আজকাল ওয়েবডেস্ক: আহমেদাবাদে সম্প্রতি এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে৷ সোল্লা সিভিল হাসপাতালে চিকিৎসক ও এক রোগীর অভিভাবকের মধ্যে চরম সংঘাত। কথা-কাটাকাটি চরমে পৌঁছয়। ঘটনার জেরে কর্তব্যরত এক মহিলা চিকিৎসক রোগীর বাবাকে সপাটে চড় মারেন বলে অভিযোগ। গত ২৬ অক্টোবরের এই ঘটনাটি ক্যামেরাবন্দী হয়ে দ্রুত সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনা ঘিরে ইতিমধ্যেই দেশজুড়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে।

 

খবর অনুযায়ী, আক্রান্ত ব্যক্তির নাম আশিক হরিভাই চাভড়া। তিনি তাঁর অসুস্থ মেয়ের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে এসেছিলেন। অভিযোগ, ডিউটিতে থাকা ওই চিকিৎসক নাকি শিশুটির চিকিৎসা করতে প্রথমে অস্বীকার করেন। এখান থেকেই মূলত গণ্ডগোলের সূত্রপাত।

 

সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ভিডিওটিতে দেখা যাচ্ছে অভিযুক্ত চিকিৎসক হলুদ কুর্তা এবং গলায় স্টেথোস্কোপ পরে আছেন। দেখা গিয়েছে, চাভড়া যখন নিজের ফোনে পুরো ঘটনাটি রেকর্ড করার চেষ্টা করেন, তখনই পরিস্থিতি চরম আকার নেয়।

 

নিজের উপর আর নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারেননি চিকিৎসক। তিনি ফোন বন্ধ করার জন্য চাভড়াকে চড় মেরে বলেন, "মোবাইল নিচে করো।" কিন্তু চাভড়া ফোন নামাতে অস্বীকার করে পালটা প্রশ্ন করেন, "কেন নিচে করব?"

 

পাশে দাঁড়িয়ে থাকা এক নিরাপত্তারক্ষী পরিস্থিতি সামাল দিতে এগিয়ে এলে উত্তেজনা আরও বাড়ে। তাঁকে দেখে ক্ষুব্ধ চিকিৎসক বলেন, "সিকিউরিটি গার্ড তো কিছু করেই না।" ওই একই ভিডিও ক্লিপে চিকিৎসককে বলতে শোনা যায়, "আমি আপনার বাচ্চার চিকিৎসা করব না, কারণ আপনি আমার সঙ্গে অভদ্রতা করছেন।" জবাবে চাভড়া জানতে চান, "আমি কী অভদ্রতা করলাম?" দেখা গিয়েছে, ভিডিওটি এখানেই শেষ হয়ে যায়।

 

ভিডিও দেখে অধিকাংশ মানুষই চিকিৎসকের আচরণের তীব্র সমালোচনা করেছেন। তাঁর বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপের দাবি তুলেছেন। একজন নেট-ব্যবহারকারী মন্তব্য করেছেন, “এ ধরনের ঘটনা কখনওই হওয়া উচিত নয়। অবিলম্বে এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক।” অপর একজন লিখেছেন, “এই মহিলা চিকিৎসককে তাঁর পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হোক, কারণ মনে হচ্ছে চিকিৎসক হওয়ার কারণে তাঁর অতিরিক্ত অহঙ্কার।”

আরও পড়ুন: এযুগের কুম্ভকর্ণ! বছরে ৩০০ দিন ঘুমিয়ে কাটান রাজস্থানের ব্যক্তি, কারণ খতিয়ে দেখতেই হাঁ চিকিৎসকেরা

তবে একাংশ মানুষ আবার চিকিৎসকের পক্ষেই দাঁড়িয়েছেন। তাঁদের বক্তব্য, শুধুমাত্র এই একতরফা ভিডিও দেখে পুরো ঘটনাটির বিচার করা যায় না। এক ব্যক্তি বলেন, “ভিডিওটি দেখে মনে হচ্ছে এটি কোনও ঘটনার প্রতিক্রিয়া। পুরো ঘটনাটি জানা নেই, তাই একতরফা ফুটেজ দেখে মন্তব্য করা ঠিক নয়।” অন্য একজন লিখেছেন, “উনি তো ঘটনার পেছনের পুরো গল্পটা দেননি। হতে পারে তিনিই চিকিৎসকের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছেন। হাসপাতালের নিয়ম মেনে না চললে তো চিকিৎসা চাইতে পারেন না।”

 

এই ঘটনাটি সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়তেই আহমেদাবাদ পুলিশ নড়েচড়ে বসে। তবে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, “এই ঘটনা সংক্রান্ত কোনও অভিযোগ বা আবেদন থানায় জমা পড়েনি।” জানা গিয়েছে, রোগীর আত্মীয়রা পুলিশকে জানিয়েছেন যে তাঁরা এই বিষয়ে কোনও আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দায়ের করতে আগ্রহী নন।