আজকাল ওয়েবডেস্ক: ভূপেন হাজারিকার কালজয়ী গানের লাইন, ''একখানা মেঘ ভেসে এলো আকাশে, একঝাঁক বুনোহাঁস পথ হারালো।''
চিন্নাস্বামীর আকাশে একঝাঁক সাদা পায়রা বুঝি পথ হারিয়ে চলে এসেছিল। তাদের দেখতে দেখতে ভূপেন হাজারিকার গানের এই লাইনগুলো মনে পড়তে বাধ্য। শনিবারের সন্ধ্যায় যখন বেঙ্গালুরু জুড়ে বৃষ্টি আর বৃষ্টি, চিন্নাস্বামী জলে প্রায় ডুবন্ত, ঠিক সেই সময়ে একঝাঁক সাদা পায়রার চক্কর কাটা দারুণ এক ফ্রেমের জন্ম দিয়ে গেল।
ঠিক যেভাবে চেয়েছিলেন বোর্ড কর্তারা, ঠিক সেভাবে শুরু হল না স্থগিত হয়ে যাওয়া আইপিএল। মানুষ যা ভাবে, তা তো হয় না সবসময়ে।
চিন্নাস্বামীতে শনিবার বল গড়াল না। বৃষ্টিতে ভেস্তে গেল কেকেআর-আরসিবি ম্যাচ। ম্যাচ না হওয়ায় পয়েন্ট ভাগাভাগি হয়ে গেল দুই দলের মধ্যে। আইপিএল থেকে ছুটি হয়ে গেল কেকেআরের। আরসিবি পৌঁছে গেল শীর্ষে। প্লে অফের টিকিট কাটা হয়ে গেল বিরাটের দলের। চিন্নাস্বামীতে নামেই ছিল কেকেআর-আরসিবি ম্যাচ। আসলে ছিল বিরাট আবেগ। টেস্ট থেকে অবসর গ্রহণের পরে প্রথম আইপিএল ম্যাচ। উৎসাহ, উদ্দীপনা, আবেগ মিলে জুলে এক ফুটন্ত কড়াই। কিন্তু বলটাই গড়াল না!
just WOW!????♥️
— ಸನತ್ ಕುಮಾರ್ (@IamSanathKumar)
nature's tribute to #ViratKohli as well...????
????????????
even the whites in the sky made rounds over #Chinnaswamy
-- WhiteArmy????#RCBvKKR #IPL2025 #RCB pic.twitter.com/cFJw12bDbPTweet by @IamSanathKumar
মহানায়ককে শ্রদ্ধা জানাতে আরসিবি ফ্যানরা টেস্টের সাদা জার্সিতে মাঠে উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু বরুণদেবতা অঝোর ধারায় ঝরলেন। খেলা বন্ধ। ক্রিকেটাররা প্যাভিলিয়নে মুখে হাত দিয়ে বসে। এমন সময়ে সাঁঝবেলার চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামের মাথার উপরে একঝাঁক সাদা পায়রা ঘুরপাক খেল। সেই ভিডিও নেটদুনিয়ায় ঘুরল। এক নেটব্যবহারকারী সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিডিও পোস্ট করে লিখেছেন, ''প্রকৃতির শ্রদ্ধাজ্ঞাপন কোহলিকে। চিন্নাস্বামীর আকাশে উড়ছে সাদা পায়রা।''
টেস্ট থেকে অবসর গ্রহণ করেছেন বিরাট, এই খবর গোটা দেশে ছড়িয়ে পড়তেই আবেগের লাভাস্রোত বইতে থাকে। আইপিএল শুরু হলে ভক্তদের মিলিত আবেগ যে কী আকার নেবে, তা জানাই ছিল।
স্থগিত হয়ে যাওয়া আইপিএলের বল গড়ানোর কথা ছিল শনিসন্ধ্যায়। কিন্তু বিরাটকে শ্রদ্ধা দেখানোর, আবেগ দেখানোর সুযোগ আর পাওয়া গেল কোথায়! সবার আবেগ, উৎসাহ, উদ্দীপনায় জল ঢেলে দিল বৃষ্টি। কেউ যখন পারল না তখন একঝাঁক পায়রা স্টেডিয়ামের উপরে উড়ে দারুণ এক চিত্রকল্প তৈরি করল। এর থেকে ভাল শ্রদ্ধাজ্ঞাপন আর কীইবা হতে পারে। চারদিকে সংঘাতের হাওয়া, এই অবস্থায় ওই সাদা পায়রাগুলো শান্তির বারিধারা ছিটিয়ে দিয়ে গেল অশান্ত সময়ে।
এ তো অবিকল বিরাট কোহলিরই ছায়া। ম্যাজিশিয়ান ব্যাট নিয়ে ক্রিজে দাঁড়ানো মানেই সবথেকে বড় বক্স অফিস। অঘোষিত লকডাউন শুরু হয়ে যাওয়া। মন্ত্রমুগ্ধের মতো তাঁকে দেখা ছাড়া উপায় নেই। কোহলির ব্যাট যেমন গোটা পৃথিবীতে ছড়িয়ে দেয় এক অন্য আবেগের চাদর। হানাহানি, রেষারেষি, সংঘাত দূরে ঠেলে দেয় তাঁর মায়াবি ব্যাটিং, ঠিক তেমনই প্রকৃতিও তাঁকে দিয়ে গেল দারুণ এক উপহার।
