আজকাল ওয়েবডেস্ক: কর্নাটকের কালাবুরগি জেলার আলন্দ বিধানসভা কেন্দ্রে ভোটার তালিকা থেকে নাম মুছে ফেলার অভিযোগে গঠিত বিশেষ তদন্ত দল (SIT) জানিয়েছে যে, অন্তত পাঁচটি কম্পিউটার ব্যবহার করে অনলাইনে ভুয়ো ফর্ম জমা দেওয়া হয়েছে। তদন্তে উঠে এসেছে, চারজন সন্দেহভাজন—আকরম, আশফাক, নাদিম ও মুশতাক—একটি সংগঠিত নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ৬,০১৮টি ‘ফর্ম ৭’ আবেদন জমা দিয়েছিল, যা নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে নাম বাদ দেওয়ার প্রক্রিয়ার জন্য ব্যবহৃত হয়।
তদন্তে আরও প্রকাশ, এই গোটা প্রক্রিয়াটি একটি “কল সেন্টার” ধাঁচের সেটআপের মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছিল। প্রত্যেকটি ভুয়ো আবেদন তৈরির জন্য প্রতি ফর্মে ৮০ টাকা করে পারিশ্রমিক দেওয়া হত। এক সর্ব ভারতীয় সংবাদ প্রতিবেদনে জানা যায়, SIT এখন এই চার অভিযুক্তের পেছনে থাকা মূলচক্রের সন্ধান করছে। তদন্তের অংশ হিসেবে SIT বিজেপি বিধায়ক সুবাস গুট্টেদার-এর সঙ্গে যুক্ত একাধিক জায়গায় তল্লাশি অভিযান চালিয়েছে।
উল্লেখ্য, গুট্টেদার ২০১৮ সালের বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেস প্রার্থী বি.আর. পাটিল-এর বিরুদ্ধে মাত্র ৬৯৮ ভোটের ব্যবধানে জয়ী হয়েছিলেন। কিন্তু ২০২৩ সালে পাটিলের কাছেই তিনি ১০,৩৪৭ ভোটে পরাজিত হন। SIT এখনও পর্যন্ত গুট্টেদারকে অভিযুক্ত করেনি বা তার ভূমিকা সম্পর্কে কোনও মন্তব্যও করেনি।
আরও পড়ুন: বড় পরিকল্পনা এসবিআই'য়ের, পাঁচ মাসে নিয়োগ হবে সাড়ে তিন হাজার অফিসার
আলন্দ ভোট চুরি কেলেঙ্কারি সেই কয়েকটি কেন্দ্রের মধ্যে একটি, যার প্রসঙ্গ কংগ্রেস সাংসদ ও বিরোধী দলের নেতা রাহুল গান্ধী এক মাস আগে এক সংবাদ সম্মেলনে তুলেছিলেন। এই অভিযোগ প্রথম প্রকাশ্যে আসে ২০২৩ সালে। তদন্তের গত মাসে SIT অভিযোগ করে যে নির্বাচন কমিশন তদন্তে পর্যাপ্ত সহযোগিতা করছে না, এবং চুরি হওয়া ভোটের ডিজিটাল প্রমাণ দিচ্ছে না। এর ফলে তদন্তে অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে বলে SIT জানিয়েছে।
তদন্তে আরও জানা গেছে, অভিযুক্তরা দেশের বিভিন্ন প্রান্তের সুবিধাবঞ্চিত মানুষের ৭৫টি মোবাইল নম্বর ব্যবহার করে লগইন আইডি তৈরি করেছিল, যার মাধ্যমে ওই ভুয়ো আবেদনগুলি জমা দেওয়া হয়। একবারের ওটিপি (One Time Password) ব্যবস্থার ফাঁকফোকর ব্যবহার করে এই কাজ চালানো হয়েছে বলে মনে করছে SIT।
SIT-এর তরফে জানানো হয়েছে, অভিযুক্ত আকরম, নাদিম ও মুশতাককে ইতিমধ্যেই জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে, তবে চতুর্থ সন্দেহভাজন আশফাক বর্তমানে দুবাইয়ে অবস্থান করছেন, এবং তাঁকে দেশে ফিরিয়ে এনে জিজ্ঞাসাবাদের পরিকল্পনা চলছে। এই ঘটনায় কর্নাটক রাজনীতিতে নতুন করে বিতর্কের ঝড় উঠেছে। বিরোধী দলগুলির দাবি, এই কেলেঙ্কারি শুধু আলন্দ নয়, আরও কয়েকটি আসনে ভোটার তালিকা হেরফেরের বড় ষড়যন্ত্রের অংশ হতে পারে। SIT-এর পরবর্তী পদক্ষেপের দিকে এখন গোটা রাজ্যের দৃষ্টি।
