন্যান্য জাহাজের সঙ্গে সংঘর্ষ বাড়তে পারে। ভাসমান ধ্বংসাবশেষও ক্ষতির কারণ হতে পারে।
সূত্রের খবর, এই বিষয়গুলি মাথায় রেখেই নাকি সুনামি সতর্কতা জারি হতেই ক্রুজ সংস্থাগুলি তাদের ক্রুজ-জাহাজগুলিকে সুনামি সতর্কতা পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তীরে নোঙর না করে মাঝ সমুদ্রে পাঠায়। 

হাওয়াই এবং আলাস্কায় এই সতর্কতা জারি হওয়ার পরে, অন্তত কয়েক ডজন জাহাজকে অবিলম্বে ডক ছেড়ে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেক ভিডিও ভাইরাল হয়েছে যেখানে যাত্রীরা দৌড়াদৌড়ি করে জাহাজটি ধরার চেষ্টা করছেন। সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদনে তেমনটাই উল্লিখিত। 

একইসঙ্গে উল্লেখ্য, আধুনিক ক্রুজ জাহাজগুলি কেবল বিলাসবহুল কাজের জন্য তৈরি করা হয় না। এগুলি উচ্চ প্রযুক্তির সিস্টেম দিয়ে সজ্জিত। স্যাটেলাইট পর্যবেক্ষণ, আবহাওয়া কেন্দ্র এবং সুনামি সতর্কতা নেটওয়ার্ক থেকে রিয়েল-টাইম আপডেট এবং দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য প্রশিক্ষিত ক্যাপ্টেনরা।