আজকাল ওয়েবডেস্ক : সম্প্রতি নাগপুরে দেখা গেল ভয়াবহ এক দৃশ্য। এক ব্যক্তি তাঁর মৃত স্ত্রী'এর দেহ নিজের বাইকের পেছনে বেধে নিয়ে যাচ্ছেন। এহেন ঘটনা দেখে আশপাশের সকলে রীতিমত ভীত সন্ত্রস্ত। সূত্রে জানা গিয়েছে, মাঝপথে মহিলা আচমকা এক দুর্ঘটনায় মারা যান৷ একটি বেপরোয়া ট্রাক এসে ধাক্কা মারে তাঁকে। ফলস্বরূপ সেখানেই মারা যান তিনি। এমন ভয়াবহ দৃশ্য দেখে পুলিশ পৌঁছে ঘটনার তদন্ত শুরু করে৷ ঘটনা ঘিরে ইতিমধ্যেই রাজ্যজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। 

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, ব্যক্তির বয়স ৩৫ বছর। নাম অমিত যাদব। তিনি তাঁর স্ত্রী'র নিথর দেহ বাইকের পেছনে বেঁধে নিয়ে যাচ্ছিলেন নাগপুর-জব্বলপুর জাতীয় সড়ক দিয়ে। সূত্রে জানা গিয়েছে, দুর্ঘটনার পর, ব্যক্তি ঘটনাস্থলে উপস্থিত প্রত্যেকের কাছে কাতর আবেদনে সাহায্য চান। কিন্তু কেও তাঁকে সাহায্য করেনি। যখন তাঁর সাহায্যের আবেদন উপেক্ষা করে পথচারীরা চলে যান তখন অসহায় ব্যক্তি নিজেই নিজের স্ত্রী'র মৃতদেহ বাইকের পেছনে দড়ি দিয়ে বেঁধে বাড়ির উদ্দেশে যান। ঘটনার একটি হৃদয়বিদারক ভিডিও ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। ভাইরাল ভিডিওটিতে দেখা যাচ্ছে, স্ত্রী গয়ারসির মৃতদেহ বাইকে বেঁধে নিয়ে যাচ্ছেন অমিত। সূত্রে জানা গিয়েছে, এই দৃশ্য প্রথম দেখে এক পুলিশ গাড়ি। এই ভয়াবহ ভিডিওটি পুলিশই ধারণ করে বলে সূত্রে জানা গিয়েছে। তারাই পরে বাইক থামিয়ে অমিতবাবুকে পুরো ঘটনার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে।

মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটে রাখি উৎসবের দিন। অর্থাৎ ৯ আগস্টে। ওইদিন অমিতবাবু ও তাঁর স্ত্রী নাগপুরের লোনারা এলাকা থেকে মধ্যপ্রদেশের করনপুর যাচ্ছিলেন। পথমধ্যে, নাগপুরের মোরফাটা এলাকায় একটি দ্রুতগতির ট্রাক এসে তাঁদের ধাক্কা মারে। ঘটনার জেরে অমিতবাবুর স্ত্রী গয়ারসি রাস্তায় পড়ে যান এবং ট্রাকটি তাঁকে চাপা দিয়ে দ্রুত গতিতে বেরিয়ে যায়। ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়।

ঘটনার প্রেক্ষিতে অমিত জানান, দুর্ঘটনার পর তিনি আশপাশের অনেক পথচারী ও গাড়িচালকদের কাছে সাহায্য চান। কিন্তু কেউই থামেননি বা সহায়তা করেননি। নিরুপায় ও অসহায় হয়ে অমিতবাবু স্ত্রী'র মৃতদেহ নিজের বাইকে বেঁধে গ্রামে বাড়ির পথে রওনা দেন। কিছু দূর যাওয়ার পর এক পুলিশ ভ্যান তাঁকে অনুসরণ করে। দ্রুত এগিয়ে তাঁকে থামিয়ে মৃতদেহটি উদ্ধার করে। এরপর গয়ারসির মৃতদেহ নাগপুরের ইন্দিরা গান্ধী মেডিক্যাল কলেজে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয় এবং একটি আকস্মিক মৃত্যুর মামলা দায়ের করা হয়।

পুলিশ জানিয়েছে, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর তারা পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। জানা গিয়েছে, অমিত ও গয়ারসি নাগপুরের লোনারায় বসবাস করেন। তবে তাঁদের আদি বাড়ি মধ্যপ্রদেশের সেওনি জেলায়। 

আরও পড়ুনঃ উত্তরকাশীতে আরও ভোগান্তিতে পর্যটকেরা, পরপর ভূমিধসে বন্ধ রাস্তা, চলছেনা যানবাহন...

বর্তমানে পুরো ঘটনার তদন্ত করছে পুলিশ। প্রতক্ষ্যদর্শীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। দু্র্ঘটনা এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ পর্যবেক্ষণ করছে পুলিশ৷ ট্রাক এবং অভিযুক্ত ট্রাক চালককে এখনও শনাক্ত করা যায়নি। দ্রুত তার তল্লাশি চলছে৷

আরও পড়ুনঃ 'ডে-আউটে' বেরিয়ে শহরের খ্যাতনামা স্কুলের তিন ছাত্র গায়েব! অবশেষে যেভাবে মিলল, জানলে চমকে উঠবেন