আজকাল ওয়েবডেস্ক: কল্যাণীর এআইআইএমএস (AIIMS) কেন্দ্র করে ফের রাজনৈতিক উত্তাপ বেড়েছে। বিজেপির অন্দরেই এবার প্রকাশ্যে এল গোষ্ঠীকোন্দল। হরিণঘাটার বিজেপি বিধায়ক অসীম সরকার সরাসরি দুর্নীতির অভিযোগ তুলে সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়েছেন নিজের দলেরই আরেক বিধায়ক, কল্যাণীর অম্বিকা রায়ের বিরুদ্ধে। এই ঘটনার পর থেকেই বিজেপির দুই বিধায়কের মধ্যে শুরু হয়েছে তীব্র বাগযুদ্ধ। যা ঘিরে সরগরম রাজ্য রাজনীতি।
অভিযোগ, কল্যাণীর এইমস-এ হাউসকিপিং কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে। প্রায় ৮৪ জন কর্মী নিয়োগের প্রক্রিয়ায় আটজন বিধায়কের মধ্যে ভাগ করে কোটার ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে দাবি অসীম সরকারের। তাঁর অভিযোগ, কল্যাণীর বিধায়ক অম্বিকা রায় নিজের প্রভাব খাটিয়ে প্রায় ৩০ জনকে ডুপ্লিকেট আই কার্ড বানিয়ে দু’মাস ধরে সেখানে কাজ করিয়েছেন। এই নিয়োগ প্রক্রিয়ার পেছনে মোটা অঙ্কের অর্থ লেনদেন হয়েছে বলেও অভিযোগ তাঁর। অসীমের অভিযোগ, 'একজন বিধায়কের একার পক্ষে এতজনকে নিয়োগ করানো সম্ভব নয়, এর পেছনে বড় চক্র কাজ করছে।' প্রয়োজনে তিনি সিবিআই তদন্তও দাবি করবেন বলে জানিয়েছেন অসীম।
তবে অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন অম্বিকা রায়। তিনি বলেন, 'অসীমবাবু প্রমাণ করে দেখান আমি কীভাবে দুর্নীতি করেছি। আমি বিষয়টি আমার দলের উচ্চ নেতৃত্বকে জানিয়েছি, রাজ্য নেতৃত্বকেও জানাব।' এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিজেপির রাজ্য নেতৃত্বও অস্বস্তিতে পড়েছে। গয়েশপুরের মণ্ডল সভাপতি বিশ্বজিৎ পালও অসীম সরকারের মন্তব্যকে ‘অবিবেচক’ বলে আখ্যা দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: ইউপিআই পেমেন্টে নতুন বিপ্লব, লেনদেন জানলে চোখ কপালে উঠবে
অন্যদিকে, তৃণমূল কংগ্রেস এই গোষ্ঠীকোন্দলকে রাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করতে শুরু করেছে। তাদের দাবি, “বিজেপির ভেতরে দুর্নীতি আর বিভাজনই এখন মুখ্য পরিচয়। নিজেদের স্লগ ওভারে এসে ওরা নিজেদের উইকেট ফেলে দিচ্ছে।”
রাজনৈতিক মহলের মতে, এই ঘটনা শুধুমাত্র দুই বিধায়কের ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব নয়, বরং রাজ্য বিজেপির ভিতরে ক্রমবর্ধমান অস্থিরতার প্রতিফলন। দলের ভেতরেই দুর্নীতি ও প্রভাব খাটানোর অভিযোগ সামনে আসায় রাজ্য নেতৃত্বের ভাবমূর্তি প্রশ্নের মুখে। কল্যাণীর এইমস ঘিরে শুরু হওয়া এই বিতর্ক এখন রাজ্যের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু।
