আজকাল ওয়েবডেস্ক: কালীপুজোর রাতে প্রতিমার গয়না হাতিয়ে শ্রীঘরে এক নিমন্ত্রিত! গয়না হাতসাফাই করার অভিযোগে মেমারি থানার পুলিশ মঙ্গলবার তাকে বর্ধমান আদালতে চালান করেছে। এই ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের রসুলপুরের ব্যানার্জি পরিবারে। আড়াইশো বছরের বিখ্যাত একটি কালীপুজোয়। একেই বলে সর্ষের মধ্যেই ভূত! বিশেষ বন্ধু হিসেবে দ্বিতীয়বার পুজো দেখতে আসা ব্যক্তিই যে এমন কাজ করবে ভাবতে পারেন নি ওই পরিবারের কেউ!
জানা গিয়েছে, মায়ের গহনা খোওয়া যাওয়ায় হুলস্থুল পড়ে যায়। মাথায় হাত পড়ে যায় এলাকার মানুষের। আড়াইশো বছরের পুরনো এই জাগ্রত কালী। পারিবারিক হলেও এলাকাবাসী সবাই একে মানেন। পুজোয় যোগ দেন। তার গয়নাই চক্ষুদান! যাকে বলে জেল মে সুড়ঙ্গ! ঘটনার বর্ণনা বেশ রোমাঞ্চকর!

জানা গিয়েছে ঘড়ির কাঁটা তখন রাত ১২ টা ছুঁয়েছে। সবে মা কালীর পুজোর শেষ হয়েছে। এবারে তো গোটা রাত পুজো। পরিবারের অনান্য সদস্যরাও পরিবারের আমন্ত্রিত অতিথিদের আপ্যায়নে ব্যস্ত। প্রতিবারই এই পরিবারের ডাকে অনেকেই আসেন দেবীদর্শনে। হঠাৎ করেই পরিবারের এক সদস্যা লক্ষ্য করেন দেবীর বেশ কিছু গয়না তাঁর দেহে নেই। পরিমাণ প্রায় দশ ভরি। দামের কথা ধরলে ১০ লক্ষ টাকারও বেশি। আবেগের মূল্যে তো অমূল্য! সবার অলক্ষ্যে তা হাতসাফাই হয়ে গিয়েছে! ঘটনা জানতেই ছড়িয়ে পড়ে এক অদ্ভুত অনুভূতি। শুরু হয় জল্পনা কল্পনা। বিহ্বলতা কাটিয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে মেমারি থানায় বিষয়টি মৌখিকভাবে জানানো হয়। পরে জানান হয় লিখিত অভিযোগ।

এই পরিবার রসুলপুরের দলুইবাজারের বন্দ্যেপাধ্যায় পরিবারে ২৫০ বছর ধরে হয়ে আসছে কালীপুজো। পুজোতে পরিবারের সদস্যরা যেমন উপস্থিত থাকেন, তেমনি আমন্ত্রিত থাকেন বেশ কিছু বিশেষ মানুষও। সেরকমই পরিবারের এক মহিলা সদস্যের বিশেষ বন্ধু হিসাবে আমন্ত্রিত ছিলেন দেবজ্যোতি চৌধুরী। জানা গিয়েছে, সব ঠিক চললে কিছুদিন পরেই এই পরিবারের আত্মীয় হয়ে যাবার কথা তার। সবাই যখন নানা কথা ভাবছেন। তখনই তার নানা আচরণ মনে পড়ায় পরিবারের এক সদস্যার সন্দেহ জাগে। পুলিশকে তা জানান হয়।
এদিকে মেমারি থানার পুলিশ তদন্তে নেমে জানতে পারে পরিবারের এক সদস্যের বন্ধু হিসাবেই দেবজ্যোতি উপস্থিত ছিল। জানা গিয়েছে, ঘটনাস্থলে পুলিশের উপস্থিতি দেখে ততক্ষনে গা ঢাকা দিয়েছে শ্রীমান। খোঁজ পেয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই ভেঙে পড়ে দেবজ্যোতি। পরে তাঁর কাছে থেকে উদ্ধার হয় দেবীর চুরি যাওয়া গয়না। এরপরই মেমারি থানার পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। মঙ্গলবার তাকে বর্ধমান আদালতে তোলা হয়েছে।
জানা গিয়েছে, দেবজ্যোতির বাড়ি বর্ধমানের খোশবাগানে। এই নিয়ে দ্বিতীয়বার পুজো দেখতে সে এসেছিল। কখন যেন ভক্ত থেকে হয়ে গেলেন 'তস্কর'! পুজোর নিমন্ত্রিত অতিথি হিসাবে এসে পুজোর শেষে পরিবারের বিশেষ বন্ধু কখন যেন প্রতিমার গয়না চুরি করে পিঠটান দিয়েছিল। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না। ধরা পড়ে গেল পুলিশের জালে।
