বলিউডের এক সময়ের জনপ্রিয় সঙ্গীত পরিচালক ইসমাইল দরবার। এবার তিনি মুখ খুললেন পরিচালক সঞ্জয় লীলা ভনসালির সঙ্গে তাঁর তিক্ত সম্পর্ক নিয়ে। ‘ইগোইস্টিক’ বা আত্মগর্বে ভরা মানুষ বলেই তিনি আখ্যা দিলেন বনশালিকে। আরও চমকে দেওয়ার মত দরবারের দাবি, “আজ যদি বনশালি এসে বলে, ‘তুমি আমার ছবির সুর দাও, ১০০ কোটি টাকা দেব তোমাকে’, তা সত্বেও আমি বলব — এখুনি বেরিয়ে যা এখান থেকে!”

 

‘হম দিল দে চুকে সনম’ ছবিতে একসঙ্গে কাজ করা থেকে জটিলতা শুরু হয়েছিল

ইসমাইল দরবার ও বনশালির। এই জুটি তৈরি করেছিল একের পর এক সঙ্গীতময় ম্যাজিক— শ্রেষ্ঠ উদাহরণ ‘হম দিল দে চুকে সনম’, ‘দেবদাস’। কিন্তু সেই সোনালি অধ্যায়ের ভেতরেই নাকি জন্ম নেয় ফাটল। শোনা যায় সংবাদমাধ্যমে দরবারের সঙ্গীতকে বলা হয়েছিল বনশালির ছবির মেরুদণ্ড। সেই খবরের পর থেকেই সন্দেহের শুরু। বনশালি নাকি ভেবেছিলেন, ইসমাইল দরবার নিজেই এই খবর ছড়িয়েছেন নিজের প্রচারের জন্য।

 

এ প্রসঙ্গে ইসমাইল দরবার সোজাসাপটা বলেন, “আমি ওকে বলেছিলাম, যদি আমিই খবরটা দিতাম, তাহলে সরাসরি স্বীকার করতাম— যে হ্যাঁ, আমি বলেছি! কিন্তু আমি সত্যিই জানি না কে ছড়িয়েছে এই খবরট। সব শুনেটুনে সঞ্জয় তারপর বলল, ‘লেট ইট গো।’ আমি তখনই বুঝেছিলাম, এই ‘লেট ইট গো’-এর মানে হচ্ছে— এমন পরিস্থিতি তৈরি করবেন, যাতে আমি নিজেই ওর ছবি ছেড়ে দিই। তাই আগেভাগেই সরে গিয়েছিলাম।”

 

দরবারের মতে, “আমি ছিলাম ‘হম দিল দে চুকে সনম’ ছবির মেরুদণ্ড, ‘দেবদাস’-এর ক্ষেত্রেও একই কথা খাটে। এটা আমি বলছি না, ওঁর নিজের প্রচার সচিবেরা বলেছিল। তারপর থেকেই ওর ভেতর ভয় ঢুকেছিল— আমি কাজ করি, আর কৃতিত্ব নেয় ও!”

 

'দেবদাস'-এর সুরকার আরও জানান, ‘গুজারিশ’-এ একসঙ্গে কাজ করার কথা থাকলেও, ‘দেবদাস’-এর সময়কার ঝগড়াগুলো তখন এতটাই বেড়ে গিয়েছিল যে সেটা আর সম্ভব হয়নি। এমনকী, বনশালি নাকি সাংবাদিকদেরও নির্দেশ দিয়েছিলেন যেন দরবারের সাক্ষাৎকার না নেওয়া হয়।

 

এক‌ সময় ঠিক হয়েছিল যে সম্পর্ক, এখন সম্পূর্ণ বিচ্ছেদ। ২০১৪ সালে শোনা গিয়েছিল, বনশালী ও দরবার নাকি নিজেদের সম্পর্ক ঠিক করেছেন। দরবার নিজেও বলেছিলেন, “সঞ্জয় আমার গডফাদার। যখন কেউ আমার সঙ্গীত বুঝতে পারেনি, ও-ই বুঝেছিল। কিন্তু যখন একসঙ্গে কাজ করি, তখন ক্রিয়েটিভ ডিফারেন্স তৈরি হয়।”

কিন্তু এখন দরবার স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন— সব শেষ। কোনওভাবেই আর বনশালির সঙ্গে কাজ নয়।

 

অর্থাৎ এক সময়ের বলিউডের সোনালি সঙ্গীত জুটির গল্প এখন রয়ে গেছে শুধু আক্ষেপের সুরে— ‘দরবার-বনশালি যুগলবন্দি’ এখন ইতিহাস।