আজকাল ওয়েবডেস্ক: আজকের দিনে অনেকেরই একাধিক ক্রেডিট কার্ড রয়েছে। কখনও কখনও এমন পরিস্থিতি তৈরি হয় যখন একটি কার্ডের বিল পরিশোধ করার জন্য অন্য কার্ডের সাহায্য নেওয়ার কথা ভাবেন গ্রাহকরা। সরাসরি এক ক্রেডিট কার্ড দিয়ে অন্য ক্রেডিট কার্ডের বিল দেওয়া সম্ভব নয়, কারণ অধিকাংশ ব্যাংক ও কার্ড ইস্যুকারী প্রতিষ্ঠান এই পদ্ধতি অনুমোদন করে না। তবে কিছু পরোক্ষ উপায়ে এই কাজটি করা যায়—যেমন ব্যালান্স ট্রান্সফার, ক্যাশ অ্যাডভান্স বা ডিজিটাল ওয়ালেটের মাধ্যমে।


 ব্যালান্স ট্রান্সফার 

ব্যালান্স ট্রান্সফার হল এক ক্রেডিট কার্ডের বকেয়া টাকা আরেকটি ক্রেডিট কার্ডে স্থানান্তর করা। এতে নতুন কার্ডের মাধ্যমে পুরনো কার্ডের বিল পরিশোধ করা যায়। সাধারণত নতুন কার্ডে কম সুদের হার দেওয়া হয় এবং প্রথম কয়েক মাস সুদমুক্ত সময়কাল (no-interest period) থাকতে পারে।

তবে কিছু বিষয় মনে রাখা জরুরি —

ব্যালান্স ট্রান্সফারে সাধারণত ৩% থেকে ৫% পর্যন্ত সার্ভিস ফি দিতে হয়।

নির্দিষ্ট সময়ে টাকা পরিশোধ না করলে সুদ প্রযোজ্য হবে, এমনকি সুদমুক্ত সময়কালেও।

এই প্রক্রিয়াটি সাময়িকভাবে ক্রেডিট স্কোরে প্রভাব ফেলতে পারে।

নতুন কার্ডের ক্রেডিট লিমিটের বেশি ব্যবহার করা উচিত নয়।

কম সুদের অফার সাধারণত ৬ থেকে ১৮ মাস পর্যন্ত স্থায়ী হয়, তারপর স্বাভাবিক হারে ফিরে যায়।


 ক্যাশ অ্যাডভান্স 

দ্রুত বিল মেটানোর আরেকটি উপায় হলো ক্যাশ অ্যাডভান্স নেওয়া। এতে ক্রেডিট কার্ড থেকে এটিএমের মাধ্যমে নগদ টাকা তোলা যায়, যা দিয়ে অন্য কার্ডের বিল দেওয়া সম্ভব।

তবে এটি তুলনামূলকভাবে ব্যয়বহুল পদ্ধতি, কারণ—

ক্যাশ অ্যাডভান্সে অত্যন্ত উচ্চ সুদহার প্রযোজ্য হয়।

২.৫% থেকে ৩% পর্যন্ত ক্যাশ অ্যাডভান্স ফি দিতে হয়।

এই লেনদেনে কোনো সুদমুক্ত সময় থাকে না, ফলে সুদ গণনা শুরু হয় টাকা তোলার দিন থেকেই।


অতএব, জরুরি না হলে এই উপায়ে বিল পরিশোধ করা এড়িয়ে চলাই বুদ্ধিমানের কাজ।


ডিজিটাল ওয়ালেট 

আজকাল অনেকেই অনলাইন ওয়ালেট বা ডিজিটাল পেমেন্ট অ্যাপ ব্যবহার করেন। কিছু ক্ষেত্রে এক ক্রেডিট কার্ড থেকে টাকা লোড করে সেই টাকায় অন্য কার্ডের বিল দেওয়া যায়।
প্রক্রিয়াটি সহজ —
১. আপনার পছন্দের ই-ওয়ালেট অ্যাপে লগইন করুন।
২. ক্রেডিট কার্ডের তথ্য দিয়ে টাকা লোড করুন।
৩. এরপর সেই ব্যালান্স ব্যবহার করে অন্য কার্ডের বিল পরিশোধ করুন।

তবে মনে রাখতে হবে, কিছু ওয়ালেট এই ধরনের ট্রান্সফারে অতিরিক্ত চার্জ বা সীমাবদ্ধতা আরোপ করতে পারে।

একটি ক্রেডিট কার্ডের বিল অন্য কার্ড দিয়ে পরিশোধ করা সহজ মনে হলেও, এটি দীর্ঘমেয়াদে ঋণের বোঝা বাড়াতে পারে। ব্যালান্স ট্রান্সফার বা ক্যাশ অ্যাডভান্সের মতো পদ্ধতি কেবল জরুরি প্রয়োজনে ব্যবহার করা উচিত। নিয়মিতভাবে এই অভ্যাস গড়ে তুললে আর্থিক সমস্যায় পড়ার আশঙ্কা থাকে।

আরও পড়ুন: একটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে কতগুলি ইউপিআই আইডি তৈরি করা যায়? জেনে নিন

বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, এই ধরনের পদক্ষেপ নেওয়ার আগে নিজের সুদহার, সার্ভিস ফি ও পরিশোধ ক্ষমতা ভালোভাবে বিশ্লেষণ করা প্রয়োজন। ক্রেডিট কার্ড দিয়ে ক্রেডিট কার্ডের বিল পরিশোধ কোনো স্থায়ী সমাধান নয়—এটি কেবল একটি অস্থায়ী বিকল্প, যখন অন্য কোনো উপায় হাতে নেই।